আফস্পা ইস্যু ভোঁতা, মণিপুরে বিজেপির জয়ের হাতিয়ার উন্নয়নই
আফস্পা ইস্যু ভোঁতা, মণিপুরে বিজেপির জয়ের হাতিয়ার উন্নয়নই
কংগ্রেস শুধুমাত্র পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড এবং গোয়ার মতো বড় রাজ্যগুলিতেই তার দখল হারিয়ে ফেলেনি বরং উত্তর-পূর্ব রাজ্য মণিপুরেও ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে৷ যা একসময় 'দ্য গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি'র একটি দুর্গ ছিল। ২০০২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত টানা ১৫ বছর এখানে কংগ্রেস সরকারে ছিল। তারপর থেকে এটি টানা দ্বিতীয় পরাজয় কংগ্রেসের। মণিপুরে এবারের ভোটে কংগ্রেস মাত্র পাঁচটি আসন পেয়েছে৷ ২০১৭ সালেও মণিপুরে এককভাবে সবচেয়ে বেশি আসন জিতেছিল কংগ্রেস। ২০১৭ সালে মণিপুরে ৬০টি আসনের মধ্যে ২৮টি জিতেছিল কংগ্রেস। অন্যদিকে, এক্সিট পোলগুলির পূর্বাভাস সত্যি করেই ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি ৩২টি আসন নিয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে মণিপুরে।
মণিপুরের ইতিহাসে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল। শেষবার ২০১২ সালে যখন কংগ্রেস ৪২টি আসন পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠায় সরকার গড়েছিল। কিন্তু মাত্র ১০ বছরে কোন জাদুবলে মণিপুরে বিজেপির এই উত্থান। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে এই জাদুর নাম উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা!
২০১৭ সালে কংগ্রেস একক আসন লাভ করলেও, বিজেপি সেবার ২১টি আসন জিতেছিল। এবং মণিপুরে প্রথমবারের মতো ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, নাগা পিপলস ফ্রন্ট-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়েছিল। যাইহোক, এই নির্বাচনটি সব থেকে আলাদা ছিল কারণ এনপিপি এবং এনপিএফ তাদের নিজেদের লড়াই সরিয়ে কিং মেকারের ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছিল সেবার।
মণিপুর সহ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির কাছে আফস্পা একটি বড় ইস্যু। এই রাজ্যগুলিতে আফস্পা তুলে নেপয়ার দাবিতে সরকার থেকে বিরোধিতার প্রত্যেকেই সুর চড়ায়৷ কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকারের উত্তর-পূর্ব নিয়ে নতুন চিন্তাভাবনা রেল যোগাযোগ থেকে স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ৷ এবং রাজ্যে প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা ফেরানোর কাজ মানুষকে বিজেপির প্রতি আকৃষ্ট করেছে বলে অনেকেই মানছেন৷
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বড় অংশের মতে ওকরাম ইবোবি সিংয়ের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস আমলে একটা সময় মণিপুরের লাগাতার বন্ধ, অবরোধ এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বৃদ্ধি পেয়েছিল। সেখান থেকে সরে বিজেপি শাসিত মণিপুরে শেষ পচবছরেও যথেষ্ট শান্তিপূর্ণ বলেই মানছেন বড় অংশের রাজ্যবাসী৷ ২০১৭ থেকে ২২ এর বিজেপি রাজে মণিপুরে সহিংস বিক্ষোভ, পাথর ছোড়া, টিয়ারগ্যাস বা কারফিউর মতো ঘটনাগুলি তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কমেছে। স্বাভাবিকভাবেই মানুষ বিজেপির উপর আস্থা রেখেছে আরও আগামী পাঁচ বছরের জন্য।