শুধু বাবরি নয়, টু-জি দুর্নীতি থেকে বোফর্স কেলেঙ্কারি একাধিক হাই-প্রোফাইল কেসে মুখ পুড়েছে সিবিআইয়ের
বুধবারই বাবরি ধ্বংস মামলার রায়ে বেকসুর খালাস পেয়েছেন প্রবীন বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবাণী, মুরলী মনোহর যোশী, উমা ভারতীয় মত ৩২ জন অভিযুক্ত। লখনৌয়ের সিবিআইের বিশেষ আদালকে শুনানী চলাকালীন ২৩০০ পাতার রায়ে বিচারক এস কে যাদব স্পষ্টতই জানান অভিযুক্তদর বিরুদ্ধে সিবিআই যে তথ্য প্রমাণ দাখিল করেছিল তাতে কখনওই কাউকে দোষী প্রমাণ করা যায় না। এদিকে এই ঘটনাই প্রখম না, এর আগেও টু-জি কাণ্ড থেকে আরুশি তালওয়ার হত্যাকাণ্ড সহ একাধিক মামলায় আদালতে মুখ পুড়েছে সিবিআই-র।
টু-জি কাণ্ডেও মুখ পোড়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার
এর আগে ২০১৭ সালের একটি রায়ে টু-জি কাণ্ডে কানিমোঝি, এ রাজা-সহ সমস্ত অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করেন সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। মোট ৩টি মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারক ওপি সাইনি। ওই রায়েও স্পটতই তিনি জানান উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের অভাবেই ১৭ জন অভিযুক্তের প্রত্যেককেই বেকসুর খালাস করা হচ্ছে।
আরুশি তালওয়ার হত্যাকাণ্ডেও বেকাদায় সিবিআই
পরবর্তীতে ২০১৭ সালে আরুশি তালওয়ার হত্যাকাণ্ডেও মুখ পোড়ে সিবিআই-র। এই মামলার রায় দেওয়ার সময় সিবিআই-র বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা যায় এলাহাবাদ হাইকোর্টকে। ২০০৮ সালের এই ঘটনায় কন্যা আরুশি এবং ভৃত্য হেমরাজের হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছিলেন দম্পত্তি রাজেশ এবং নূপুর তালওয়ার। কিন্তু একটানা তদন্ত প্রক্রিয়া চালিয়েও উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ জোগাড়ে ব্যার্থ হয় সিবিআই। উল্টে সিবিআইএ-র বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ বিকৃত করার অভিযোগ ওঠে। তারপরেই আদালতের রায়ে বেকসুর খালাস হয়ে যান তালওয়ার দম্পতি।
২০১৩ সালের কয়লা ব্লক বণ্টন দুর্নীতিতে মুখে পোড়ে সিবিআইয়ের
২০১৩ সালের কয়লা ব্লক বণ্টন দুর্নীতি মামলাতেও বেকায়দায় পড়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই-র গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট। এমনকী এই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ‘খাঁচা বন্দী তোতা' বলে তীব্র সমালোচনা করতে দেখা যায় শীর্ষ আদালতের বিচারপতিদের। সরাকরের ভূমিকা নিয়েও ওঠে প্রশ্ন।কিন্তু তারপরে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার কোটি টাকার এই দুর্নীতি মামলায় পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ জোগাড় করতে ব্যার্থ হয় সিবিআই।
বোফর্স অস্ত্র কেলেঙ্কারী মামলাতেও ধাক্কা খায় সিবিআই
এমনকী ২০০৫ সালে কংগ্রেসের শাসনামলে বোফর্স অস্ত্র কেলেঙ্কারী মামলাতেও আদালতে বড়সড় ধাক্কা খায় সিবিআই। উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের অভাবে এই মামলায় মামালায় এসপি হিন্দুজা, জিপি হিন্দুজা এবং পিপি হিন্দুজা সহ তিন হিন্দুজা ভাইকেই বেকসুর খালাস করেছিল দিল্লি হাইকোর্ট।যদিও পরবর্তীতে এই রায়কে দিল্লি হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হয় সিবিআই। সেখানেইও তাদের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। সূত্রের খবর, ১৯৮৬ সালে ৪১০ বোফর্স ফিল্ড হাউতজার বন্দুক সরবরাহের জন্য সুইডিশ অস্ত্র প্রস্তুতকারক সংস্থা এবি বোফর্স এর সঙ্গে ১৪৩৭ কোটি টাকার চুক্তি হয় ভারতের। তার এক বছরের মধ্যেই সুইডিশ রেডিও দাবি করে বোফর্সের তরফ থেকে ভারতীয় রাজনৈতিক নেতা এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আধিকারিকদের ঘুষ দিয়েছে। নাম জড়ায় হিন্দুজা ভাইয়েদের। ঘুষের পরিমাণ প্রায় ৬৪ কোটি টাকা।তারপরেই এই ঘটনার দায়ভার এসে পড়ে সিবিআই-র কাঁধে।