For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

গ্রাম দত্তক নিয়েছেন সাংসদ, তবু ঘাটালে লাগেনি উন্নয়নের স্পর্শ

দেব-দর্শনে চাঁদের পাহাড়ের সাধ পেতে চেয়েছিলেন ঘাটলবাসী। কিন্তু গ্রাম দত্তক নেওয়ার পরও হঠাৎ যেন থমকে গিয়েছে সেই স্বপ্ন। চাঁদের পাহাড়ের দেশে যাওয়ার সাধ থাকলেও এখনও ঘাটালের অন্ধ গলিতে আলোর পরশ লাগেনি।

  • By Sanjay
  • |
Google Oneindia Bengali News

দেব-দর্শনে চাঁদের পাহাড়ের সাধ পেতে চেয়েছিলেন ঘাটলবাসী। কিন্তু গ্রাম দত্তক নেওয়ার পরও হঠাৎ যেন থমকে গিয়েছে সেই স্বপ্ন। চাঁদের পাহাড়ের দেশে যাওয়ার সাধ থাকলেও এখনও ঘাটালের অন্ধ গলিতে আলোর পরশ লাগেনি। এখনও বন্যার করাল ছায়া থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা। সে কেলেঘাই-কপালেশ্বরী হোক বা শিলাবতী, এখন বর্ষা এলেই ফুঁসে ওঠা নদীতে রক্ষা নেই ঘাটালবাসীর।

উন্নয়নের ছোঁয়া সে অর্থে লাগেনি সাংসদ দেবের হাত ধরে। তারকা সাংসদ হওয়ার সমস্যা এখন হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছেন ঘাটালের মানুষ। সাংসদের একটা সার্টিফিকেট আনতেই চপ্পল ছিড়ে যাওয়ার জোগাড়। শিলাবতীতে জোয়ার এলে আজও বুক ডাং-ডাং করে ওঠে। সাংসদ হয়েই দেব বলেছিলেন, অভিনেতা দেব আলাদা, আর সাংসদ দেব আলাদা। কিন্তু কাছের মানুষ হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখানো সেই মানুষটাকে খুঁজে পাচ্ছেন না কেউ। কোথায় সেই প্রতিশ্রুতি? মানুষ এখন ঠেকে শিখছে।

গ্রাম দত্তক নিয়েছেন সাংসদ, তবু ঘাটালে লাগেনি উন্নয়নের স্পর্শ

সাংসদ হয়ে কী কী কাজ করেছেন?

ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অনেক। তার কিয়দংশ অন্তত পূর্ণ করতে তৎপর সাংসদ। যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের আবদার ছিল মানুষের। সাংসদ হওয়ার পর সেই দাবি মেটাতে যাত্রী প্রতীক্ষালয় নির্মাণে টাকা বরাদ্দ করেছেন দেব।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ঘাটাল কলেজের মূল গেটের কাছাকাছি একটি শীততাপ নিয়ন্ত্রীত যাত্রী প্রতীক্ষালয় নির্মাণ হয়।
শিশুদের জন্য পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নেন সাংসদ। সেইমতো শিশু উদ্যানে সাংসদের এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে এই খাতে টাকা বরাদ্দ করেন। শহরে পার্ক নেই শুনে দেবও ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। তারপরই ঘাটালের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিবেকানন্দ পল্লিতে সরকারি খাস জমিতে শিশু উদ্যান গড়ে তোলার ভাবনা।
সাংসদ কোটার টাকায় শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে পরিকল্পনা গ্রহণ ও এই পরিকল্পনার বাস্তবায়নে এলাকার উন্নয়ন তহবিলের টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
সাংসদ তহবিলের টাকায় শহরের নোংরা-আবর্জনা ফেলার জন্য একটি ডাম্পার নির্মাণ হয়েছে।
পরিশ্রুত পানীয় জলবহনকারী (৩০০০ লিটার) গাড়ি কেনা হয়েছে।
ঝড়ে বিদ্যুতের তারে গাছের ডাল পড়ে যাওয়ায় লোডশেডিং হয় প্রায়ই। সহজেই গাছের ডালপালা ছাঁটতে গাছ কাটার জন্য একটি আধুনিক মেশিন কেনা হয়েছে। ২৪ লক্ষ ব্যায়ে ওই গাড়িটি কেনা হয়েছে। দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুরসভাকে।
গ্রাম দত্তক নিয়েছেন দেব। আদর্শ গ্রাম যোজনা প্রকল্পে ঘাটালের দেওয়ানচক গ্রাম পঞ্চায়েতকে দত্তক নেন তিনি। ঘাটালের সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেব সর্বাধিক বন্যাক্লিষ্ট ওই গ্রামের উন্নয়নের জন্য ১০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পও জমা দিয়েছেন৷ কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের ছাড়পত্র পেলেই দেওয়ানচক গ্রাম পঞ্চায়েত আদর্শ গ্রাম হিসাবে স্বীকৃতি পাবে।
দেওয়ানচক রাস্তাঘাট, পানীয় জল, কালভার্ট, ব্রিজ, বিদ্যালয় ভবন, কমিউনিটি হল, ব্যাঙ্ক-সহ সমস্ত ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে এই আদর্শ গ্রাম যোজনা প্রকল্পে৷
সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর। শুধু রাস্তাঘাটের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১৩ কোটি টাকা৷
প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাইস্কুল, আইসিডিএস সেন্টার, গোরস্থান, শ্মশানচুল্লি, এমনকী মোবাইল টাওয়ারও নির্মাণ হবে।
অগভীর নলকূপ, গভীর নলকূপ থেকে শুরু করে এলাকার স্কুলের ক্লাসরুম তৈরির মতো বহু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রকল্প জমা পড়েছে।
ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে ১০টি প্রস্রাবাগার, ১০টি বাথরুম, ১০টি পায়খানা করতে ৮ লক্ষ টাকা দিয়েছেন।
ঘাটাল পুরসভার ১ থেকে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ১টি করে মোট ৭টি অগভীর নলকূপ তৈরির প্রকল্প তৈরি হয়েছে। ব্যয় ধার্য হয়েছে সাড়ে ১০ লক্ষ টাকা।
সবং ব্লকের ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তৃণমূলের দখলে থাকা ৬টি পঞ্চায়েত তৃণমূল সাংসদ দীপক অধিকারী বা দেবের সাংসদ তহবিলের টাকায় অ্যাম্বুল্যান্স নেওয়ার আবেদন জানায়। সেই আবেদনও মঞ্জুর করতে চাইছেন সাংসদ।
দেবের সাংসদ তহবিলের টাকায় ঘাটাল শহরে নানা প্রকল্প শুরু হয়েছে। মোট ১ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অনুমোদন করেছেন দেব।
সাংসদ কোটার টাকায় নির্মিত কৃষ্ণনগরে কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে ভ্রাম্যমাণ শৌচাগার, গাছ কাটার যন্ত্র-সহ এক গুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে।
ঘাটাল ও দাসপুরেও শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত প্রতীক্ষালয় তৈরি করা হবে। ডেবরায় আরও চারটি বাতানুকূল প্রতীক্ষালয় তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কুশপাতাতেও একটি বাতানুকূল প্রতীক্ষালয় চাওয়া হয়েছে সাংসদের কাছে। প্রতিটি প্রতীক্ষালয় প্রায় ৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছি।
২০০৭ সালে ডেবরা ব্লকে লোয়াদা সড়কে কাঁসাই নদীর উপরে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়৷ নাবার্ডের আট কোটি টাকার অর্থ সাহায্যে বাম আমলে এই সেতুটি তৈরি করা হয়৷ কিন্তু অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি না করায় এতদিনেও পুরোমাত্রায় এই সেতুটি চালু করা যায়নি৷ জমি জটে থমকে রয়েছে কাজ৷ এই জট কাটাতে এবার উদ্যোগী হয়েছেন সাংসদ দেব৷

