দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল, শপথ ২৬শে
বিধানসভা নির্বাচনে দিল্লিতে কেউই নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা না পাওয়ায় জট পাকিয়েছিল। কংগ্রেস বলেছিল, আমআদমি পার্টি সরকার গড়লে তারা বাইরে থেকে সমর্থন করবে। প্রশান্ত ভূষণ, যোগেন্দ্র যাদব প্রমুখ নেতৃত্ব এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেলেও খুঁতখুত করছিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাই তিনি মানুষের মতামত চেয়েছিলেন। দলীয় সূত্রে খবর, এসএমএস মারফত সিংহভাগ মানুষ জানিয়েছেন, কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়ুক আমআদমি পার্টি। গত দু'দিনে মহল্লা ধরে-ধরে ২৮০টি আলোচনাসভা করেছে আমআদমি পার্টি। ২৫৭টি আলোচনাসভাতে মানুষ সরকার গড়ার পক্ষে রায় দেন। মানুষের মতকে সম্মান জানিয়ে শেষ পর্যন্ত সোমবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসতে রাজি হন তিনি।
সোমবার সকালে সংবাদমাধ্যমের সামনে অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানান, তাঁরা সরকার গড়ছেন। মধ্যাহ্নে নিজের দলের ২৮জন বিধায়ক ও কংগ্রেসের ৮জন বিধায়কের সমর্থনসূচক পত্র তিনি তুলে দেবেন উপরাজ্যপাল নাজিব জঙ্গের হাতে। এই ঘোষণার পরই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন আমআদমি পার্টির কর্মী-সমর্থকরা। শুরু হয় মিষ্টি বিলি। জয়ধ্বনি হয় কেজরিওয়ালের নামে।
দিল্লির হবু মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি সরকারি গাড়িতে লালবাতি ব্যবহার করবেন না। হুটার বাজিয়ে যাতায়াত করবেন না। তিনি বা তাঁর মন্ত্রীরা এখন যেমন সাধারণ বাড়িতে থাকেন, তেমনই থাকবেন। সুসজ্জিত সরকারি বাংলো ব্যবহার করবেন না। যে কোনও সময়ে সাধারণ মানুষ তাঁদের সমস্যা নিয়ে আসতে পারবেন মন্ত্রীদের কাছে। লোকসভা ভোটের আগে 'স্বচ্ছ প্রশাসন' উপহার দেওয়া চ্যালেঞ্জ বলে জানান তিনি।
ক্ষমতায় বসেই একগুচ্ছ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। যেমন, দিল্লিতে মেয়েদের নিরাপত্তা নেই। আইন-শৃঙ্খলা খারাপ। এই পরিস্থিতি বদলাতে হবে তাঁকে। ভোটের আগে আমআদমি পার্টির প্রতিশ্রুতি ছিল, ক্ষমতায় এসে সব গৃহস্থ বাড়িতে ৭০০ লিটার পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা করবেন। বিদ্যুতের মাশুল কমানোর প্রতিশ্রুতিও ছিল। এগুলি পূরণ করতে হবে তাঁকে।
এদিকে, সমর্থন দেওয়া নিয়ে ডিগবাজি খেল কংগ্রেস। আগে তারা বলেছিল, নিঃশর্ত সমর্থন দেওয়া হবে। সেই অবস্থান থেকে সরে এসে এদিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেত্রী শীলা দীক্ষিত বলেছেন, সমর্থন হবে শর্তসাপেক্ষ। আমআদমি পার্টি শর্ত মেনে কাজ করছে কি না, তা দেখবে কংগ্রেস। এ নিয়ে অবশ্য ভীত নন কেজরিওয়াল, প্রশান্ত ভূষণরা। তাঁরা বলেছেন, কংগ্রেস হঠাৎ করে সমর্থন তুলে নিয়ে সরকার ফেলে দিলে মানুষের দরবারে ছুটে যাবে আমআদমি পার্টি।