ভোটের লোভে হাত গুটিয়ে থাকল খট্টর সরকার, বিক্ষোভে জ্বলল হরিয়ানা
পঞ্চকুলায় হিংসার পরে প্রায় সকলেই হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরকে দুষছেন। সরকারি অপদার্থতায় এতজন মানুষ প্রাণ হারালেন।
হরিয়ানায় গুরমিত রাম রহিমের ডেরা সাচার রমরমা দেখলে তাজ্জব বনে যেতে হয়। ধর্মের নামে ঈশ্বরের নামে রমরমিয়ে চলা এই সাম্রাজ্যের বাইরে নয় রাজনৈতিক দলগুলিও। বিজেপি- কংগ্রেস থেকে শুরু করে প্রত্যেকে এমন ধর্মগুরুদের তোয়াজ করে চলে। বলা ভালো নতমস্তক হয়ে থাকে। তার কারণ ভক্তি নয়, ভোট ব্যাঙ্ক।
রাম রহিমের ভক্তসংখ্যা লাখো লাখো। কেমন অনুগত তারা তা শুক্রবার পাঁচকুলা দেখে নিয়েছে। গুরুর সাজা ঘোষণার পরে চারিদিক জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খাড় করে দিয়ে চলে গিয়েছে। রায় পরবর্তী হিংসায় বিক্ষোভ ও হিংসায় অন্তত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অন্তত ২৫০ জনের বেশি।
পঞ্চকুলায় হিংসার পরে প্রায় সকলেই হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরকে দুষছেন। সরকারি অপদার্থতায় এতজন মানুষ প্রাণ হারালেন, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। সকাল থেকেই পঞ্চকুলায় এত সংখ্যক মানুষের জমায়েতের পর কোনও প্রস্তুতি নেয়নি সরকার। চারদিকে আগুন জ্বলছে। অথচ সরকার শুধু নীরব দর্শক হয়ে থেকেছে।
প্রশ্ন উঠছে, ১৪৪ ধারা জারি থাকার পরও কেন ২০০টি গাড়ির কনভয় নিয়ে হরিয়ানার সিরসা থেকে পঞ্চকুলার আদালত পর্যন্ত আসতে দেওয়া হল রাম রহিমকে? ধর্ষণে অভিযুক্ত ধর্মগুরু কীভাবে এতটা সাহস দেখাতে পারে তা নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করল না, রাস্তাও প্রতিরোধ করল না।
এদিকে এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। কেন্দ্র পর্যাপ্ত আধাসেনা পাঠিয়েছিল। সঙ্গে রাজ্য পুলিশ ছিলই। আদালতের কাছাকাছি আসার আগেই যদি ডেরা সাচা সমর্থকদের আটকে দিত পুলিশ তাহলে এত মানুষ মরত না, ক্ষয়ক্ষতিও হতো না। তবে তা করা হয়নি।
শুধুমাত্র ভোটব্যাঙ্কের কথা ভেবে এমনটা করেনি মনোহর লাল খট্টরের সরকার। রাম রহিমের ভক্তদের ভোট হারাতে চায়নি সরকার। তাই প্রথমদিকে অনেকটা নিষ্ক্রিয় থেকেছে। এর আগে লোকসভা ভোটে রাম রহিমের সমর্থন পেয়েছে বিজেপি। আর সেইজন্যই খট্টর সরকার চোখ বুজে থেকেছে বলে অভিযোগ। যদিও খট্টরের অপদার্থতা ঢাকতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ড্যামেজ কন্ট্রোলে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরে পরিস্থিতি কোনদিকে গড়ায় সেটাই দেখার।