প্রতিশোধ না শান্তি, লাদাখ ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর ডাকা সর্বদল বৈঠকে নেওয়া হবে কোন সিদ্ধান্ত?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকে আজ লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদল বৈঠক। ভার্চুয়াল এই বৈঠক হবে বিকেল ৫টায়, যোগ দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সনিয়া গাঁধী, উদ্ধব ঠাকরে, শরদ পওয়ার প্রমুখ। থাকবেন সীতারাম ইয়েচুরি, ডি রাজা, চন্দ্রবাবু নাইডু, জগনমোহন রেড্ডিরা।
জোর রাজনৈতিক তরজা
এদিকে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সংঘর্ষ প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়ে দিয়েছে, চিনের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের কারণে ঘটেছে গালওয়ান সংঘর্ষ। ভারত কোনও সমঝোতা ভাঙেনি, ভেঙেছে চিন। এদিকে দেশের অভ্যন্তরে এই বিষয়ে চলছে জোর রাজনৈতিক তরজা।
রাহুলের প্রশ্নবাণ
লাদাখের ঘটনায় বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রের কাছে জবাবদিহি চায়। পাশাপাশি বিরোধীদের বক্তব্য, লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে স্পষ্টিকরণ করুক কেন্দ্র। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তোলেন, কেন অস্ত্র ছাড়া ভারতীয় সেনাদের সেখানে পাঠানো হয়েছিল।
রাহুলকে পাল্টা জবাব জয়শঙ্করের
রাহুলের সেই প্রশ্নের জবাবেই মুখ খোলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এদিন তিনি জানিয়ে দেন যে ১৫ তারিখ রাতের সেই ঘটনার সময় সেনার কাছে অস্ত্র ছিল। তবে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি বজায় রাখার তাগিদেই গুলি চালানো হয়নি ভারতের তরফে। এমনটাই জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
বাণিজ্য যুদ্ধ
এদিকে লাদাখে ভারত-চিন সংঘর্ষের পরই চিনকে অর্থনৈতিক দিক থেকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে ভারত৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চার আধিকারিক বলেন, অ্যান্টি-ডাম্পিং অ্যাকশনের দিকে তাকিয়ে কমপক্ষে ১০০টি চিনা পণ্য৷ ৫জি বাজারের মতো বড় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে চিনা সংস্থাগুলির অংশগ্রহণ-সহ ভবিষ্যতে চিনের বিনিয়োগকেও নিষিদ্ধ করা হতে পারে৷
চিনা সংস্থার বরাত বাতিল
অর্থমন্ত্রক ও বাণিজ্যমন্ত্রক উভয়ই চিনা পণ্যের রমরমার উপর পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে৷ কারণ তা দেশীয় শিল্পগুলির ক্ষতি করছে৷ চিনের সংস্থার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করল ভারতীয় রেলের ডেডিকেটেড ফ্রেইট করিডর কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড। কেন্দ্রের তরফে বিএসএনএলকেও চিনা পণ্য ব্যবহার করে আপগ্রেডেশন বন্ধ করতে বলেছে কেন্দ্র।
গালওয়ান ও প্যাংগংয়ের গুরুত্ব
প্রসঙ্গত, ১৯৬২ সালে এই গালওয়ান সংলগ্ন এলাকাতেই দু'দেশের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল। চিন ও ভারতের মধ্যে যে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কনট্রোল আছে, অর্থাৎ, এলএসি, ঠিক সেখানে। সীমান্তের অন্য দিকে কাশ্মীরের সেই অংশটি যাকে আকসাই চিন বলা হয়। খুব দুর্গম জায়গা, সারা বছর প্রচণ্ড শীত, এখনকার আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটাই কঠিন। কাজেই দীর্ঘ দিন ধরে যুদ্ধ কারও পক্ষেই অসম্ভব। কাজেই গুরুত্বটা স্ট্র্যাটেজিক।
শান্তি একমাত্র উপায়
তবে মনে হয় না এখনই পরিস্থিতি পুরোপুরি যুদ্ধের দিকে বাঁক নেবে। ইতিমধ্যেই দু'দেশে সামরিক স্তরে আলোচনা শুরু হয়েছে কী ভাবে এই সংঘাত বন্ধ করা যায়। চিনও প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে তারা চায় না যে সীমান্তে সংঘর্ষ চলতে থাকুক। চিনা বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রীর ফোনে আলোচনা হয়েছে। এগুলো ইঙ্গিত যে আরও বড় মাপের সংঘাতের দিকে গড়ানোর সম্ভাবনা কম। তবে এটাও ঠিক যে চিন-ভারত সমস্যা সহজে মিটবে না। আপাতত ঝামেলা চলতেই থাকবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভাবে।
চাপে পড়ে মাথা নোয়াল বেজিং, চিনা হেফাজত থেকে মুক্ত দুই মেজর সহ ১০ ভারতীয় সেনা