(ছবি) ভারতের সেরা ৯ 'ভণ্ড তপস্বী' ও তাঁদের মহান কীর্তি!
ধর্মে এমনকী ধর্মগুরুতে বিশ্বাস করাও মোটেই অন্যায় নয়। তবে ভুল হল তাদের প্রতি অন্ধবিশ্বাস রাখা। আর তারই সুযোগ নিয়ে জন্ম নেয় কিছু ভণ্ড গুরুদেব।
ভারতে এমন ভণ্ড গুরুদের কোনও অভাব নেই। সম্প্রতি বিতর্কের জেরে খবরেরে শিরোনামে রয়েছেন রাধে মা। তবে রাধা মাই তো আর প্রথম নন এর আগেও বহু ধর্মগুরুদের নাম নয় যৌন শোষন, নয় আর্থিক অনিয়মে জড়িয়েছে।
আসুন একঝলকে দেখে নেওয়া যান ভারতের সেই সব ভণ্ড ধর্মগুরুদের যারা বিভিন্ন অভিযোগে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন।
আশারাম বাপু
১,যোধপুরে নিজের আশ্রমেই ১৬ বছরের একটি মেয়েকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠে আশারামের বিরুদ্ধে। নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে ওই মেয়েটিকে নিজের কন্যাসম বলেও ব্যাখ্যা করেন স্বঘোষিত এই গুরুদেব।
২.নির্ভয়া গণধর্ষণ কাণ্ডে নির্ভয়াকেই এই ভয়াবহ ঘটনার জন্য দায়ী করেছিলেন আশারাম বাপু। তিনি বলেন, নির্ভয়া তাদের দাদা সম্বোধন করে থামার জন্য ভিক্ষা চাইতে পারত।
৩. ৭০০ একর জমি হজম করে নেওয়ার মতো গুরুতর জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছিল আশারামবাপু ও তার ছেলের বিরুদ্ধে।
৪. ২০০৮ সালে সবরমতী নদীর ধারে আশারামের আশ্রমের কাছ থেকে ২টি ছেলের পচাগলা দেহ উদ্ধার করা হ। এই ঘটনায় আশারাম ও তার ছেলেকে জেরা করা হয়।
স্বামী নিত্যানন্দ
১. একটি স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলে প্রকাশিত একটি ফুটেজে দেখা য়ায় এক অভিনেত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় বিছানায় শুয়ে রয়েছেন স্বামী নিত্যানন্দ। যদিও নিত্যানন্দ অভিযোগ করেন, ওই ছবিটি ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁর ভবামূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্যই করা হয়েছে। অভিনেত্রী রঞ্জিতার সঙ্গে ওই ছবিটি তার নয় বলেও দাবি করেন তিনি।
২. ভারতে জন্ম হওয়া আমেরিকার এক নাগরিক আরতি রাওকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে নিত্যানন্দের বিরুদ্ধে। আরতি টেলিভিশন চ্যানেলে অভিযোগ তোলেন বেশ কয়েক বছর ধরে স্বামী নিত্যানন্দ তাকে ধর্ষণ করছে।
বাবা রামদেব
১.রামদেবের ট্রাস্টের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি এবং আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এছাড়াও জোর করে জমি নেওয়া, এবং বিদ্যুৎ চুরিরও অভিযোগ উঠেছিল।
২.বাম নেত্রী বৃন্দা কারাত অভিযোগ তুলেছিলেন, রামদেবের দিব্য যোগ মন্দির ট্রাস্টের অধিকৃত দিব্যা ফার্মাসি মানুষ ও প্রাণার হাড় তাদের ওযুধে মেশায়।
৩. প্রাণায়মের নিয়মিত অভ্যাস তিনিই প্রচলন করেছেন বলে দাবি রামদেবের। এমনকী প্রাণয়ামের মাধ্যে ৬-৯ মাসের মধ্যে ক্যানসার নিরাময় হয়ে যায় বলেও দাবি করেছিলেন তিনি।
