স্বামী বিবেকানন্দের ৫ টি বাণী যা আজও অনুপ্রাণিত করে সমাজকে
সামনেই আসছে জাতীয় যুব দিবস। প্রতি বছরের মতো এই বছরেও কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পালন করতে চলেছে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন।
সামনেই আসছে জাতীয় যুব দিবস। প্রতি বছরের মতো এই বছরেও কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পালন করতে চলেছে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন। দেশ যত এগিয়ে যাচ্ছে বিবেকানন্দের মতো মহীরুহের জীবনদর্শন আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে যুব সমাজের কাছে। গোটা সমাজ ব্যবস্থা থেকে মানুষের ব্যক্তিগত জীবনদর্শন সমস্ত ক্ষেত্রেই বিবেকানন্দের দেখানো পথ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। একনজরে দেখে নেওয়া যাক , স্বামী বিবেকানন্দের দেখানো পথ কোন কোন বাণীকে তুলে ধরে।
জীবনে কোন কোন আদর্শ মানতে হবে?
স্বামী বিবেকানন্দের মতে, জীবনে তিনটি আদর্শ সবসময় মাথায় রাখা উচিত, যাঁরা জীবনে সাহায্য করেছেন আপনাকে তাঁদের ভুলে না যাওয়া । যাঁরা আপনাকে ভালোবাসেন, তাঁদের কোনও দিনও ঘৃণা না করা। আর যাঁরা আপনাকে বিশ্বাস করেন, তাঁদের কোনও দিনই না ঠকানো।
পরের উপকার নিয়ে বক্তব্য
স্বামী বিবেকানন্দ বলেন পরের উপকারের মধ্য দিয়েই জীবনের সর্ব সুখ পাওয়া যায়। জীবনের সমস্ত তাৎপর্যই নিহিত রয়েছে পরের উপকারের মধ্য দিয়ে। তিনি বলেন,'পরোপকারই জীবন, পরহিতচেষ্ঠার অভাবই মৃত্যু। শতকরা নব্বই জন নরপশুই মৃত, প্রেততুল্য; কারণ হে যুবকবৃন্দ, যাহার হৃদয়ে প্রেম নাই, সে মৃত ছাড়া আর কি? হে যুবকবৃন্দ, দরিদ্র অজ্ঞ ও নিপীড়িত জনগণের ব্যথা তোমরা প্রাণে প্রাণে অনুভব কর, সেই অনুভবের বেদনায় তোমাদের হৃদয়ে রুদ্ধ হউক, মষ্তিষ্ক ঘুরিতে থাকুক, তোমাদের পাগল হইয়া যাইবার উপক্রম হউক। তখন গিয়া ভগবানের পাদপদ্মে তোমাদের অন্তরের বেদনা জানাও। তবেই তাহার নিকট হইতে শক্তিও সাহায্য আসিবে-অদম্য উৎসাহ, অনন্ত শক্তি আসিবে। '
আত্মবিশ্বাসী হওয়ার পথ..
স্বামী বিবেকানন্দ জানা দিয়ে গিয়েছে, আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠার পথও। তিনি বলেন, 'মানুষকে সর্বদা তাহার দুর্বলতার বিষয় ভাবিতে বলা তাহার দুর্বলতার প্রতীকার নয়- তাহার শক্তির কথা স্মরণ করাইয়া দেওয়াই প্রতিকারের উপায়। তাহার মধ্যে যে শক্তি পূর্ব হইতে বিরাজিত ,তাহার বিষয় স্মরণ করাইয়া দাও। '
চরিত্র গঠনের দিক দিয়ে কোন পথে অবলম্বন করতে হবে?
স্বামী বিবেকানন্দের নজরে চরিত্র গঠন একটি বড় দিক হয়ে উঠেছে বারবার। তিনি বলেছেন , 'চরিত্র গঠনের জন্য ধীর ও অবিচলিত যত্ন, এবং সত্যোপব্ধির জন্য তীব্র প্রচেষ্টাই কেবল মানব জাতির ভবিষৎ জীবনের উপর প্রভাব বিস্তার করিতে পারে।'
সুখের প্রকৃত রাস্তা কী ?
সুখ খোঁজা এই দুনিয়ায় সবচেয়ে দুঃসহ কাজ! এমন কথা অবেকেই মনে করে থাকেন। তবে , স্বামী বিবেকানন্দ অনেকটাই সহজ করে দিয়েছেন এমন দুঃসহ কাজকে। তিনি বলেছেন, ' মানুষ মূর্খের মত মনে করে, স্বার্থপর উপায়ে সে নিজেকে সুখী করিতে পারে। বহুকাল চেষ্টার পর অবশেষে বুঝিতে পারে-প্রকৃত সুখ স্বার্থরতার নাশে এবং সে নিজে ব্যতীত অপর কেহই তাহাকে সুখী করিতে পারে না। '
কুসংস্কার ও স্বামীজির অবস্থান
কুসংস্কারাচ্ছন্ন চিন্তা কখনও প্রগতির প্রতীক হতে পারেনা। এমনই ভাবনা নিয়ে স্বামীজির বাণী,"দর্শনবর্জিত ধর্ম কুসংস্কারে গিয়ে দাঁড়ায়, আবার ধর্মবর্জিত দর্শন শুধু নাস্তিকতায় পরিণত হয়। আমাদের নিম্নশ্রেণীর জন্য কর্তব্য এই, কেবল তাহাদিগকে শিক্ষা দেওয়া এবং তাহাদের বিনষ্টপ্রায় ব্যক্তিত্ববোধ জাগাইয়া তোলা।"
জীবনের লক্ষ্য কী হতে পারে?
জীবনে যেকোনও একটি লক্ষ্য়ে স্থির থাকলেই একমাত্র উন্নয়নের রাস্তা খোলা থাকে। স্বামীজির বার্তা, সেই লক্ষ্যকেই ধ্যান জ্ঞান করে পেলতে হবে। যে লক্ষ্য়ে মস্তিষ্ক, শরীরের সবক'টা অংশ, পেশি , সমস্ত কিছুকে কাজে লাগিয়ে দিতে হবে। আর তাতেই মিলবে উপযুক্ত স্বাস্তি। আসবে সাফল্য।