ঝড়ের দাপট! ৫৩ জনেরও বেশি প্রাণ গেল এই পাঁচ রাজ্যে, আহত বহু
রবিবার সন্ধ্যার শক্তিশালী আঁধি ও বজ্রবিদ্যুত সহ ঝড়-বৃষ্টিতে উত্তর প্রদেশের ১৮ জন, পশ্চিমবঙ্গে ১২ জন, অন্ধ্রপ্রদেশে ৯ জন, এবং দিল্লি ও বিহার থেকে দুইজন করে মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার বিকেলে ভারতের একধিক রাজ্যে আঁধি ও বজ্র বিদ্যুত-সহ প্রবল ঝড়ের দাপটে প্রাণ গিয়েছে অন্তত ৫৩ জনের। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে উত্তর প্রদেশে। এ রাজ্যে ঝড়ের কবলে গিয়েছে ১৮টি প্রাণ। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গে চার শিশু সহ মোট ১২ জন, অন্দ্র প্রদেশে ৯ জন ও দিল্লিতে ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। বিহারের ছআতরা জেলাতেও ২ জন নিহত। এএনআইয়ের প্রতিবেদনে মৃতের সংখ্যা ৬৫-র কাছাকাছি দাবি করা হয়েছে।
প্রাণহানি না হলেও ঝড়ে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, মধ্য প্রদেশ, ঝাড়খন্ড, অসম, মেঘালয়, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, কেরালা এবং তামিলনাড়ুতেও।
মাত্র ১০ দিন আগেই উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, তেলঙ্গানা, উত্তরাখণ্ড ও পাঞ্জাবের ঝড়ের প্রকোপে ১৩৪ জন মানুষ নিহত হয় এবং ৪০০ জনের মতো আহত হয়েছিলেন। সেবারেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছি উত্তর প্রদেশ। এই রাজ্য থেকে ৮০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছিল। তারপর গত ৯ মে তারিখেও উত্তরপ্রদেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় তীব্র ঝড়বৃষ্টিতে ১৮ জন মারা গিয়েছিলেন। আহত হন ২৭ জন।
Several vehicles turned turtle and fell on each other on Delhi-Kanpur Highway, following heavy rainfall and dust storm in #Bulandshahr, yesterday pic.twitter.com/IU6eL8kzEG
— ANI UP (@ANINewsUP) May 14, 2018
রবিবার বিকেলে উত্তর প্রদেশের বিস্তৃর্ণ এলাকায় বজ্র বিদ্যুত সহ প্রবল ঝড়বৃষ্টির পাশাপাশি শিলা বৃষ্টিও হয়। এতে অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন ও২৮ জন জখম বলে জানিয়েছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্য সচিব (তথ্য)অবনীশ অবস্তি। এছাড়া রাজ্যের ৩৭টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্বলে বাজ পড়ে অন্তত ১০০টি বাড়িতে আগুন লেগে যায়। দমকল কর্মীদের তৎপড়তায় অবশ্য সে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনা সম্ভব হয়। ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর নেই। কাশগঞ্জে মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। বুলন্দশহরে তিনজন এবং গাজিয়াবাদ ও সাহারানপুরে দুইজন করে মারা গিয়েছেন। এছাড়া এটাওয়া, আলিগড়, কানৌজ, হাপুর, নয়ডা ও সম্বলেও একজন করে মারা গিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সব জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও কমিশনারকে দ্রুত ত্রাণ পরিষেবা এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গেও রবিবার বিকেলের ঝড়ে মোট ১২ জন মারা গিয়েছেন, যার মধ্যে ৫ টি মৃত্যু হয়েছে হাওড়া জেলায়। পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া জেলা থেকে দুজন করে এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। হাওড়ায় আম পাড়তে গিয়ে বজ্রাঘাতে মারা যায় ৪ জন শিশু।
Around 100 houses gutted into fire which broke out due to lightning in Sambhal's Rajpura. Three fire tenders and police officials present at the spot pic.twitter.com/sBq1pKT3Yn
— ANI UP (@ANINewsUP) May 13, 2018
রাজধানী দিল্লিতেও ২ জন মারা গিয়েছেন। দিল্লি বিমান বন্দরে বাতিল করতে হয় অনেকগুলি উড়ান। দক্ষিণ ও পশ্চিম দিল্লির একাধিক এলাকায় গাছ পড়ে ব্যহত হয়েছে ট্রাফিক। বিপর্ষয় মোকাবিলা বাহিনী গাছ গুলি সরাতে উদ্যোগী হয়। গাছ পড়ে নিজামউদ্দীন পালওয়াল শাখায় বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচলও।
অন্ধ্রপ্রদেশেও ঝড়ের দাপটে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি এরাজ্যে গাছ পড়ে ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়ে অনেক এলাকায় দীর্ঘক্ষণ ব্যহত হয় বিদ্যুত পরিষেবা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন। তাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতিও। নয়েদিল্লির আবহাওয়া দপ্তর আগামী কয়েকদিনও ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে।