বারো ক্লাসের বোর্ড এক্সাম দেওয়াই হল না, পরীক্ষা হলেই লুটিয়ে পড়ল পরীক্ষার্থী
পরীক্ষাটা শুরু হতে আর মাত্র মিনিট কয়েকের বাকি ছিল। বারো ক্লাসের বোর্ড এক্সাম। বলতে গেলে জীবনের সোপান গড়ার সিঁড়িতে ওঠার চূড়ান্ত ধাপ।
পরীক্ষাটা শুরু হতে আর মাত্র মিনিট কয়েকের বাকি ছিল। বারো ক্লাসের বোর্ড এক্সাম। বলতে গেলে জীবনের সোপান গড়ার সিঁড়িতে ওঠার চূড়ান্ত ধাপ। কারণ এই বারো ক্লাসের পরীক্ষার উপর নির্ভর করে অধিকাংশের ভবিষ্যত জীবন। অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী এই বারো ক্লাসের বোর্ড এক্সাম থেকেই ঠিক করে ফেলেন ভবিষ্য়তের দিশাটা। কে কোন পথে পড়াশোনা ও কেরিয়ারটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে তা প্রায় চূড়ান্তই করে দেয় এই পরীক্ষা। হায়দরাবাদের একটি ছাত্রও তেমনি ভেবেছিল। পরীক্ষা হলে অ্য়ান্সারশিট পাওয়ার অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু, সেই অ্যান্সারশিট আরও পাওয়া হল না তার।
পরীক্ষা হলে ঢোকার মুহূর্তেই বুকে ব্যাথ্যা অনুভব করতে শুরু করেছিল ছাত্রটি। অভিভাবককে সেই কষ্টের কথা বলেওছিল। অভিভাবকরা সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে উদ্যত হয়। কিন্তু, সমস্ত বাধা উড়়িয়ে দিয়েই পরীক্ষা হলে ঢুকে যায় সে। বলে তার এখন তেমন কিছু শরীর খারাপ হচ্ছে না। তার যুক্তি ছিল পরীক্ষা শুরু হতে আর মাত্র কয়েক মিনিটের বাকি। সুতরাং এখন হাসপাতালে যাওয়াও যাবে না। এই বলে ছাত্রটি পরীক্ষা হলে ঢুকে গিয়েছিল।
বেঞ্চে বসতে না বসতেই ব্যাথায় মুখ-টা কুঁকড়ে ওঠে ছাত্রটির। অন্যান্য ছাত্ররাও সঙ্গে সঙ্গে ছুটেও যায়। কিন্ত তার আগেই বেঞ্চে ঢলে পড়ে ছাত্রটি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি ছাত্রটিকে। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন পথেই তার মৃত্যু হয়েছে। আপাতত ছাত্রটির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। অস্বাভাবিক মৃত্য়ুর কেসও দায়ের করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে অনুমান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই ছাত্রটির মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু হৃদরোগের কারণ কী তা ময়না তদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট না এলে তা বলা যাবে না বলেই জানিয়েছে পুলিশ। স্কুল কলেজ বা বোর্ড এক্সামের সেন্টারে কেন প্রাথমিক চিকিৎসার বন্দোবস্ত থাকবে না তা নিয়ে বহু দিন থেকেই অনেকেই অনেক দাবি করে আসছেন। কিন্তু, মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির উদাসিনতা এবং সরকারে অবহেলায় ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মেডিক্যাল বন্দোবস্ত কিছুই থাকে না। শুধুমাত্র কাটা-ছেঁড়ার কিছু ব্যবস্থা ছাড়া দেশজুড়ে খুব কম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই আছে যেখানে গুরুতর কিছু শারীরিক সমস্যার সমাধান করা যায়। এক্সামিনেশন সেন্টারে চিকিৎসার একটা ঠিকমতো এবং অ্যাকাউন্টেবল বন্দোবস্ত থাকলে বারো ক্লাসের পরীক্ষার্থীটিকে বেঘোরে প্রাণ দিতে হত না বলেই মনে করা হচ্ছে।