বিজেপি কোন অঙ্কে তেলেঙ্গানা-বিজয়ের কৌশল করছে, ভোট মেরুকরণে টার্গেট ওবিসিরা
২০১৮ সালে পারেনি, কিন্তু উত্তরোত্তর বৃদ্ধিকে পাথেয় করে বিজেপি আবারও টার্গেট করেছে তেলেঙ্গানাকে। কংগ্রেসকে সরিয়ে বিজেপি দ্বিতীয় শক্তি হয়ে উঠেছে তেলেঙ্গানায়, এবার কেসিআরকে হারিয়ে তেলেঙ্গানার দখল নিতে বদ্ধপরিকর বিজেপি।
২০১৮ সালে পারেনি, কিন্তু উত্তরোত্তর বৃদ্ধিকে পাথেয় করে বিজেপি আবারও টার্গেট করেছে তেলেঙ্গানাকে। কংগ্রেসকে সরিয়ে বিজেপি দ্বিতীয় শক্তি হয়ে উঠেছে তেলেঙ্গানায়, এবার কেসিআরকে হারিয়ে তেলেঙ্গানার দখল নিতে বদ্ধপরিকর বিজেপি। রাজ্যে শাসক দল টিআরএসের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে নামতে চলেছে গেরুয়া শিবির। লক্ষ্য ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচন। তারপক ২০২৪-এর লোকসভা!
সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের খেলা খেলতে চাইছে বিজেপি
২০১৮ সালে কেসিআরের বিরুদ্ধে যে কৌশলটি প্রয়োগ করেছিল বিজেপি, তা কাজে দেয়নি। সেই একই কৌশল পুনরায় সফল করাতে বিজেপি তৎপর। বিজেপি চায় টিআরএস সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের খেলা খেলুক৷ গেরুয়া শিবির টিআরএসকে সেই তিরেই বিদ্ধ করতে চাইছে। কিন্তু শুধু হিন্দুত্বের ধুয়ো দিয়ে কি কেসিআরের মতো শক্তিকে হারাতে পারবে বিজেপি?
দক্ষিণ ভারতের দ্বিতীয় রাজ্যে সরকার গঠনের লক্ষ্যে
তবে বিজেপি বিগত চার বছরে অনেকটাই শক্তি বাড়াতে সক্ষম হয়েছে তেলেঙ্গানায়। আগামী এক বছরে কমপক্ষে ২০ শতাংশ সংগঠন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। দক্ষিণ ভারতের দ্বিতীয় রাজ্যে সরকার গঠনের জন্য তারা বদ্ধপরিকর হয়ে উঠেছে। বিজেপি টিআরএস-বিরোধী ভোটে বিভাজন চায় না। বিজেপি মনে করছে, কংগ্রেসের তিক্ত সমালোচক হলেও রাজ্যের তৃতীয় প্রধান শক্তিতে পরিণত হওয়া কংগ্রেস পুনরুজ্জীবনে সহায়তা করতে কাজ করতে পারেন তিনি।
২০১৮-য় জামানত বাজেয়াপ্ত, ২০২৩-এ প্রবলতর প্রতিপক্ষ
২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তেলেঙ্গানা রাজ্যে অনেক বিজেপি প্রার্থী জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। বিজেপি শুধুমাত্র একটি আসন জিততে সক্ষম হয়। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ১৭টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে চারটিতে জয়লাভ করে তেলেঙ্গানায়। এই ফলেও ভবিষ্যৎ ছিল অন্ধকার। তবে তার পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ ২০১৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত বিজেপি তাদের শক্তি বাড়াচে সক্ষম হয়েছে।
তেলেঙ্গানায় কোন পথে শক্তি বাড়ল বিজেপির
বিজেপির সবথেকে বড় লাভ এসেছে নিজামবাদ জেলা থেকে। সেখানে কেসিআরের মেয়ে এবং বর্তমান সাংসদ কে কবিতা হেরেছেন অরবিন্দ ধর্মপুরীর কাছে। বিজেপি আদিলাবাদ এবং করিমনগর দুটি আসনও জিতেছে উপনির্বাচনে, যা একসময় টিআরএসের শক্ত ঘাঁটি বলে বিবেচিত হত। এছাড়া বিজেপি ২০২০ সালে দুব্বাকা উপনির্বাচনে জিতে মানসিকভাবে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে।
টিআরএসের ধাক্কা উপনির্বাচনে, বিজেপির শক্তিবৃদ্ধি
সম্প্রতি হায়দরাবাদ পুরনির্বাচনে অবাক করা ফল করেছে বিজেপি। টিআরএস ধাক্কা খেয়েছে পুর নির্বাচনে। আর টিআরএসের জন্য সবথেকে খারাপ ধাক্কা ছিল, যখন পার্টি প্রধান কেসিআর তার প্রাক্তন সহযোগী ইতালা রাজেন্দরের কাছে হুজুরাবাদ উপনির্বাচনে হেরে যান। এইসব ঘটনা পরম্পরায় বিজেপি শক্তি পেয়েছে। সেটাই এবার বিধানসভা নির্বাচনে প্রয়োগ করতে চাইছে বিজেপি।
কংগ্রেসের পতনেই বিজেপির উত্থান কেসিআরের রাজ্যে
একের পর এক ভাঙনে ২০১৮ সালে কংগ্রেস ১৯টি আসন থেকে এক ধাক্কায় ছ'টিতে নেমে এসেছিল। বিজেপি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে দুই নম্বরে উঠে আসে। তিন নম্বরে নেমে যায় কংগ্রেস। কিন্তু বিজেপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ কংগ্রেস ভাঙার থেকেও বেশি ওবিসি ভোট-ব্যাঙ্ক ভাঙা। রাজ্যের জনসংখ্যার ৫৬ শতাংশ ওবিসি। তাই এই ভোট-ব্যাঙ্ক ভাঙতে পারলেই বিজেপি তাঁদের লক্ষ্যের দিতে অনেকটাই এগিয়ে যেতে পারবে।
বিজেপি কোমর বাঁধছে, টিআরএস হাত গুটিয়ে বসে নেই
বান্দি সঞ্জয়ের মতো একজন জ্বলন্ত বক্তাকে রাজ্যের প্রধান এবং জাতীয় ওবিসি মোর্চা সভাপতি গুদাবর্তির নিয়োগকে গেরুয়া শিবির তেলেঙ্গানায় দলকে জাগ্রত করার প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে দেখছে। টিআরএস অবশ্য হাত গুটিয়ে বসে নেই। বিজেপির পরিকল্পনা বুঝে তাঁরাও কাউন্টার করছে। বিজেপি জনবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মোদী-নাড্ডাদের মুখোশ খুলে দিতে চাইছে।