অবৈধ লেনদেন রোধে ৫০০, ১০০০ টাকার নোট তুলে দেওয়া উচিত
আগের দুই পর্বের পর আজ শেষ পর্ব। আমরা কথা বলেছিলাম, ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট, ব্যাঙ্গালোরের অধ্যাপক আর বৈদ্যনাথনের সঙ্গে। তিনি কালো টাকা, হাওলা ইত্যাদি বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ।
ওয়ানইন্ডিয়া: হাওলা সমস্যা কতটা ভয়াবহ?
বৈদ্যনাথন: এটা নিঃসন্দেহে একটা ভয়ঙ্কর সমস্যা। এর ফলে দেশের অর্থনীতির বিস্তর হয়েছে। পুরোপুরি বন্ধ করা খুবই কঠিন কাজ। তবে মনে রাখা ভালো, সব হাওলা লেনদেনই অপরাধ বা সন্ত্রাসবাদের সমার্থক নয়।
আরও
পড়ুন:
হাওলা
কী,
কাজ
করে
কীভাবে:
সংক্ষিপ্ত
আলোচনা
আরও
পড়ুন:
কীভাবে
কেরল
হয়ে
উঠল
'ভারতের
হাওলা
রাজধানী'?
ওয়ানইন্ডিয়া: কেন আমাদের গোয়েন্দারা এটা বন্ধ করতে পারছে না?
বৈদ্যনাথন: যখন হাওলা লেনদেন হয়, কোনও লিখিত প্রমাণ থাকে না। এক দেশে (যেমন সৌদি আরব) একজন হাওলা এজেন্টকে যখন টাকা দেওয়া হয়, তখন সে টাকা নিয়ে অন্য দেশের (যেমন ভারত) এজেন্টকে একটি পাসওয়ার্ড দেয়। ব্যাঙ্ক মারফত টাকা যেভাবে যায়, এখানে সেভাবে যায় না। বিশ্বাসের ভিত্তিতে একজন টাকা নিয়ে আর একজনকে দেয়।
যেমন ধরুন জঙ্গিদের ই-মেল। জঙ্গিরা কখনও তথ্য ই-মেলে আদানপ্রদান করে না। তা টাইপ করে ড্রাফট হিসাবে সেভ করে রাখে। একটা নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ড থাকে। বিশ্বে যে কেউ ওই পাসওয়ার্ড দিয়ে মেল খুলে তা পড়তে পারে। যেহেতু ই-মেল আদানপ্রদান হয় না, তাই গোয়েন্দাদের পক্ষে তা ধরা মুশকিল।
ওয়ানইন্ডিয়া: সমস্যাটা কত বড় আজকের দিনে?
বৈদ্যনাথন: জঙ্গি, অপরাধীরা তো এই মাধ্যম ব্যবহার করে টাকা পাঠাচ্ছে। পাশাপাশি রোজগারের লোভে বেকার ছেলেরা জড়িয়ে পড়ছে হাওলাতে। শুধু যে বাঁধা মাইনে দেওয়া হয় তাই নয়, আছে উৎসাহভাতা, বোনাস এমনকী বিমার সুবিধাও।
ওয়ানইন্ডিয়া: সমস্যা সমাধান কতটা শক্ত?
বৈদ্যনাথন: খুবই শক্ত। কেরলে এই সমস্যার শেকড় সবচেয়ে গভীর। কেরলের জনসংখ্যার বড় অংশই থাকে পশ্চিম এশিয়ায় এবং তাদের পাঠানো টাকার ওপর এখানে নির্ভর করে তাদের পরিবার।
ওয়ানইন্ডিয়া: আপনার নিজস্ব কোনও পরামর্শ?
বৈদ্যনাথন: আমার মনে হয়, ব্যক্তির কাছে নগদের পরিমাণ সীমিত করে দেওয়া উচিত। ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত থাকুক, আপত্তি নেই। কিন্তু ২০ লক্ষ টাকার বেশি হলে সেই টাকাকে কালো টাকা আখ্যা দেওয়া হোক।
নগদে লেনদেন না হয়ে বরং কার্ডে লেনদেন হোক। তা ছাড়া, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট তুলে দেওয়া উচিত। ১০০ টাকা নোট পর্যন্ত রাখা উচিত। এতে লেনদেনে নগদ টাকার পরিমাণ কমবে। কারণ নোটের সংখ্যা বেড়ে গেল তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে।
(শেষ)