কংগ্রেসের ‘হাত’ কেড়ে নেবে বিজেপি! মানব-অঙ্গে নির্বাচনী বিধিভঙ্গই অস্ত্র এই প্রতীক-যুদ্ধে
কংগ্রেস নেতারা মঞ্চে হাত নেড়ে নিজেদের প্রতীককে ‘আশ্বাসের প্রতীক’ হিসেবে তুলে ধরতেন। কংগ্রেসের সাধের সেই হাত প্রতীকেই এখন বড় প্রশ্নচিহ্ন দাঁড় করিয়ে দিল বিজেপি।
সিপিএমের রাজত্বে একটা সময় ভোট প্রচারে কান পাতলেই শোনা যেত- 'রাজীবের কাটা হাতে একটিও ভোট দেবেন না।' সিপিএম মুষ্টিবদ্ধ হাতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যখন এই বলে প্রচারে ঝড় তুলত, তখনও কংগ্রেস নেতারা মঞ্চে হাত নেড়ে নিজেদের প্রতীককে 'আশ্বাসের প্রতীক' হিসেবে তুলে ধরতেন। কংগ্রেসের সাধের সেই হাত প্রতীকেই এখন বড় প্রশ্নচিহ্ন দাঁড় করিয়ে দিল বিজেপি।
এমনকী রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠে পড়ল কংগ্রেসের হাত চিহ্ন আদৌ থাকবে তো! বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায় সম্প্রতি কংগ্রেসের হাত প্রতীকের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন। তিনি ছ-পাতার একটি আবেদনে অভিযোগ করেছেন, কংগ্রসের এই হাত চিহ্ন জন প্রতিনিধি আইন ও আদর্শ আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছে। তিনি এই বিষয়ে সম্প্রতি মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ওমপ্রকাশ রাওয়াতের সঙ্গে দেখা করে হাত প্রতীক খারিজের আবেদন জানিয়েছেন।
বিজেপি নেতার আপত্তি, 'কংগ্রেস প্রতীক মানবদেহের একটি অঙ্গ। ফলে সেই প্রতীক মানুষের সঙ্গে সর্বদা সর্বত্র চলে যায়। নির্বাচন বিধির ১৩০ নম্বর ধারায় বলা আছে, ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে কোনও দলের প্রতীক দেখানো যাবে না। জনপ্রতিনিধি আইনের ১৫১ ধারায় উল্লেখ রয়েছে ভোটের ৪৮ ঘণ্টার আগে প্রচার শেষ করতে হবে। অথচ ভোটের দিনও কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা হাত তুলে ওই চিহ্নে ভোটের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। এবং অবলীলায় ভোটকেন্দ্রের মধ্যেও এই প্রচার চলে।'
তাঁর কথায়, 'অঙ্গ হিসেবে একমাত্র হাতকেই প্রতীক চিহ্ন হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কার্যত দেখা যাচ্ছে, সেই প্রতীকের অপব্যবহার করা হচ্ছে। এবং আইন লঙ্ঘনও করা হচ্ছে।' সেই কারণ দর্শিয়েই এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। সেইসঙ্গে কংগ্রেসের বর্তমান প্রতীক খারিজের আবেদন জানান তিনি।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রতীক ছিল জোড়া বলদ। ইন্দিরা কংগ্রেস গঠনের পর তার প্রতীক হয় গাই-বাছুর। '৭৭ সালে কংগ্রেস (আই)-এর প্রতীক হয় হাত চিহ্ন। ইন্দিরা গান্ধীর সময় থেকেই এই হাত প্রতীকে নির্বাচনী যুদ্ধ লড়ে আসছে কংগ্রেস। ইন্দিরা গান্ধী কী করে হাত চিহ্ন পেলেন, সেই বিতর্কে না গিয়ে এখন মানবদেহের হাত-এর সৌজন্যে কীভাবে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ হচ্ছে, তা জানিয়ে কংগ্রেসের প্রতীক খারিজই উদ্দেশ্য বিজেপির।