৪.যোগব্যায়াম এইডস দুর করতে পারে বলেও দাবি করেছিলেন রামদেব।
৫. স্কুলে পড়ুয়াদের সেক্স এডুকেশন না দিয়ে যোগাভ্যাস নিয়ে পড়ানো উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
৬. সমকামিতাও একটি রোগ বলে ব্যাখ্যা করেছিলেন রামদেব, যা যোগ ব্যায়ামের মাধ্যমেই সারানো সম্ভব বলে বিশ্বাস তার।
চন্দ্রস্বামী
১.একাধিক আর্থিক অনিয়মে নাম জড়িয়েছে ভারতের জনপ্রিয় এই গুরুদেবের। তাঁর বিরুদ্ধে ১৩ টি বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ দায়ের আছে।
২. ১৯৯৬ সালে এক প্রবাসী শিল্পপতিকে ছকিয়ে ১ লক্ষ ডলার হাতানোরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
৩. রাজীব গান্ধীর হত্যা কাণ্ডে তার যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। এখনও তার তদন্ত চলছে।
জয়েন্দ্র সরস্বতী
১. কাঞ্চিপুরমের বরদরজাপেরুমল মন্দিরের ম্যানেজের শঙ্কররামানকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে জয়েন্দ্র সরস্বতী ও তার শিষ্য বিজেন্দ্রর বিরুদ্ধে।
২. কাঞ্চীপুরমের কামাক্ষী মন্দিরের ৮৩ কেজি সোনার হিসাবে গড়মিল হওয়ায় জয়েন্দ্র সরস্বতীর কাছে সে বিষয়ে জানতে চাওয়ায় গুণ্ডা পাঠিয়ে তাকে হত্যা করার চেষ্টা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছিলেন চেন্নাইয়ের এক অডিটর রাধাকৃষ্ণন।
গুরমিত রাম রহিম
১. এক ভক্ত অভিযোগ তুলেছিলেন তাণর স্ত্রীকে যৌন শোষন করেছিলেন দেরা স্বচ্ছ সওদা প্রধান গুরমিত রাম রহিম।
২. তহেলকা তদন্তে সানমে আসে দেরা স্বচ্ছ সওদা হল অধার্মিকতার আতুর ঘর।গুরুমিত সিংয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ ওঠে।
সত্য সাই বাবা
১, হাওয়া থেকে বিভূতি, সোনার চেন বের করে ভক্তদের দিতেন। নিজেকে সিরদি সাই বাবার পরজন্ম বলে ব্যাখ্যা করতেন।
২. সত্য সাই বাবার বিরুদ্ধে মহিলা ভক্তদের যৌন শোষণ ও যৌন অত্যাচারের অভিযোগ রয়েছে।
৩. সত্য সাই বাবার ট্রাস্টের নামে ৪০,০০০ কোটি টাকা ছিল। ট্রাস্টি থেকে পদত্যাগের পরেও বাবার ব্যক্তিগত ঘর থেকে ১১.৫ কোটি টাকা, ৯৮ কেজি সোনা এবং ৩০৭ কিলোগ্রাম রূপা উদ্ধার হয়েছিল।
রাধে মা
ধার্মিক বিশ্বাসকে নিজের পেশা বানিয়ে নেন ৫০ বছরের রাধে মা। রাধে মা-র বিরুদ্ধে একটি পরিবারকে পুত্রবধূকে অতিরিক্ত যৌতুক আনার জন্য হেনস্থা করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও ভক্তদের সঙ্গে অশ্লীল নাচ, চুমু খাওয়া, ছোট পোশাক পড়ে কুরুচিকর ভঙ্গিতে ছবি তোলা, ভক্তদের আই লাভ ইউ বলার অভিযোগ রয়েছে।
ইচ্ছাধারী সন্ত
১৯৮৮ সালে একটি পাঁচতারা হোটেলের নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। নিউদিল্লিতে মাসাজ পার্লারেও কাজ করেছেন। ১৯৯৭ সালে দেবব্যবসার চক্র চালানোর দায়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। নিজের পেশা বদলে তিনি সাধুদের মতো পোশাকে, লম্বা দাঁড়ি এবং নম্র বক্তৃতায় তিনি হয়ে গেলেন ইচ্ছাধারী সন্ত স্বামী ভিমানন্দজি মহারাজ চিত্রকুট।