আস্থা ভোটের আগে এক নজরে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার সমীকরণ, বিজেপি বনাম কংগ্রেসে পাল্লা ঝুঁকে কার দিকে?
সুপ্রিমকোর্টের পর্যবেক্ষক নিয়োগ ও কর্নাটক হাইকোর্টে দিগ্বিজয় সিংয়ের আবেদন নাকচের পর একপ্রকার বাধ্য হয়েই কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ ১৬ বিধায়কের ইস্তফা গ্রহণ করেন অধ্যক্ষ। আর এর জেরে পুরোপুরি বদলে যায় মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার সমীকরণ। এর জেরে নতুন সমীকরণে বিজেপি বনাম কংগ্রেসে পাল্লা ঝুঁকে কোন কমলের দিকে?
১৬ বিধায়কের ইস্তফা গ্রহণ
মধ্যপ্রদেশের বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের সঙ্গে স্পিকারের যোগ স্থাপনের জন্য বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগের নির্দেশ দিয়ে সুপ্রিমকোর্ট এই বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বলে। এর আগে বিধানসভার অধ্যক্ষ বলেছিলেন, বিক্ষুব্ধ বিধায়করা স্বশরীরে তাঁর সঙ্গে এসে দেখা করলে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হয়ে তবেই তিনি ইস্তফা গ্রহণ করবেন। তবে সুপ্রিম নির্দেশে একপ্রকার বাধ্য হয়েই শেষ পর্যন্ত বাকি ১৬ বিধায়কের ইস্তফা গ্রহণ করেন অধ্যক্ষ।
ইস্তফা গ্রহণের জেরে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার সমীকরণ
এই ইস্তফা গ্রহণের জেরে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার সমীকরণ পাল্টে গেল পুরোপুরি। মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল লালাজি ট্যান্ডনের নির্দেশে সোমবারই মধ্যপ্রদেশের বিধানসভায় শক্তি পরীক্ষা ছিল মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের। তবে করোনা ভাইরাসের করাণ দেখিয়ে ২৬ মার্চ পর্যন্ত মুলতুবি করা হয় অধিবেশন। আর এর জেরে পিছিয়ে যায় আস্থা ভোটও। তবে সাময়িক নিষ্কৃতি পেলেও আজ আস্থা ভোট করাতেই হবে কমলনাথকে।
কংগ্রেসের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করা সম্ভব না
বর্তমান পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করা খুব কঠিন হয়ে পড়বে। ২২৮ সদস্যের বিধানসভায় ২২ জন বিধায়কের ইস্তফা ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছেন অধ্যক্ষ। এর জেরে সদস্য সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ২০৬-এ। যার অর্থাৎ ম্যাজিক ফিগার ১০৩। এই ২২ জন বিধায়ক ছাড়া সেই সংখ্যার ধারের কাছেও পৌঁছাবে না কমলনাথের সরকার। ইস্তফা গ্রহণ হওয়ায় এখন কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা ৯২। অপর দিকে বিজেপির রয়েছে ১০৭ জন বিধায়ক।
কংগ্রেসের দাবি
এর আগে কংগ্রেস দাবি করেছিল, পদত্যাগী ২২ জন বিধায়কের মধ্যে ১২ জন বিজেপিতে যেতে চান না। তাঁদের স্পষ্ট দাবি, আমরা মহারাজের সঙ্গে এসেছি, কিন্তু আমরা বিজেপিতে যেতে চাই না। এর ফলে মধ্যপ্রদেশ অঙ্ক বদলাচ্ছে। দাবি করা হয়, এই ১২ বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের বাড়িতে বৈঠকে বসেন। আর এই বৈঠকের পরই পাল্টা চাপে পড়ে বিজেপি। তবে বেঙ্গালুরুতে থাকা বিধায়কদরা কংগ্রেসের দাবি উড়িয়ে দেন। লড়াই গড়য় সুপ্রিম কোর্টে।
অ্যডভান্টেজ বিজেপি
কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়ে একটি ভিডিও বার্তায়। মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস যতই বলুক যে ইস্তফা দেওয়া বিধায়করা তাদের সঙ্গেই আছেন, সেই দাবি যে সত্যি নয় তা প্রমাণ করে দিল একটি ভিডিও বার্তা। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার সঙ্গে কংগ্রস ত্যাগী ২২ বিধায়কের সেই ভিডিও বার্তায় আরও ঘোলাটে হয়ে যায় মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক সমীকরণ। এক ভিডিও বার্তায় বিক্ষুব্ধ বিধায়করা জানিয়ে দিয়েছেন যে এখনও তাঁরা বেঙ্গালুরুতেই রয়েছেন। তাঁদের পূর্ণাঙ্গ সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা হলে তবেই তাঁরা ভোপাল ফিরে যাবেন। তবে শেষ পর্ন্ত তাঁদের ইস্তফা গৃহীত হওয়ায় এখন আর কংগ্রেসের কাছে কোনও পথ খোলা নেই।