আইলিগ: টুর্নামেন্টের ইতিহাসেjর সেরা পাঁচ ফুটবলার
আই-লিগের ইতিহাসের সেরা ৫ খেলোয়াড়।
আইএসএল-এর আগমনে হঠাতই যেন জৌলুস হারিয়েছিল আই লিগ। কিন্তু এই বছর আই লিগ নিয়ে ফের দেশ জুড়ে উন্মাদনা দেখা যাচ্ছে। এই বছর লিগে খেলতে এসেছেন চলতি বছরেই ফিফা বিশ্বকাপে খেলা ডিফেন্ডার জনি অ্যাকোস্টা। আছেন মেক্সিকোর হয়ে যুব বিশ্বকাপজয়ী স্ট্রাইকার এনরিকে এস্কেদা, স্প্যানিশ দ্বিতীয় ডিভিশনে খেলা দিপান্ডা ডিকা, আর অবশ্যই হাইতির জাতীয় দলের খেলোয়াড় সনি নর্ডেরা।
তবে ২০০৭ সালে জাতীয় লিগ থেকে আই লিগে উত্তরণের পর থেকে কিন্তু অনেক ভাল ভাল ফুটবারই টুর্নামেন্টে খেলে গিয়েছেন। তাদের মধ্যে থেকেই পাঁচজনকে বেছে নিল মাইখেল বেঙ্গলি।
ওডাফা ওকোলি
ভারতীয় ফুটবলে খেলা অন্যতম বিপজ্জনক স্ট্রাইকার এডাফা ওকোলি। ঙারতীয় ফুটবলে তাঁর আগমন ঘটেছিল ২০০৩ সালে, মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে। কিন্তু তিনি প্রচারে এসেছিলেন ২০০৭-৮ মরুমের আইলিগে চার্চিল ব্রাদার্সের জার্সি গায়ে। সেই মরসুমে তিনি ১৬ ম্যাচে ২২ গোল করে শুধু সর্বোচ্চ গোলদাতাই হননি, চার্চিলকে আই লিগ চ্য়াম্পিয়নও করেন। পরে তিনি মোহনবাগান ও স্পোর্টিং ক্লাব দ্য গোয়ার হয়েও খেলেন। কোথাওই তাঁর গোল করার ক্ষমতায় মরচে পড়েনি। ভারতীয় ফুটবলে ২০০- বেশি গোল আছে তাঁর। ২০১০-এ মোহনবাগানে তাঁকে সই করিয়েছিল ২ কোটি টাকায়। সেই সময়ে ভারতীয় ফুটবে সেটাই ছিল সর্বোচ্চ দর।
সুনীল ছেত্রী
ভারতীয় ফুটবলের গোল্ডেন বয় বলা হয় তাঁকে। বে জাতীয় দলের হয়ে প্রথম থেকেই একের পর এক গোল করলেও ২০১২ সালের আগে আই-লিগে তেমন সাফল্য পাননি সুনীল। সেি মরসুমে দতিি গোয়ার চার্চিল ব্রাদার্সে যোগ দিয়েছিলেন। তবে দতাঁর প্রতিভার পর্তি প্রকৃত সুবিচার করা তিনি শুরু করেন ২০১৪ সালে। আই-লিগে প্রথম খেলতে আসা বেঙ্গালুরু এফসি তাঁকে দলে নিয়েছিল। আই লিগে ৩ বছর খেলেছে দলটি। ফল - চ্যাম্পিয়ন, রানার আপ এবং চ্যাম্পিয়ন। এর সঙ্গে জুড়তে হবে এএফসি কাপে তাদের স্বপ্নের দৌড়। আর এই সবকিছুর মধ্যমনি ছিলেন তাদের ১১ নম্বর জার্সিধারি। তিনি গোল করেছেন, করিয়েছেন, তবে তারচেয়েও বড় কথা সফলভাবে নেতত্ব গিয়েছেন বেঙ্গালুরুর ক্লাবটিকে। বর্তমানে আইএসএল-এও সফলভাবে খেলে যাচ্ছেন তিনি।
হোসে রামিরেজ ব্যারেটো
