পদ্ম-কাঁটায় অবশ হাত, 'আপ' বাড়াল চাপ
রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপি। রাজস্থানে কংগ্রেসকে কার্যত মুছে দিয়ে তখতে বসছে বিজেপি। বাকি দু'টি রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে তারা। আর ত্রিশঙ্কু দিল্লিতে সরকার গড়তে আলোচনা শুরু করেছেন বিজেপি নেতারা। অপ্রত্যাশিতভাবে দিল্লিতে 'ফ্যাক্টর' হয়ে উঠেছে আমআদমি পার্টি (আপ)। বিজেপি-র পর তারা দিল্লিতে দ্বিতীয় বৃহত্তম দলে পরিণত হয়েছে। সবাইকে চমকে দিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতকে ২২ হাজার ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন আমআদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আমআদমি পার্টির প্রতিক্রিয়া, শীলা দীক্ষিতের পর এবার নরেন্দ্র মোদীকেও হারাবে তারা। প্রথম নির্বাচনী লড়াইয়ে যদি এই পরিণতি হয়, তা হলে 'আপ' বড় দলগুলির রক্তচাপ বাড়াবে, সন্দেহ নেই।
এমন খারাপ পরিণতি হবে, আশা করেছিলেন? প্রত্যুত্তরে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী জানান, "এই ফল দুভার্গ্যজনক। আমি হতাশ। মানুষ নিশ্চয় আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন, নইলে এমন ফল হত না। আমরা আত্মসমীক্ষা করব। কংগ্রেস এই রায়কে বিনীতভাবে গ্রহণ করছে। বিরোধীরা এত ভালো ফল করায় তাদের অভিনন্দন।" তিনি আরও বলেন, লোকসভা ভোটে কে কংগ্রেসের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন, তা 'উপযুক্ত' সময়ে ঘোষণা করা হবে।
ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, কংগ্রেসের ব্যর্থতার দায় এবার মনমোহন সিংয়ের ওপর চাপিয়ে দিয়ে তাঁকে 'বলির পাঁঠা' করা হবে। সোনিয়ার পাশাপাশি রাহুল গান্ধী বলেন, "এই নির্বাচন আমাদের একটি বার্তা দিয়েছে। কংগ্রেস নিজেকে শোধরানোর ক্ষমতা রাখে, আর সেই চেষ্টা কংগ্রেস নিশ্চয় করবে। কংগ্রেসের সংগঠন ঢেলে সাজানোর কাজে আমি ব্যক্তিগতভাবে আরও সময় দেব।"
এদিকে, এই ফলাফলে বেশ খুশি বিজেপি। নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং এসে পৌঁছেছেন দিল্লিতে। রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি হেভিওয়েট অরুণ জেটলি বলেন, "যে চার রাজ্যের ফল আজ ঘোষিত হল, সেখানে লোকসভার আসন রয়েছে ৭২টি। সেই নিরিখে আমরা অন্তত ৬৫টি আসনে এগিয়ে রইলাম। তা হলে বুঝে নিন, এপ্রিল-মে মাসে লোকসভায় কী হতে চলেছে!" বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিং বলেছেন, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে যথাক্রমে শিবরাজ সিং চৌহান ও রমন সিং মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ভালো কাজ করেছেন। তাই মানুষ ঢেলে ভোট দিয়েছেন। আর রাজস্থানে অশোক গেহলটের অপশাসনের জবাবে মানুষ বিজেপি-কে জিতিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এর ফলে বিজেপি-র আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গেল।
প্রসঙ্গত, সোমবার মিজোরামে ভোট গণনা হবে। তার আগে চার রাজ্যে এমন পরিণতি কংগ্রেসকে হতাশায় ডুবিয়ে দিয়েছে।