উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কোভিড–১৯, শহরাঞ্চলের পাশাপাশি এবার গ্রামেও করোনা কেসের বৃদ্ধি
উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কোভিড–১৯, শহরাঞ্চলের পাশাপাশি এবার গ্রামেও করোনা কেসের বৃদ্ধি
অতীতের প্রত্যেক ওয়েভের মতোই কোভিড–১৯–এর ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট প্রাথমিকভাবে শহরাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও বহু গ্রামাঞ্চল ও আধা–গ্রামীণ অঞ্চলে গত সপ্তাহে সংক্রমণের তীব্র রেকর্ড দেখা গিয়েছে। প্রসঙ্গত দেশজুড়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হু হু করে বেড়ে যাওয়ায় সরকারের কপালেও চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
করোনা সংক্রমণ বাড়ছে গ্রামেও
নতুন বছর শুরু হওয়ার মুখেই মুম্বই, দিল্লি, চেন্নাই ও কলকাতার মতো শহরগুলি থেকে ৫০ শতাংশ করোনা কেস সনাক্ত হয়েছে। যদিও বুধবার সেই হার কমে ৩৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এর বিপরীতে শহরাঞ্চলে বছরের শুরুতে করোনা কেসের শেয়ার ৬ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বুধবার তা ১২ শতাংশে এসে ঠেকেছে। ওই একই সময়ের মধ্যে, আধা-গ্রামাঞ্চলে শেয়ার কেসগুলি ১৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ শহরের পাশাপাশি গ্রামেও বাড়ছে সংক্রমণ।
শহর ও গ্রামে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা
বছরের প্রথম পাঁচদিনে, গ্রাম ও আধা-গ্রামাঞ্চলে একত্রিতভাবে মাত্র ৫৮,০০০টি মামলা রেকর্ড করা হয়েছিল। এর সাম্প্রতিক পাঁচদিনে এই এলাকাগুলিতে করোনা সংক্রমণ ২৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে তা ২.১২ লক্ষে দাঁড়িয়েছিল। এই একই সময়ের মধ্যে শহর ও আধা-শহরাঞ্চলে করোনা কেস ১,৮০,০০০ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে তা ৬ লক্ষে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল অর্থাৎ ২৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল, তবে গ্রামাঞ্চল থেকে একটু কম বলে জানা গিয়েছে।
একদিনে রেকর্ড কেস রিপোর্ট
বৃহস্পতিবারই ভারতে নতুন করোনা কেস রেকর্ড হয়েছে ২,৫৯,২৯১ টি। যা সাম্প্রতিক ওয়েভে একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ বলে মনে করা হচ্ছে। বুধবার দেশজুড়ে মোট ১৮.৮৬ লক্ষ করোনা টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে, যা ফলই দেখা গিয়েছে বৃহস্পতিবার। করোনার তৃতীয় ওয়েভে একদিনে এটাই সর্বোচ্চ টেস্ট বলে জানা গিয়েছে। যদিও এই তথ্য রাত দশটা পর্যন্ত পাওয়া রাজ্য ভিত্তিক পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে। ঝাড়খণ্ড ও ত্রিপুরা থেকে কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
ভারতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা
ভারত জুড়ে সামগ্রিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩.৬৫ কোটিতে এবং দেশজুড়ে সামগ্রিক মৃত্যু হয়েছে ৪,৮৫,৩৭৬-এ। দেশে সক্রিয় করোনা কেস দাঁড়িয়ে রয়েছে ১২.৫ লক্ষে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে থাকা নাগরিকদের মধ্যে ৬৩.৬ শতাংশের সম্পূর্ণ টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে এবং আংশিক টিকাকরণ হয়েছে ৮৮.৬ শতাংশের। এছাড়াও ১৫-১৭ বছরের বয়সের জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৪২.৪ শতাংশ কমপক্ষে একটি করে ডোজ গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রী ও লেফটেন্যান্ট গর্ভনর/প্রশাসকের সঙ্গে স্বাস্থ্য প্রস্তুতি ও কোভিড-১৯ টিকাকরণের উন্নতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক সারেন। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে ভাইরাসকে পরাস্ত করতে, দেশকে প্রতিটি ভ্যারিয়েন্টের আগে তার প্রস্তুতি রাখতে হবে। তিনি বলেন, 'ওমিক্রনের সঙ্গে মোকাবিলা করার পাশাপাশি আমাদের ভবিষ্যতের ভ্যারিয়েন্টগুলি নিয়েও এখন থেকে প্রস্তুতি করে রাখতে হবে।' তিনি জানিয়েছেন যে মহামারি কৌশল প্রণয়নের সময় সাধারণ মানুষের অর্থনীতি ও জীবিকা রক্ষা করা অত্যাবশ্যক। প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করে জানিয়েছেন যে আগের ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় ওমিক্রন খুব দ্রুত সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। তাই এর হাত থেকে রক্ষা পেতে টিকাকরণই একমাত্র হাতিয়ার। মোদী বলেন, 'আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, সাবধান থাকতে হবে, তবে এটাও খেযাল রাখা উচিত যে কোনও আতঙ্কের পরিবেশ যেন না সৃষ্টি হয়।'