আইলিগে অনেক বড় বড় বিদেশী খেলে গিয়েছেন। কিন্তু প্রবাবের দিক থেকে দেখলে ব্যারেটোর ধারে কাছে কেউ নেই। সবুজ মেরুন তোতা আই-লিগকে নানাভাবে সম্বৃদ্ধ করেছেন। বা যেতে পারে তিনি না খেললে হয়তো আজও আইলিগ অনেক পিছনেই পড়ে থাকত। মোহন বাগানের হয়ে ২৩৮টি গোল করেছিলেন তিনি। কিন্তু শুধু গোল সংখ্যাই নয়, ভারতের মাঠে ফুটবলে তাঁর পা ধরে এসেছিল ক্লাস, এসেছিল দর্শক। কলকাতা ডার্বিতে ১৮ গোল করে তিনিই সর্বোচ্চ গোলদাতা। মোহমবাানকে হয়তো কখনই আইলিগ জেতাতে পারেননি তিনি। কিন্তু গ্যালারিতে বসে যাঁরা তাঁর খেলা দেখেছেন, তাদের কাছে তাঁকে খেলতে দেখাটাই আই-লিগ না জেতার হতাশা ভোলানোর জন্য যথেষ্ট।
র্যান্টি মার্টিন্স
২০১১-১২ মরসুম ছিল র্যান্টি মার্টিন্স-এর ভারতীয় ফুটবলে সেরা বছর। সেই মরসুমে তিনি আই লিগে ৩২টি গোল করে ডেম্পো স্পোর্টিং ক্লাবকে তৃতীয় বারের জন্য আইলিগ চ্যাম্পিয়ন করেন। ব্যারেটোর মতো স্কিলফুল হয়তো তিনি নন, কিন্তু ওডাফার মতোই অসম্ভব ভাল গোল চিনতেন তিনি। ডেম্পোর পর তিনি কলকাতার ইউনাইটেড স্পোর্টস ক্লাব ও ইস্টবেঙ্গলেও খেলেছেন। কখনই তাঁর গোলখিদে কমেনি। তিনি খারাপ খেলুন, ভাল খেলুন - কোনও ভাবে গোল ঠিক পেয়ে যেতেন। ২৪৪ ম্যাচে তিনি ২১৪ টি গোল করেছেন ভারতীয় ফুটবলে। ২০১১-১২-তে তিনি আইলিগের সেরা ফুটবলার নি্বাচিত হয়েছিলেন। সেরা ফরোয়ার্ড হয়েচেন বেশ কয়েকবার।
রোবের্তো মেন্দেস সিলভা (বেতো)
রোবের্তো মেন্দেস সিলভা ভারতীয় ফুটবল সমর্থকদের কাছে বেশি পরিচিত বেতো নামেই। ডেম্পোয় র্যান্টি মার্টিন্সের আভাবনীয় সাফল্যের পিছনে ছিল এই ব্রাজিলিয় প্লেমেকারের পা। ২০০৬ সালে তিনি ক্লাবে এসেছিলেন। ২০০৭-০৮ মরসুমেই তিনি ডেম্পোকে আইলিগ চ্যাম্পিয়ন করেন। টেকনিকালি ভারতীয় ফুটবলের থেকে তিনি অনেক এগিয়ে ছিলেন। মাঠে তাঁর উপস্থিতিই বিপক্ষের মনে ভয় ধরানোর জন্য যথেষ্ট ছিল। ডেম্পোর দুইবারের আইলিগ জয়ে তাঁর অন্যতম ভূমিকা ছিল। পের দিকে চোট আঘাতের সমস্যায় ভুগলেও আই-লিগের ইতিহাসে তাঁর নাম আলাগদা করে উল্লেখ করতেই হবে।
নিশ্চিতভাবেই এই তালিকায় আরও অনেকের নাম থাকতে পারত এই তালিকায়। তবে তবে এই বাছাইয়ের সময় এখনও আইলিগে খেলছেন এরকম ফুটবলারদের বাদ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে রাখা হয়নি জাতীয় লিগে খেলা ফুটবলারদেরও। বাছাইয়ের সময় আইলিগে তাঁদের প্রভাবকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এরপরেও এই তালিকা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে।