পিসির অপমান মানে তাঁর অপমান, জোট ঘোষণার পরই বার্তা অখিলেশের
পিসির অপমান তাঁর অপমান। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিলেন অখিলেশ যাদব। শনিবার লখনউ-এ বিএসপি-র সঙ্গে সপা-র জোটের ঘোষণা হতেই হুঙ্কার ছাড়েন অখিলেশ।
পিসির অপমান তাঁর অপমান। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিলেন অখিলেশ যাদব। শনিবার লখনউ-এ বিএসপি-র সঙ্গে সপা-র জোটের ঘোষণা হতেই হুঙ্কার ছাড়েন অখিলেশ। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, 'মায়াবতীকে অপমান করা মানে আমাকে অপমান করা।' শুক্রবার বিএসপি ও সপা-র জোট নিয়ে কটাক্ষ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৯৯৬ সালের 'লখনউ গেস্ট হাউস কেলেঙ্কারি'-কে টেনে আনেন। জোট রাজনীতির ইতিহাসে 'লখনউ গেস্ট হাউস কেলেঙ্কারি' একটা কালো অধ্যায়। মোদীর কটাক্ষে যাতে জোটের উপর প্রভাব না পড়ে তাই এদিন দলের কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দেন অখিলেশ। কারণ 'লখনউ গেস্ট হাউস কেলেঙ্কারি'-তে মায়াবতী-কে নিগৃহীত হতে হয়েছিল সপার কর্মী ও সমর্থকদের হাতে। সেদিন বিজেপি মায়াবতীকে রক্ষা করেছিল।
লোকসভা নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসবে ততই এই ধরনের আক্রমণ বাড়বে। অপ্রিয় সত্য-কে হাতিয়ার করে উত্তরপ্রদেশে বিজেপি যে ভোট প্রচারে নামবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তাই দেরি না করেই আগেই বাক্যবাণে মোদীকে চ্য়ালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন অখিলেশ। আর সেই সঙ্গে নিজের দলের কর্মীদেরও জানিয়ে দিয়েছেন যে বিসএপি নেত্রী মায়াবতী-কে আঘাত করা মানে তাঁকে আঘাত করা। মায়াবতীও অবশ্য পিছিয়ে নেই , এদিন জোট ঘোষণার সময়েই সাংবাদিক সম্মেলনে পরিষ্কার জানিয়ে দেন, মানুষের জন্য তিনি লখনউ গেস্ট হাউস-এর পর্ব-কে ভুলেই সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে জোট করেছেন।
এদিনের জোট ঘোষণায় মায়াবতী ও অখিলেশ জানিয়ে দিয়েছেন তাঁদের দল ৮০টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৩৮ করে আসনে লড়াই করবে। বাকি চারটি আসনের মধ্যে ২টি আসন রায়বরেলি ও আমেথি কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে রেখে দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন দু'জনে। বাকি ২টি আসনে বসপা ও সপা জোটের সঙ্গে থাকা একটি আঞ্চলিক দলের জন্য ছেড়ে রাখা হয়েছে। অখিলেশ এদিন জানান, এই জোটের ভিত স্থাপন হয়ে গিয়েছিল রাজ্যসভার নির্বাচনের সময়। বিএসপি-র রাজ্যসভার প্রার্থীকে হারানোর জন্য বিজেপি-র ষড়যন্ত্র ফাঁস হতেই নাকি দুই নেতা-নেত্রী আলোচনা শুরু করেছিলেন। দু'জনেই নাকি ঠিক করেছিলন যে কোনও মূল্যে বিজেপি-র রথ আটকে দেওয়ার।
অখিলেশ সেই সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বেশকিছু পুরনো কথাও। যেমন তিনি এদিন জানান, বিএসপি-র সঙ্গে জোট তৈরি করতে হলে তিনি যে দু'ধাপ পিছোতেই রাজি তা বহুদিন থেকেই বলে আসছিলেন। বিএসপি ও সপা-র জোটের ফলে ২০১৮ সালে গোরখপুর লোকসভা আসনের উপনির্বাচনে হার হয় বিজেপি-র। এই আসনটি-তে পরপর পাঁচবার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় এই লোকসভা আসনটি ফাঁকা হয়েছিল। মায়াবতীর দাবি, সপার সঙ্গে বিএসপি-র এই জোটে ইতিমধ্যে কেঁপে গিয়েছে বিজেপি। জোট আটকাতে বিজেপি সিবিআই প্রয়োগ করছে বলেও এদিন অভিযোগ করেছেন মায়াবতী। সেইসঙ্গে অখিলেশের পক্ষ নিয়ে অভিযোগ করেছেন বেআইনি বালি খাদানের তদন্তের নামে সপার প্রধান-কে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর চেষ্টা চলছে। বিএসপি নেত্রী সাফ হুঙ্কার নরেন্দ্র মোদী এই জোটকে ভাঙার জন্য একের পর এক আঘাত করতেই পারেন, কিন্তু তাতে 'গাঁটবন্ধন'-কে বেলাইন করা যাবে না। মায়াবতী ও অখিলেশ জোট রক্ষায় যেভাবে একে অপরের পাশে দাঁড়়িয়েছেন তাতে বিজেপি সিঁদূরে মেঘ ধরলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।