কোন দিকটায় খামতি রয়ে গিয়েছে

  • সাধারণত সাংসদ তহবিলের অর্থে এলাকার বড় কাজ করলেই ভাল হয়। তাতে স্থায়ী কাজ হত। দ্রুত গতিতেও কাজ সম্পন্ন করা যেত। ছোট্ট ছোট্ট প্রকল্প তৈরি করায় কাজ রূপায়ণেও সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কোনও বড় কাজ হাতে নেওয়া হয়নি।
  • সাংসদ হওয়া ইস্তক তাঁকে বিরোধীদের অনেক কটাক্ষ শুনতে হয়েছে৷ সংসদে মুখ খোলেন না, এলাকায় তাঁকে দেখা যায় না- নানা অভিযোগ ছিল ঘাটালের সাংসদের বিরুদ্ধে। গত লোকসভা অধিবেশনেই অবশ্য সংসদে মুখ খুলে সবাইকে চমকে দিয়েছেন দেব৷
  • সাধারণ মানুষ নন, রুপোলি পর্দায় নায়ক, জনগণের ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এলাকায় পাওয়া যায় না। চারটে দরজা পেরিয়ে তবে দেবের দোরগোড়ায় কড়া নাড়তে পারে মানুষ। একটা এমপি সার্টিফিকেট পেতে মানুষকে কতবার যে ছুটতে হয়, তার ইয়ত্তা নেই।
  • বিরোধীরা দাবি তুলেছে তৃণমূলের রাজত্বে উন্নয়নে টাকা বরাদ্দ হয় টাকা লুঠের জন্য। কত বেশি লুঠ করা যায় সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলে বিভিন্ন স্তরের নেতাদের মধ্যে। সেই সমস্যা কাটিয়ে এলাকার উন্নয়ন করতে সাসংদ কতটা কার্যকরী ভূমিকা নিয়ে পারবে সন্দেহ থেকেই যায়। তার কারণ তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। তাঁকে নির্ভর করতে হয় এলাকার এক গোষ্ঠীর নেতার উপর। অন্য গোষ্ঠীর নেতারা তাই বিরোধী আওয়াজ তুলতে তৎপর।
  • মানুষের সমস্যা নিয়ে বক্তৃতা করেছেন এমন আজ পর্যন্ত দেখা যায়নি। এই কাজে তিনি কতটা পারদর্শী তা নিয়ে সন্দেহ রয়েই যায়।
  • কৃষি প্রধান এলাকা। কৃষক স্বার্থে কোনও উন্নয়ন পলিসি মানা হয়নি। শুধু অনুদান বিলি করে দিলেই হয় না। কৃষি নিয়ে সাংসদেরও কিছু পরিকল্পনা এই এলাকার সাংসদের কাছে আশা করেন মানুষ।
  • এলাকায় কোনও শিল্প ও কলকারখানা গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেই। এলাকার উন্নয়নের জন্য কোনও পরিকল্পনা সাংসদের কাছ থেকে পাননি ঘাটালবাসী।
  • কৃষকরা শস্যের দর পান না, মজুরা মজুরি পান না। তারপর মানুষের সঙ্গেও থাকতে পারেন না সাংসদ।
  • জোর দেওয়া দরকার সেচে। কিন্তু তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। কৃষি উৎপাদিত দ্রব্যের বিক্রিরও কোনও সঠিক বন্দোবস্ত নেই এলাকায়। নেই কোনও উদ্যোগও।

  • কেলেঘাই-কপালেশ্বরী নিয়ে আগে যা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, যে পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছিল, সেখানেই থমকে আছে। নতুন করে কোনও পরিকল্পনা হয়নি। উন্নয়নের অগ্রগতিও স্তিমিত। নতুন সাংসদ এ ব্যাপারে আদৌ আগ্রহী নন।

ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নিয়েও কোনও মাথাব্যাথা নেই সাংসদের। সবার আগে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া, পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি ছিল। কিন্তু এতদিন কোনও উদ্যোগ নেননি সাংসদ।

  • আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থাও গ়ড়ে ওঠেনি এলাকায়। এখনও পাঁশকুড়া-ঘাটাল রেললাইন আলোচনার টেবিলেই সীমাবদ্ধ। বারবার জানানো সত্ত্বেও এখনও প্রস্তাব আকারে রেলমন্ত্রকের কাছে জমা পড়েনি। সাংসদেরই প্রথম কর্তব্য সেই কাজ করা।

কী বলছেন বিরোধীরা

মানুষের জন্য কাজ করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সাংসদ, তা এই আড়াই বছরে পালন করতে ব্যর্থ সাংসদ। হতে পারেন তিনি জনপ্রিয় নায়ক, কিন্তু বাস্তবের রুক্ষ মাটিতে তিনি কতটা মানুষের জন্য উন্নয়নের ধ্বজা তুলে ধরতে পারবেন, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েই যায়। ঘাটালের মতো প্রত্যন্ত এলাকায় বন্যা যখন ধ্বংসলীলা ছড়ায়, তখন সাংসদের দেখা মেলে না। এ ব্যাপারে সর্বাগ্রে একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত ছিল, তা তিনি করেননি। আজ পর্যন্ত এ ব্যাপারে সাংসদের কোনও উদ্যোগ নেই।
সাংসদ কোটায় ছোট ছোট কাজ হয়েছে, কিন্তু বড় কাজের পরিকল্পনা নেই। মানুষ এখন বুঝতে পেরেছেন, রূপোলি পর্দার নায়ককে পর্দাতেই মানায়, বাস্তবের রুক্ষ মাটিতে তিনি মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করতে পারেন না। কোথাও একটা বাধার পাহাড় তৈরি হয়। সেই বাধা অতিক্রম করে মাটির কাছাকাছি আসা দুরুহ। সিপিআই নেতা গত লোকসভা নির্বাচনে সাংসদ দেবের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী সন্তোষ রানা বলেন, তৃণমূল যা করছে, তার থেকে ফাঁকা আওয়াজ করছে বেশি। বিরোধীদের সেই কণ্ঠস্বর একদিন স্তব্ধ হয়ে যাবে। মানুষ বুঝতে পারছে সব। যে মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁরাই একদিন ঘুরে দাঁড়াবেন, প্রতিবাদে শামিল হবেন।

কী বলছেন সাংসদ?

সুপারস্টার থেকে মাত্র ৩০ বছর বয়সে সাংসদ হয়েছেন দেব। তিনি বলেন, সাফল্য কোনওদিনও তাঁর পায়ের তলা থেকে মাটি কেড়ে নিতে পারবে না। সাংসদ হয়েই তিনি বলছিলেন, 'অভিনেতা দেব একটা মানুষ। সাংসদ দীপক অধিকারী অন্য মানুষ। সুপারস্টার তকমা তাঁর কাছে কোনও বাধা হতে পারবে না।' দু'একবার তাঁর মুখ ফসকে অ-রাজনীতিক কথাবার্তা বেরিয়ে পড়লেও এখন দেব অনেক পরিণত। তিনি বলছেন, আসল পরিচয় তো কাজে। যেকোনো পরিস্থিতির জন্যই আমি তৈরি। সাংসদ কোটার টাকায় মানুষের উন্নয়ন করব। সাংসদ হয়েছি, মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়াতে, এলাকার প্রভূত উন্নতি করতে। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে সুযোগ দিয়েছেন মানুষের জন্য কাজ করার। সেই কাজই করতে চাই যতদিন সুযোগ পাবো। দেবের কথায়, 'আমি মাটির কাছাকাছি একজন মানুষ। আমার বাবা-মা সেভাবেই আমাকে মানুষ করেছেন। সেই শিক্ষাতেই মানুষের জন্য কাজ করতে চাই আমি।

English summary
Member of Parliament adopted the village, but the development did not touch in Ghatal.
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X