ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রী বদলে কি সঙ্কট বাড়বে শাসক দলে, আড়াআড়ি বিভাজনে মহাবিপাকে বিজেপি
মেয়াদ ফুরোতে আর বাকি নেই এক বছরও। তারপরই বিধানসভা নির্বাচন। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়ে গড় রক্ষায় নামল বিজেপি।
মেয়াদ ফুরোতে আর বাকি নেই এক বছরও। তারপরই বিধানসভা নির্বাচন। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়ে গড় রক্ষায় নামল বিজেপি। যেতেন প্রকারে ক্ষমতার অলিন্দে থাকতে হবে, তাই মুখ্যমন্ত্রিত্বে ভাবমূর্তি বদলের চেষ্টায় মুখ বদল করে দিল বিজেপি। কিন্তু বিজেপি কি পারবে মুখ বদল করে গড় রক্ষা করতে, সেই প্রশ্নে তোলপাড় রাজনৈতিক মহল।
শুধু ত্রিপুরাই নয়, একাধিক রাজ্য মুখ্যমন্ত্রী বদল করে বিজেপি সাফল্য পেয়েছে। তার মধ্যে প্রথমেই উল্লেখ করতে হবে উত্তরাখণ্ডের নাম। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে একই মেয়াদে দুজনকে সরিয়ে বসানো হয়েছিল পুষ্কর ধামীকে। রাজ্যে প্রায় পরাজয়ের মুখে থাকা বিজেপি এই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে রাজ্যে জিতেও যায়।
তারপর কর্নাটকেও বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বদল করে। ফলে বিজেপিতে মুখ্যমন্ত্রী বদলের রেয়াজ রয়েছে। কোনও মুখ্যমন্ত্রীর ভাবমূর্তি নিয়ে সমস্যা হলে তাঁকে বদল করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে বিজেপি। এই একই পদ্ধতি প্রয়োগ করে ২০২৩-এ বিজেপি কি জিততে পারবেন কি না, তা বলবে ভবিষ্যৎ। তবে একইসঙ্গে এটা ঠিক যে বিজেপি ২০২৩-এর আগে একবার দেখে নিতে চাইছে পরিস্থিতি কতটা বদলাতে পারে।
বিপ্লব দেবের ইস্তফার পরপরই মানিক সাহাকে বেছে নেওয়া হয়েছে পরিষদীয় দলের নেতা হিসেবে। তিনি বর্তমানে বিজেপির রাজ্য সভাপতি। আবার রাজ্যসভার সাংসদ। অর্থার কোনও বিধায়ককে বেছে নেওয়া হয়নি পরিষদীয় দলের নেতা হিসেবে। মানিক সাহা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায়, তাঁকে উপনির্বাচনে জিতে আসতে হবে।
একাধিক আসনে উপনির্বাচন বাকি ত্রিপুরায়। সেই নির্বাচন বিজেপি সংঘটিত করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এবার রাজ্যসভার সাংসদ মানিক সাহাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়ায় উপনির্বাচন করতে হবে। উপনির্বাচনে বিজেপি দেখে নিতে চাইছে এই মুহূর্তে ত্রিপুরার মানুষ কী চাইছেন।
প্রথমত ত্রিপুরায় বিজেপি বিজেপি পিছিয়ে পড়ছে। বিজেপির পাশ থেকে সরে যাচছে মানুষ। তাই মানুষকে বার্তা দেওয়া বিজেপি তাদের ভুল শুধুরে নতুন ত্রিপুরা দেবে। আর দ্বিতীয় ভোটে গিয়ে মানুষের মন পরিবর্তন হয়েছে কি না, তা দেখে নিতে চাইছে। তাহলে সেইমতো ঘূঁটি সাজাবে বিজেপি। বিপ্লব দেবকে আবার সংগঠনে ফিরিয়ে এনে রাজ্যের ক্ষমতা ধরে রাখার পথ প্রশস্ত করতে চাইছে।
রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, বিপ্লব দেবকে ফের তাঁর পুরনো পদ ফিরিয়ে দেয়া হতে পারে। তাঁকে ত্রিপুরা বিজেপির রাজ্য সভাপতি করা হতে পারে। আবার রাজ্যসভার সাংসদও করা হতে পারে। অর্থাৎ মানিক সাহাকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসিয়ে, তাঁর পদ তুলে দেওয়া হতে পারে বিপ্লব দেবের কাঁধে।
Recommended Video
বিপ্লব দেব যেভাবে ২০১৮ সালে বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে বিজেপিকে ক্ষমতায় এনেছিলেন, এবারও তিনি যাতে জয়ের সরণিতে রাখতে পারেন দলকে। তবে বিজেপিতে হঠাৎ এই পরিবর্তনে তাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে। বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর বিধায়ক-মন্ত্রীরা ক্ষুব্ধ মানিক সাহাকে পরিষদীয় দলের নেতা হিসেবে বেছে নেওয়ায়। বিধায়ক-মন্ত্রীদের বৈঠক চলাকালীন হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন নেতারা। ফলে এই এই পরিবর্তনে নতুন সঙ্কট তৈরি হয়, নাকি বিজেপির জয়ের পথ প্রশস্ত হয়, তা বলবে ভবিষ্যৎ।