সচিনের পঞ্চাশে পদার্পণ: কাম্বলির সঙ্গে রেকর্ড জুটি! তবু তেন্ডুলকর কেন বকা খান আচরেকরের কাছে?
সচিন তেন্ডুলকর মুম্বইয়ের সারদাশ্রম বিদ্যামন্দিরে ছিলেন ক্লাস সেভেন থেকে টেন পর্যন্ত। তার মধ্যেই ১৯৮৮ সালে গড়ে ফেলেন বিশ্বরেকর্ড। তবু সচিন ও কাম্বলি বকা খেয়েছিলেন তাঁদের গুরু রমাকান্ত আচরেকরের কাছে। তবে এটা ঠিক, স্কুলে বাধ্য হলেও অবাধ্য হয়ে ওঠাতেই সম্ভব হয়েছিল ম্যারাথন পার্টনারশিপ। সচিন তেন্ডুলকরের ৫০ বছরে পদার্পণের দিন ফিরে দেখা সেই স্মরণীয় ঘটনা।
সচিন-কাম্বলির রেকর্ড
হ্যারিস শিল্ড ট্রফিতে সারদাশ্রম বিদ্যামন্দিরের ম্যাচ ছিল সেন্ট জেভিয়ার্স হাই স্কুলের বিরুদ্ধে। ১৯৮৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সচিন-কাম্বলির অবিচ্ছেদ্য জুটিতে ওঠে ৬৬৪ রান। যা যে কোনও ধরনের ক্রিকেটেই ছিল বিশ্বরেকর্ড। যা ২০০৬ সালের নভেম্বরে ভেঙে যায় হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন পরিচালিত একটি একদিনের ম্যাচে। বওয়েনপল্লী সেন্ট পিটার'স হাই স্কুলের হয়ে অনূর্ধ্ব ১৩ ব্যাটার মহম্মদ শাহবাজ তাম্বি ও বি মনোজ কুমার গড়েন ৭২১ রানের পার্টনারশিপ। তবুও সচিন-কাম্বলির সেই অনবদ্য জুটির কথা আজও বন্দিত হয় ক্রিকেটবিশ্বে।
|
সারদাশ্রমে সুখস্মৃতি
সচিন ও কাম্বলি নিজেরাও ওই সুখস্মৃতি তারিয়ে উপভোগ করেন। গতবার মজা করে সচিনকে উদ্দেশ করে বিনোদ কাম্বলি লিখেছিলেন, এখন নামলে ৭০০ রানের পার্টনারশিপও গড়ে ফেলতে পারব। সেদিন সচিন ও কাম্বলি যেভাবে খেলেছিলেন তাতে অবশ্য ৭০০ অসম্ভব ছিল না। সেই আক্ষেপ ধরা পড়ে কাম্বলির কথায়। সচিনের তখন বয়স ১৪, কাম্বলির ১৬। সচিন ৩২৬ ও কাম্বলি ৩৪৯ রানে অপরাজিত ছিলেন।
আচরেকর অসন্তুষ্ট
যেদিন সচিন ও কাম্বলি ওই বিশ্বরেকর্ডটি গড়েছিলেন সেদিন স্কুল দলের সঙ্গে মাঠে ছিলেন না রমাকান্ত আচরেকর। দল নিয়ে গিয়েছিলেন ফিজিকাল এডুকেশনের শিক্ষিকা রাগিনী দেশাই। তিনি বলেন, সচিন-কাম্বলি সাড়ে তিনশো-চারশো রান করার পর আচরেকর স্যরকে ফোন করেছিলাম। আচরেকর স্যর ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু সচিন ও কাম্বলি তা মানতে চাননি। তাঁরা খেলেই চলেন। যদিও ওই রেকর্ড পার্টনারশিপ গড়ার পরও তাঁদের আচরেকর স্যরের বকুনি খেতে হয়। কেন ইনিংস ডিক্লেয়ারের নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও তাঁরা খেলে চলেন তাঁর কারণ জানতে চেয়েছিলেন আচরেকর স্যর। সচিনদের প্রিয় রাগিনী ম্যাডামের নোটবুকে আজও সযত্নে রক্ষিত রয়েছে সেই ম্যাচের ছবি, পেপার কাটিং।
বাধ্য ছাত্র সচিন
স্কুলে অবশ্য সচিন ছিলেন বাধ্য ছাত্র। তাঁর সময়কার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কথায়, সেই সময় সারদাশ্রম স্কুল ক্রিকেটের বিভিন্ন টুর্নামেন্টে লাগাতার সাফল্য পাচ্ছিল। সচিনও বড় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। সে সময় জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি অবধি ক্রিকেট মরশুম চলতো। সচিন ৮০ ভাগ দিনই স্কুলে আসতেন না, ক্রিকেট নিয়েই থাকতেন। তবে স্কুলে তিনি ছিলেন বাধ্য ছাত্র। পড়াশোনার ক্ষেত্রে মনোযোগীও। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নির্দেশ মেনেই চলতেন। তর্ক করার অভ্যাস ছিল না, এক কথায় শান্ত স্বভাবের। ক্লাসের বাধ্য ছাত্র সচিন অবশ্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা ক্লাসে না থাকলেই মেতে উঠতেন বন্ধুদের সঙ্গে খুনসুটিতে।
#OnThisDay a very special moment for me & @sachin_rt. It was because of this 664-run partnership that people started to notice our game and our journey to the stars began. Master... let's catch up soon someday to replicate this partnership #IsBaar700 pic.twitter.com/Uu6fuB72dS
— Vinod Kambli (@vinodkambli349) February 24, 2021