আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা নাকি মতিভ্রম? অবশেষে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্য উদঘাটন
আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা নাকি মতিভ্রম? অবশেষে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্য উদঘাটন
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্য অজানা রয়ে গিয়েছে দীর্ঘকাল। বিজ্ঞানীরা চেষ্টার পর চেষ্টা করে গিয়েছেন। এতদিন কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেননি কেউই। তবে দীর্ঘদিনের অজানা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্য এতদিন পর ভেদ করতে সম্ভব হয়েছেন বলে এক অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানী দাবী করেছেন। তিনি খুলে দিয়েছেন অজানাকে জানার দিগন্ত।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্যের ‘উন্মোচন’
এই বারমুডা অঞ্চলে বেশ কিছু বিমান ও জাহাজ হারিয়ে গেছে। আর তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই অন্তর্ধানের কারণ কী হতে পারে, তা নিয়ে তত্ত্ব তৈরি করার চেষ্টা করেছেন অনেকে এবং তা অনেকে প্রণয়নও করেছেন। একটি শক্তিশালী মহাকর্ষীয় টান থেকে এই ঘটনা ঘটে বা এটি একটি অতিপ্রাকৃত কারণ বলে অনুমান করা হয়েছে বারবার, বারবার মত পরিবর্তিত হয়েছে। কিন্তু এতদিন পর অস্ট্রেলিয়ার এক বিজ্ঞানী বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্যের 'উন্মোচন' করেছেন বলে দাবি জানিয়েছেন।
নিখোঁজের পেছনে কোনও রহস্য নেই!
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল একটি আনুমানিক ত্রিভুজাকার এলাকা, যা সাত লক্ষ কিলোমিটারেরও বেশি বিস্তৃত। এই ত্রিভুজের তিনটি কোণ হল পুয়ের্তো রিকো, বারমুডা এবং ফ্লোরিডা। 'ডেভিলস ট্রায়াঙ্গেল' নামেও পরিচিত এই অঞ্চলটি। গত শতাব্দীতে হাজার জনেরও বেশি প্রাণ দিয়েছেন এই বারমুডা ট্রায়েঙ্গেলে। অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানী ডাঃ কার্ল ক্রুজেলনিকি বলেন, তিনি এই অন্তর্ধানের কারণ জানেন। তাঁর কথায়, এসব নিখোঁজের পেছনে কোনও রহস্য নেই। বরং খারাপ আবহাওয়া এবং মতিভ্রম নিখোঁজের জন্য দায়ী।
জাহাজ-বিমান অদৃশ্য বারমুডা ট্রায়েঙ্গেলে, কী কারণ
২০১৭ সালে ডাঃ কার্ল ক্রুজেলনিকি বলেন, "লয়েডস অফ লন্ডন এবং ইউএস কোস্ট গার্ডের মতে, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে নিখোঁজ হওয়া প্লেনের সংখ্যা শতাংশের ভিত্তিতে বিশ্বের যে কোনও জায়গার সমান। এই অঞ্চলটি বিষুবরেখার কাছাকাছি এবং এটি আমেরিকার কাছে। এখানে প্রচুর ট্রাফিক রয়েছে। তাই আবহাওয়ার দুর্বিপাকে এবং মনের ভুলে বিমান বা জাহাজ নিখোঁজ হয়ে যায় এখানে।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলকে নিয়ে কল্পিত নানা গল্প কথা
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলকে নিয়ে কল্পিত নানা গল্প বিংশ শতাব্দীতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ইউএসএস সাইক্লপস নামে একটি জাহাজ ১৯১৮ সালে বার্বাডোস থেকে বাল্টিমোর যাত্রার সময় প্রচুর ভারী পণ্যসম্ভার নিয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। ওই জাহাজে ৩০৯ জন যাত্রী ছিল। এরপর ১৯৪১ সালে সাইক্লপসের আরও দুটি জাহাজও একই পথ ধরে অদৃশ্য হয়ে যায়।
বিমান অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল, খুঁজতে গিয়েও ফেরা হয়নি
এরপর ১৯৪৫ সালে ফ্লাইট ১৯ একটি রুটিন ড্রিলের মাধ্যমে ফ্লোরিডার নেভাল এয়ার স্টেশন থেকে উড়েছিল, তা ওই জায়গায় এসে অদৃশ্য হয়ে যায়। ওই উড়ানে পাঁচটি টিবিএম অ্যাভেঞ্জার টর্পেডো বোম্বার ছিল। এরপর একটি মার্টিন মেরিনার বিমানকে পাঠানো হয়েছিল ওই উড়ানকে ট্র্যাক করতে, তাও ফিরে আসেনি। ১৩ জন যাত্রীকে নিয়ে হারিয়ে গিয়েছিল সেই বিমানও। তার কোনও ধ্বংসাবশেষ বা কোনও মৃতদেহ পাওয়া যায়নি।
বিমান বা জাহাজ অদৃশ্য হওয়ার নেপথ্যে
ডাঃ কার্ল বলেন, এটি কোনও এলিয়েনের কাজ হবে। কোনও বিমান বা জাহাজ অদৃশ্য হয়ে যায়, তখন খারাপ আবহাওয়া এবং ক্রু সদস্য এবং পাইলটদের অনভিজ্ঞতা দায়ী। তিনি বলেছিলেন যে ফ্লাইট 19 এর নেতা লেফটেন্যান্ট চার্লস টেলরকে পশ্চিমে উড়তে বলা হয়েছিল কিন্তু তিনি পূর্বে উড়তে চালিয়ে যেতে পছন্দ করেছিলেন। ডাঃ কার্ল আরও পরামর্শ দিয়েছিলেন, লেফটেন্যান্ট টেলর হ্যাংওভারের নিয়ে উড়ছিলেন এবং ঘড়ি ছাড়াই উড়েছিলেন। এর আগে দু'বার তার বিমান হারিয়ে যাওয়ার এবং খাদে পড়ার ইতিহাস ছিল।