৬ রাজ্যে ফের লাগামছাড়া করোনা সংক্রমণ, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মাঠে নামছে কেন্দ্রীয় দল
গত দু'দিন ধরে ভারত জুড়ে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় পর্যায়ের করোনা টিকাকরণ। এই পর্যায়ে কোমরবিডিটি যুক্ত এবং প্রবল ঝুঁকিপূর্ণ নাগরিকদের টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। যদিও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের এহেন যুদ্ধকালীন তৎপরতার মাঝেই নতুন করে কোভিডের প্রকোপ বাড়ছে কেরল, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু ও গুজরাটে। সরকারি তথ্যানুযায়ী, ভারতে বুধবার নতুন আক্রান্তের প্রায় ৮৬% এই ছয় রাজ্যের!
ছয়ের মধ্যে দুই রাজ্যে লাগামছাড়া কোভিড
বুধবার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪,৯৮৯ জন ভারতীয়, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যদপ্তরের হিসাব বলছে এমনটাই। আশঙ্কার কথা এই যে, তার মধ্যে ৭,৮৬৩ জন আক্রান্ত মহারাষ্ট্রের এবং ২,৯৮৩ জন কেরলের। পাশাপাশি পাঞ্জাবে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৭২৯ জন! অন্যদিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বয়ান অনুসারে, সপ্তাহভিত্তিক আক্রান্তের নিরিখে সর্বাধিক বৃদ্ধি দেখা গেছে মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, দিল্লি, হরিয়ানা ও কর্ণাটকে।
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় দল
সূত্রের খবর অনুসারে, নব আক্রান্তের নিরিখে সপ্তাহভিত্তিক ব্যবধান মহারাষ্ট্রে প্রায় ১৬,০১২ জনের কাছাকাছি। স্বাভাবিকভাবেই টিকাকরণ কর্মসূচির মাঝে করোনার এহেন বাড়বাড়ন্তে চিন্তিত প্রশাসন। করোনার পুনরাগমনের কারণ খুঁজতে উক্ত রাজ্যগুলিতে যাচ্ছে বিশেষ কেন্দ্রীয় দল, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর এমনটাই। গবেষকদের মতে, কম করোনা পরীক্ষা এবং উৎসবের মরশুমে বৃহৎ জমায়েতের কারণেই লাফিয়ে বাড়ছে কোভিড!
আবারও আইসোলেশনের পথে বিভিন্ন রাজ্য
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের উচ্চপদস্থ অফিসারের নেতৃত্বে তিন-সদস্যের বিশেষ দল পৌছাচ্ছে মহারাষ্ট্র, কেরল, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, পাঞ্জাব, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ এবং জম্মু ও কাশ্মীরে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর এমনই। পাশাপাশি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সহ রাজ্যগুলিকে ক্রমাগত করোনা টেস্টিং-ট্র্যাকিংয়ের সাথে সাথে উপযুক্ত উপায়ে আইসোলেশন-কোয়ারানটাইনের বিধি লাঘু করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। যদিও উৎসবের মরশুমে মারণব্যাধিকে কতদূর রোখা সম্ভব, সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দিহান করোনাবিদরা।
টিকাকরণেও সুরক্ষিত নয় নাগরিকরা
গবেষকদের মতে, টিকাকরণের পরে গ্রহীতার দেহে রোগ প্রতিরোধক শক্তি গড়ে উঠতে সময় নেয় প্রায় কয়েক সপ্তাহ। স্বাভাবিকভাবেই টিকাকরণের পরেও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্যানুযায়ী, বুধবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রায় ১,৬৩,১৪,৮৪৫ সংখ্যক ডোজ দেওয়া হয়েছে নাগরিকদের মধ্যে। চিকিৎসকদের মতে, কোমরবিডিটি যুক্ত নাগরিকরাই বর্তমানে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছেন। পাশাপাশি করোনার ক্রমাগত অভিযোজনও যে গবেষকদের মাথাব্যথার কারণ, তা স্পষ্ট সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি থেকেই।