৩৭০ ধারা বিলোপ নিয়ে কী বললেন কাশ্মীরের যুবরাজ করণ সিং?
এখন রাজত্ব নেই বটে তবে এখনই ভূস্বর্গের অধিপতি সেই রাজ পরিবারই। সোমবার রাজ্যসভায় যখন অমিত শাহ কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বিলোপের কথা বলছেন।
এখন রাজত্ব নেই বটে তবে এখনই ভূস্বর্গের অধিপতি সেই রাজ পরিবারই। সোমবার রাজ্যসভায় যখন অমিত শাহ কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বিলোপের কথা বলছেন। সেসময়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন কাশ্মীরের যুবরাজ ডঃ করণ সিংও। কাশ্মীরের শেষ রাজা হরি সিংয়ের ছেলে করণ সিং এখন কংগ্রেসের সাংসদ।
অমিত শাহের ঘোষণার পর অত্যন্ত শান্ত সমীহিত কণ্ঠে তিনি যা বললেন, তার অর্থ এই দাঁড়ায় যে বিজেপি কাশ্মীর নিয়ে যে পন্থাই গ্রহণ করুক তাতে বৈপ্লবিক কিছু ঘটবে না। কারণ কাশ্মীর সমস্যার সমাধান অত সহজ বিষয় নয়। ৩৭০ ধারা বিলোপ করে যদি মোদী সরকার মনে করে যে বিরাট কিছু ঘটিয়ে ফেলেছেন বা কাশ্মীর আর আগের মতো থাকবে না তাহলে ভুল ভাবছেন।
কারণ কাশ্মীর সমস্যা বড় জটিল একটি বিষয়। কারোর হাতেই সেই ম্যাজিক বুলেট নেই যাতে রাতারাতি কাশ্মীর সমস্যা মিটে যাবে।
রাজ্যসভায় তিনি জানিয়েছেন, '১৯৪৭ সালের ২৭ অক্টোবর আমার বাবা মহারাজা হরি সিং যে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন, তাতে লেখা ছিল কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। রাজবাড়ির একটি ঘরে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সেসময় আমিও ছিলাম বাড়িতে। আমার বাবা সেই চুক্তিপত্রে তিনটি বিষয় যুক্ত করেছিলেন প্রতিরক্ষা, যোগাযোগ এবং বিদেশ বিষয়ক। সেই চুক্তি অন্য রাজ্যগুলিও স্বাক্ষর করেছিল। কিন্তু সব রাজ্যগুলি একই রকমভাবে তৈরি করা হলেও কাশ্মীরকে করা হয়নি। তাই মনে রাখতে হবে কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও সেই স্বাধীনতার পর থেকেই ভারতের এই অংশ বিশেষ একটি স্থান অধিকার করে রয়েছে।'
১৯৬৫ সালে কাশ্মীরের প্রথম রাজ্যপাল হয়েছিলেন যুবরাজ করণ সিং। তিনি দাবি করেছেন, এতকিছুর পরেও কিন্তু কাশ্মীরের অবস্থান ঠিক কী তা স্পষ্ট করতে পারেনি মোদী সরকার।
লাদাখ এবং কাশ্মীরের অস্তিত্ব বরাবরই একটু ভিন্ন ধরনের বলে দাবি করেছেন তিনি। এখানকার মানুষকে আর পাঁচটা রাজ্যের মানুষের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না। কারণ এদের সমস্যা আলাদা, এদের চাহিদা আলাদা, এদের চিন্তাভাবনা আলাদা। কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল ঘোষণা করলেই এগুলি চলে যাবে না। এখনও এই পৃথক অস্তিত্ব ভীষণ ভাবে বেঁচে রয়েছে।
একই দেশে দুই রাজ্যের ভিন্ন শাসন ভারতেই কিন্তু প্রথম নয় বলে দাবি করেছেন করণ সিং। একাধিক দেশে এই ধরনের শাসন ব্যবস্থা রয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর একটি রাজ্যের নাম হলেও এখানে তিনটি প্রদেশ রয়েছে জম্মু, কাশ্মীর এবং লাদাখ। তাই শুধু মাত্র কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল ঘোষণা করে রাতারাতি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যাবে না। এমনই মনে করেন ভূস্বর্গের যুবরাজ।