কোনও গোয়েন্দা নয়, এই ব্যক্তির চেষ্টায় নজরে আসে অরুণাচলে চিনের রাস্তা তৈরির কাজ
অরুণাচল প্রদেশে চিনের রাস্তা তৈরির ঘটনাটি প্রকাশ্যে আনেন স্থানীয় যুবক তথা মালবাহক জন। তিনিই আইটিবিপিকে বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করেন। এরপরই ঘটনাটি সম্পর্কে জানানো হয় সেনাবাহিনীকে।
অরুণাচল প্রদেশে চিনের রাস্তা তৈরির ঘটনাটি প্রকাশ্যে আনেন স্থানীয় যুবক তথা মালবাহক জন। তিনিই আইটিবিপিকে বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করেন। এরপরই ঘটনাটি সম্পর্কে জানানো হয় সেনাবাহিনীকে।
অরুণাচল প্রদেশের আপার সিয়াং জেলার তুতিং এলাকার বিশিং গ্রাম। এই এলাকা থেকেই প্রায় ১.২৫ কিমি দূরে রয়েছে কল্পিত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অর্থাৎ ম্যাকমোহন লাইন। ভারতের তরফে কোনও যোগাযোগ না থাকা এই এলাকাতেই ভারতীয় এলাকায় রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করেছিল চিন।
তিব্বত থেকে য়ার্লাং সাংপো নামে বের হওয়া সিয়াং নদীর পূর্বপাড় দিয়ে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল।
আন্তর্জাতিক সীমানায় প্রতিবেশী দেশের রাস্তা থাকলেও, ভারতের দিকে থাকা বিশিং গ্রামে মোটরগাড়ি চলার মতো কোনও রাস্তাই নেই। সেই রকম একটি জায়গায়, চিনের রাস্তা তৈরির কাজ শুরু প্রথমে নজরে আসে স্থানীয় যুবক জন-এর। আইটিবিপি-র পোস্টগুলিতে মালবাহকের কাজ করে এই জন। তিনিই প্রথম আইটিবিপিকে সতর্ক করেন। পরে সেনার কাছে খবর যায়।
প্রসঙ্গত বলা ভাল কার্গিল সেক্টরে পাকিস্তানের অনুপ্রবেশের কথা প্রথমে জানিয়েছিলেন, এলাকার মেষপালকরা। কোনও সেনা কিংবা গোয়েন্দা সূত্র থেকে অনুপ্রবেশের কথা জানা যায়নি। অরুণাচল প্রদেশে ভারতী এলাকায় চিনের রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রেও প্রায় একই ঘটনা ঘটল।
নীতির গেড়োয় আটকে যাওয়া এলাকায় রাস্তা তৈরি কাজ করা যায়নি। এমনটাই জানিয়েছেন, টুটিং সার্কেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাডিশনাল ডেপুটি কমিশনার কে আপাং। গ্রামের বসতি ১০০ জন না হলে পিএমজিএসওয়াই যোজনায় গ্রামের রাস্তা তৈরি করা যায় না। কিন্তু বিশিং-এর বসতি মাত্র ৫৪ জনে, ঘরের সংখ্যা ১৬। সেই জন্যই সেখানে রাস্তা তৈরি করা যায়নি।
এলাকায় ৪ হাজার ফুট উচ্চতায় চিনের রাস্তা তৈরির কাজ নজরে আসে। বিশিং গ্রাম থেকে ৮ থেকে ১০ দিনের পায়ে হাঁটা পথ। গ্রামবাসীদের কাছে পথটি অবশ্য একটু ভিন্ন। প্রায় ৪ কিমি হেঁটে সিয়াং নদীর ব্রিজ পাড় হয়ে গেলিং। এরপর আরও ৪ কিমি রাস্তা, যা কিনা মোটর গাড়িতে যাওয়া যায়।
একেবারে দুর্গম এই জায়গায় চিনের আগ্রাসন যেখানে হয়েছিল, সেখানে একমাত্র ভিলেজ হান্টাররাই গিয়ে থাকেন। একেবারে নো-ম্যানস ল্যান্ড। আন্তর্জাতিক সীমানা বোঝাতে সেখানে নেই কোনও নদী। সম্প্রতি গুগল ম্যাপ থেকে তাঁরা বুধতে পারেন এলাকাটা ভারতের। এমনটাই জানিয়েছেন টুটিং সার্কেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাডিশনাল ডেপুটি কমিশনার কে আপাং। তিনি জানিয়েছেন, চিনা কর্তৃপক্ষ ভারতীয় এলাকায় প্রায় ১২৫০ মিটার রাস্তা ইতিমধ্যেই তৈরি করে ফেলেছে।
সাধারণভাবে যেখানে রাস্তা সারানো হয়, সেখানে চিন এবং ভারতের সেনারা করমর্দন করে। কিন্তু এক্ষেত্রে চিনা সেনার উদ্দেশ্য তাঁরা বুঝতে পারেননি। এই মুহূর্তে এেলাকায় আইটিবিপি-র সঙ্গে ভারতীয় সেনাকে মোতায়েন করা হয়েছে। জানিয়েছেন টুটিং সার্কেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাডিশনাল ডেপুটি কমিশনার কে আপাং।
কিন্তু সেনা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, এলাকায় দ্বিতীয় ডোকলাম তৈরি করতে চেয়েছিল চিন। কেননা, সীমান্তে দুই সেনা কর্তৃপক্ষের মধ্যে বৈঠকের পরেই চিনের রাস্তা তৈরির ঘটনাটি সামনে আসে।