মদ নিষিদ্ধ আইন অবৈধ, পাটনা আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ বিহার সরকার
পাটনা, ৩ অক্টোবর : বিহার সরকারের মদ নিষিদ্ধ আইন অবৈধ এমনটাই পাটনা উচ্চ আদালত তার রায়ে জানিয়ে দিয়েছিল। সোমবার সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানালো বিহার সরকার। নীতিশ কুমার ক্ষমতায় আসার আগে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে জানিয়েছিলেন সরকার গঠন করলে বিহারে মদ নিষিদ্ধ করবেন। সেই মতো বিহারে চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে মদ বিক্রি এবং মদ্যপানকে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। [ঘর অন্ধকার করে জুস খান, মদ খাওয়ার অনুভূতি হবে : নীতিশ কুমার]
বিচারপতি টিএস ঠাকুরের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি ও রায়দানের পরে বিহার সরকার সিদ্ধান্ত নেয় রায়কে চ্যালেঞ্জ জানানোর জন্য। মদ্য ব্যবসায়ীদের সংগঠনের পক্ষ থেকে পাটনা আদালতে দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিহার সরকারের মদ নিষিদ্ধ আইন অবৈধ ঘোষনার পরে বিড়ম্বনায় পড়ে সরকার। সেই বিড়ম্বনা কাটাতেই তড়িঘড়ি সুপ্রিম কোর্ট যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল সরকারের পক্ষ থেকে এমনটাই মনে করছেন ওয়াকিবহল মহল। [বিহারে নিষিদ্ধ মদ : নেশার অভাবে অসুস্থ ৭৫০, নেশার আশায় কেউ খেল সাবান, কেউবা পেনকিলার!]
এর মধ্যেই বিহারকে শুখা ঘোষনা করতে তৎপর নীতিশ কুমার সরকার গান্ধী জয়ন্তীর দিনে মন্ত্রীসভার সিন্ধান্ত অনুযায়ী নতুন একটি আইন বলবৎ করেছেন। মন্ত্রীসভার সমস্ত মন্ত্রী বিহারকে মদ থেকে মুক্ত করার শপথও নেন। নতুন আইনে মদ্য পান, বিক্রি বা মজুত করলে আগের চেয়ে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কোন ব্যক্তি মদ্য পান করলে সেই ব্যক্তির পরিবারের সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা যে নিয়ম আগের আইনে ছিল এবারে তার চেয়েও কঠোর আইন প্রয়োগ করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। [বিহারে মদ নিষিদ্ধ, সেই সুযোগে ঝাড়খণ্ডে হুহু করে বাড়ছে 'সুরা পর্যটন']
এবিষয়ে সরকারের বক্তব্য, মদ মুক্ত সমাজ তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষমতায় এসেছেন নীতিশ কুমার। তাঁরা সেই প্রতিশ্রুতি পালনের চেষ্টা করছেন। এরপরেই আইনঞ্জদের পরামর্শ নিয়ে পাটনা আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত ১৩ হাজার জনকে গ্রেফতার করা হয় মদ নিষিদ্ধ আইনের উপর ভিত্তি করেই। বিহারে চলতি বছরের অগাস্ট মাসে বিষ মদ খেয়ে ১৭ জনের মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছিল। বহু মানুষ মদ খেতে না পেয়ে দেশি মদ খেতে শুরু করেন। আর দেশি মদে বিষক্রিয়ার কারনে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল বলে সেই সময়ে হাসপাতাল সূত্রে দাবি করা হয়েছিল।এতেও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল সরকারকে। এখন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেই জানা যাবে বিহার আদৌ শুখা থাকছে কিনা।