বল নড়তেই খুলে গেল ভারতীয় ব্য়াটিং-এর নাট-বোল্ট! হ্যামিলটনে বসে গেল জয়রথের চাকা
নিউজিল্যান্ড বনাম ভারত ওডিআই সিরিজের ৪র্থ ম্যাচের প্রতিবেদন।
হ্যামিল্টনের সেডন পার্কের পিচে বোলারদের জন্য সুইং ছিল। আর এই সাহায্যটুকু পেয়েই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন নিউজিল্যান্ডের পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। তাঁর আগুনে বোলিং-এর সামনে দাঁড়াতে পারলেন না ভারতীয় ব্যাটিং-এর রথী-মহারথীরা। হার্দিক পাণ্ডিয়া তাঁর এক ওভারে ৩টি চার না মারলে তাঁর বোলিং পরিসংখ্যান আরও উন্নত দেখাত।
তারপরেও অবশ্য মাত্র ৩০.৫ ওভার টিকল ভারতের ইনিংস। ৯২ রান তুলতে না তুলতেই ১০ ব্য়াটসম্যানই ধরলেন প্যাভিলিয়নের পথ। এই রানটা তুলতে কিউইদের সমস্যা হওয়ার কথা ছিল না, কোনও অঘটনও ঘটেনি। ১৪.৪ ওভারেই ২ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তারা।
২টি উইকেটই নিলেন ভূবনেশ্বর কুমার। তার মধ্যে বেশ নাটকীয় ভঙ্গীতে আউট হলেন গাপ্টিল। একেবারে প্রথম ওভারে ভুবনেশ্বর কুমারের প্রথম তিন বলে তিনি মারলেন যথাক্রমে ছয়, চার, চার। তার পরের বলই ব্যাটের কানা লাগিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্য়াচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি।
এরপর সপ্তম ওভারে কেন উইলিয়ামসন (১১)-কেও অফস্টাম্পের বাইরে ফাঁদে ফেলেন ভূবনেশ্বর। কিন্তু, হেনরি নিকোলস (৩০*) ও রস টেলর (৩৭*) নিজেদের মধ্যে অপরাজিত ৫৪ রানের জুটি গড়ে নিউজিল্যান্ডকে জয় এনে দেন।
সিরিজে বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি)-এর আগে পর্যন্ত ভারতীয় দলকে একেবারে অপরাজেয় মনে হচ্ছিল। কিন্তু এদিন বল নড়াচড়া শুরু করতেই ধরা পড়ে গেল ভারতীয় ব্যাটিং-এর দুর্বলতা। ইংল্য়ান্ডেও এই সমস্যা ভারতকে ভুগিয়েছিল। এবারের বিশ্বকাপের অসরও কিন্তু বসবে ইংল্যান্ডেই। তার আগেই দ্রুত এই সমস্যার সমাধান বের করতেই হবে ভারতকে।
কতটা ভয়াবহ হল ভারতীয় ব্য়াটিং? ভারতের প্রথম ৬ ব্যাটম্য়ানের ৫ জনই এদিন দুই অঙ্কের সংখ্যায় পৌঁছতে পারেননি। সর্বোচ্চ রান করলেন ১০ নম্বরে নামা চাহাল (১৮)। আর ১ নম্বরে নামা শিখর ধাওয়ান করলেন (১৩)। রোহিত ৭ করে কট অ্যান্ড বোল্ড হলেন। আর বিশ্বকাপের দলে ঢোকার জন্য় পরীক্ষায় থাকা রায়ডু ও কার্তিক দুজনেই করলেন ০।
এদিন বোল্টের দোসর হন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমি। ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে ২৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তিনি ১১তম ওভারে ৬ বলের মধ্যেই পর পর রায়ডু ও কার্তিককে ফিরিয়ে দেন তিনি। বোল্ট তাঁর সুইং বলের সঙ্গে বুদ্ধি করে সিম বল মিশিয়ে ধাঁধা তৈরি করছিলেন, আর অপর দিক থেকে গ্র্যান্ডহোমি অস্ত্র করেন তাঁর বলের লেট সুইংকে।
এদিন বিরাট কোহলি ছিলেন না। তাঁর জায়গায় ৩ নম্বরে নামেন অভিষেক হওয়া ১৯ বছরের শুভমান গিল। মাত্র ৯ রান করতে পারলেও যে ২১টি বল তিনি খেলেন, তাতে তাঁকে বেশ জমাট লেগেছে। কিন্তু দিনটা ছিল বোল্টের। শুভমান প্রায় রোহিতের ভঙ্গীতেই বোল্টের বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হন।
এদিন, একসময় ৪০ রানে ভারতের ৭ উইকেট পড়ে গিয়েছিল। তখন মনে হহচ্ছিল একদিনের ক্রিকেটে ভারতের সর্বনিম্ন রান (৫৪)-এর রেকর্ডও ভেঙে যেতে পারে। কিন্তু ভারতের কুল-চা জুটির ২৫ রান সেই লজ্জার হাত থেকে বাঁচিয়ে দেয়। কুলদীপ (১৫) আজ দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক