নির্বাচনী ইস্তেহারে কাশ্মীরের ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করল বিজেপি
এদিন নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করেছে বিজেপি। ৩৭০ ধারা ও ৩৫এ ধারা নিয়েও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে বিজেপি সরকার।
এদিন নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করেছে বিজেপি। দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ হবে ২০২২ সালে। সেকথা মাথায় রেখেই ৭৫টি সংকল্প নিয়ে বিজেপি ইস্তেহার প্রকাশ করেছে। তিন তালাক থেকে শুরু করে শিল্পায়ন - সব বিষয়গুলিই ছুঁয়ে যাওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি ৩৭০ ধারা ও ৩৫এ ধারা নিয়েও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে বিজেপি সরকার। এই দুই ধারা নিয়ে বিজেপির অঙ্গীকার ও পাশাপাশি সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক ধারা দুটি সম্পর্কে।
ধারা ৩৭০ নিয়ে বিজেপি
গত পাঁচ বছরে আমরা জম্মু ও কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে নানা ধরনের চেষ্টা করেছি। যত বাধাই আসুক তা পেরোতে চেষ্টা করেছি। কাশ্মীরের সর্বত্র উন্নয়নকে ছড়িয়ে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। তার জন্য সব বাধা পার করব আমরা। জনসংঘ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আমাদের ৩৭০ ধারার অবলুপ্তি নিয়ে অবস্থান একই রকমের রয়েছে।
৩৫এ ধারা প্রসঙ্গে বিজেপি
ভারতীয় সংবিধানের ৩৫এ ধারাকে বাতিল করতে আমরা বদ্ধপরিকর। কারণ এতে অস্থায়ী মহিলা বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈমাতৃসুলভ আচরণ করা হয়েছে। আমরা মনে করি এই ধারা উন্নয়নের পথে বাধা। আমরা রাজ্যের সমস্ত নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের জন্য পদক্ষেপ করব। কাশ্মীরে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া পশ্চিম পাকিস্তান, পাক অধীকৃত কাশ্মীরের উদ্বাস্তুদের আর্থিক সাহায্য করা হবে।
আসলে ৩৭০ ধারা কী?
১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের অংশ ছিল না। সেখানে রাজা হরি সিং রাজ্যপাট চালাতেন। পরে পাকিস্তান আচমকা হামলা করলে ভারতে অন্তর্ভুক্তি হয় শর্ত সাপেক্ষে। সেখানেই ৩৭০ ধারা অনুযায়ী বিশেষ সংস্থান রাখা হয়। যা অনুযায়ী কাশ্মীর একটি ব্যতিক্রমী রাজ্য। প্রতিরক্ষা সহ কয়েকটি হাতে গোনা বিষয় ছাড়া ভারত সরকারের সেরাজ্যে কোনও আইন প্রয়োগ করতে গেলে কাশ্মীরের রাজ্য সরকারের অনুমতি প্রয়োজন হয়। এই ধারা মোতাবেক কিছু সুবিধা কাশ্মীরিরা পায় যা অন্য রাজ্যের মানুষ পান না।
এই ধারা রোধ কী সম্ভব?
৩৭০ ধারা রোধ করা বা বাতিল করা অত সম্ভব নয়। বদলের জন্য সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন। রাষ্ট্রপতি তা সংশোধন করতে পারেন। তবে তাতে রাজ্যের অনুমোদন প্রয়োজন। কাশ্মীর বিধানসভায় তা পাশ করাতে হবে। আর সেখানেই গেরো। কারণ কোনও দলই এই ধারার বিপক্ষে ভোট দেবে না। তাহলে তাঁদের অস্তিত্বই উপত্যকায় বিপন্ন হয়ে যাবে।
৩৫এ ধারা কী?
৩৭০ ধারার মধ্যেই এই ধারাটি সিক্ত হয়ে রয়েছে। এই ধারাই কারণেই কাশ্মীরের রাজা হরি সিং ভারতের অংশ হতে রাজি হন। এখানে বলা হয়েছিল, উপত্যকার বাইরের কোনও প্রদেশের ব্যক্তি এখানে জমি-বাড়ি কিনতে পারবেন না। একমাত্র এখানকার স্থায়ী নাগরিক যারা ১৯৫৪ সাল বা তার আগে থেকে রয়েছেন, তাঁদের এই অধিকার রয়েছে। এক্ষেত্রে কোনও মহিলা বিয়ে করে অন্য প্রদেশে চলে গেলে তাঁরা সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন। পরে এই নিয়ে আদালতে মামলা হয়েছে। কারণ ১৯৫৪ সালে রাষ্ট্রপতির নির্দেশ অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন হয়নি। ধারাটি অস্থায়ী নির্দেশ ছিল। সংসদে পাশ না করিয়েই তা বলবৎ করা হয়। ফলে তা খারিজের দাবি জানানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: দেশের ৭৫-এ ৭৫ মাইলস্টোন! তিন তালাক থেকে মহিলা সংরক্ষণ নিয়ে কোন পরিকল্পনায় বিজেপি]
[আরও পড়ুন:মোদী সরকার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে শহর! এডিআর-এর সমীক্ষায় চাঞ্চল্যকর তথ্য]