বিনা বৃষ্টিতেই ভিজে ইডেনের পিচ! বিসিসিআইয়ের কিউরেটরের মারাত্মক ভুলের প্রভাব বাংলার রঞ্জি ম্য়াচে
ইডেনে বিসিসিআইয়ের কিউরেটর মাত্রাতিরিক্ত জল দিয়েছিলেন পিচ ও প্র্যাকটিস পিচে। যার জেরে বাংলা বনাম ওডিশা রঞ্জি ম্যাচ শুরু হলো ৪ ঘণ্টা দেরিতে। প্রথম দিনে খেলা হলো মাত্র ৩৫ ওভার।
রঞ্জিতে এলিট এ গ্রুপের শীর্ষে থেকে ইতিমধ্যেই কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে ফেলেছে বাংলা। তা সত্ত্বেও ইডেনে ওডিশা ম্যাচ জিতে আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে নেওয়া লক্ষ্য মনোজ তিওয়ারির দলের। কিন্তু বিসিসিআইয়ের কিউরেটরের মারাত্মক ভুলে ম্যাচের ফয়সালা আদৌ হবে কিনা তা নিয়েই দেখা দিল সংশয়।
(ছবি- সিএবি মিডিয়া)
বৃষ্টির লেশমাত্র নেই। কুয়াশাও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। মাঘ মাসে উধাও শীত। তা সত্ত্বেও ইডেনে বাংলা বনাম ওডিশা রঞ্জি ম্যাচ আজ শুরু হলো চার ঘণ্টা দেরিতে। এমনটা যে হবে তা আঁচ করা গিয়েছিল গতকালই। ইডেনের পিচ ও প্র্যাকটিস পিচে অত্যধিক জল দেওয়া হয়েছিল। যার জেরে গতকাল ক্ষোভ লুকিয়ে রাখেনি বাংলা শিবির। প্র্যাকটিস পিচে বলের অসম বাউন্স লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। অনুশীলনে আকাশ দীপ চোট পান। বাংলার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি গতকালই বলেছিলেন, আন্ডার প্রিপেয়ার্ড উইকেট। পিচ যা ভিজে রয়েছে তাতে নির্ধারিত সময়ে খেলা শুরু হবে না বলেই মনে হচ্ছে। ঘরের মাঠে খেলতে নামার আগে এমন প্রতিকূল পরিস্থিতি সিএবি কর্তাদের উদাসীনতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দেয়।
মনোজের আশঙ্কাই আজ সত্যি হয়। প্রথম সেশনে একটি বলও খেলা হয়নি। রঞ্জি ম্যাচ শুরু হয় সকাল ৯টা থেকে। সকাল ১১টায় লাঞ্চ হয়। দ্বিতীয় সেশনের অনেকটাও এদিন বল গড়ায়নি ইডেনে। অবশেষে বেলা সাড়ে ১২টায় টস হয়। খেলা শুরু হয় বেলা ১টা থেকে। রঞ্জি ম্যাচে কিউরেটরদের পাঠানো হয় বিসিসিআই থেকে। ইডেনে এসেছেন অশোক বর্মা নামের এক কিউরেটর। তাঁর নির্দেশেই পিচে জল দেওয়া, রোল করার কাজ চালাচ্ছেন সিএবির মাঠকর্মীরা। বোর্ডের কিউরেটরের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার খেসারৎ দিতে হলো বাংলা ও ওডিশাকে। সিএবি অবশ্য এখনও বোর্ডকে কোনও কিছু জানায়নি। তবে বোর্ডের কিউরেটরের কথাই যেখানে শেষ কথা তাতে তাঁদের কিছু করার নেই, এটাই বুঝিয়ে দিচ্ছেন সিএবি কর্তারা।
টস জিতে বাংলা ব্যাট করতে পাঠায় ওডিশাকে। বাংলার হয়ে এই ম্য়াচে অভিষেক হলো অলরাউন্ডার আকাশ ঘটকের। মুকেশ কুমার ভারতীয় টি ২০ দলে থাকায় এই রঞ্জি ম্যাচ খেলতে পারছেন না। তাঁর জায়গায় দলে এসেছেন প্রীতম চক্রবর্তী। প্রথম দিনে মাত্র ৩৫ ওভার খেলা হয়েছে। দিনের শেষে ওডিশার স্কোর ২ উইকেটে ৯৬। অনুরাগ সারঙ্গিকে ফেরান আকাশ দীপ, তিনি ৪৩ বলে ১৫ রান করেছেন। সন্দীপ পট্টনায়ক কট বিহাইন্ড হন ঈশান পোড়েলের বলে। ৪৬ বলে ৩০ রান করে সন্দীপ আউট হলে ওডিশার স্কোর দাঁড়ায় ৩১.৩ ওভারে ২ উইকেটে ৮৩। শান্তনু মিশ্র ১০৬ বলে ৪১ ও অধিনায়ক শুভ্রাংশু সেনাপতি ১৫ বলে ৯ রানে ক্রিজে আছেন।
বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্লা বলেন, ম্যাচেই ফোকাস রাখছি। নিজেদের দক্ষতা অনুযায়ী ভালো পারফর্ম করাই লক্ষ্য। আমাদের বোলাররা নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তা অব্যাহত রেখে কাল সকালের দিকে দ্রুত কয়েকটি উইকেট তুলে নেওয়াই লক্ষ্য। দল যেহেতু শেষ আটে চলে গিয়েছে, ফলে খুব একটা চিন্তা নেই বাংলা শিবিরে। যদিও সকলেই মনে করছেন, যদি এই ম্যাচের উপর কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়া নির্ভর করতো, তাহলে আজ যেভাবে এতটা সময় নষ্ট হলো সেটা অন্যতম ফ্যাক্টর হয়ে যেত।