বিশ্বকাপের বিপুল খরচ সামলেও কীভাবে আর্থিকভাবে স্ফীত ফিফা? সবচেয়ে বেশি আয় কোথা থেকে?
কাতারে হতে চলেছে ২২তম বিশ্বকাপ। এবার পুরস্কারমূল্য বাড়ানো হয়েছে ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপের চেয়ে। ৩২টি দেশের পুরস্কারমূল্যের জন্য ফিফা রেখেছে ৪৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিজয়ী দল পাবে ৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ ছাড়াও রয়েছে নানাবিধ খরচ। প্রশ্ন উঠতে পারে, বিশ্বকাপ আয়োজন করে এরপরেও কীভাবে আর্থিকভাবে স্ফীত হয় ফিফা?
বিশ্বকাপ আয়োজনে খরচ
বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য পুরস্কারমূল্যের পাশাপাশি যে খরচগুলি ফিফাকে করতেই হয় সেগুলি হলো- আয়োজক দেশের বিশ্বকাপ আয়োজনের কমিটিকে অর্থ প্রদান, বিভিন্ন দলের ফুটবলার ও সাপোর্ট স্টাফদের যাতায়াত ও থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত, বিশ্বকাপের পর আয়োজক দেশে ফুটবলের বিকাশে পরিকাঠামোগত সহযোগিতা প্রদান ইত্যাদি। একটি রিপোর্টে প্রকাশ, ফিফা ২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ৬.৪ বিলিয়ন রাজস্ব আদায় করেছে। ২০২১ সালে কোনও বিশ্বকাপ ছিল না। গত বছর ফিফার ঘরে এসেছে ৭৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
টিভি রাইটস থেকে সর্বাধিক আয়
ফিফার আয়ের সবচেয়ে বড় অংশটি হলো বিশ্বকাপ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন টুর্নামেন্টের জন্য টিভি সম্প্রচার স্বত্ত্ব বিক্রি। চার বছরের সর্বশেষ চক্রে ফিফা যে ৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে, তার মধ্যে টিভি স্বত্ত্ব থেকেই এসেছিল ৪.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ফিফার বিভিন্ন ইভেন্টে বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে গ্লোবাল ব্র্যান্ডগুলি। ফিফার ডেভেলপমেন্ট ও সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি ফান্ডে পার্টনার হয় বড় ব্র্যান্ডগুলি। ফিফার নন-প্রফিট ক্ষেত্রে লগ্নি করে থাকে সংস্থাগুলি। আন্তর্জাতিক স্তর থেকে তৃণমূলস্তর অবধি ফুটবলের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফিফার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করে থাকে বিভিন্ন সংস্থা। পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি মানুষ দেখেন ফুটবল বিশ্বকাপে। সেখানেও প্রচুর সংস্থা বিজ্ঞাপন দেয়। পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক মানুষ কাতার বিশ্বকাপ দেখবেন বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে বিজ্ঞাপনের দরও বেশ চড়া।
মার্কেটিং রাইটস
২০১৮ সালের বিশ্বকাপের আগের চক্রে যেখানে মার্কেটিং রাইটস ডিল ফিফার ঘরে এনেছিল ১.৬৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, সেটাই শুধু গত বছরেই পৌঁছে গিয়েছিল ১৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে। গেট রেভিনিউ থেকেও ফিফার আয় ভালোই হয়। টিকিট বিক্রি করা হয় ফিফার অধীনস্থ সংস্থার মাধ্যমে। ২০১৫ থেকে ২০১৮ অবধি টিকিট বিক্রি বাবদ ফিফার ঘরে এসেছিল ৭১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে আরব কাপ দেখেছিলেন ৬ লক্ষ দর্শক। সেখান থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কাতার বিশ্বকাপের জন্য ৩০ লক্ষ টিকিট বিক্রি হয়েছে। এর দাম ছিল ১০০ ডলার থেকে ১১০০ ডলার অবধি। ফলে বোঝাই যাচ্ছে কাতার বিশ্বকাপের টিকিট বিক্রি থেকেও রেকর্ড লাভ হবে ফিফার।
ব্র্যান্ড লাইসেন্সিং
ফিফার আয়ের আরেকটি উৎস হলো ব্র্যান্ড লাইসেন্সিং। ইলেকট্রনিক আর্টস সিরিজ ফিফা ফুটবল গেমস দারুণ জনপ্রিয়। ইএ-র সঙ্গে ফিফার ২০ বছরের পার্টনারশিপ রয়েছে। সেখান থেকে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের রাস্তা খোলা। ফিফার নাম ব্যবহারের জন্য প্রতি বছর ওই গেমস প্রস্তুতকারক সংস্থা বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থাকে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার করে দিয়ে থাকে। মার্চেন্ডাইজ, রিটেল ও গেমিং থেকে ব্র্যান্ড লাইসেন্সিং থেকে ফিফা গত বঠর ১৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আদায় করেছে। ফিফার একাধিক আধিকারিক ২০১৫ সালে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হওয়ার জেরে ক্ষতিপূরণ বাবদ ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের থেকে ফিফা ২০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পেয়েছে।
কাতার বিশ্বকাপের আগে ধাক্কা খেল ফ্রান্স! অনুশীলনে চোট পেয়ে ছিটকে গেলেন তারকা স্ট্রাইকার, দেখুন ভিডিও