IPL 2022: ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস দিল্লি ক্যাপিটালসকে হারিয়ে টপকাল কেকেআরকে! পন্থদের পথ আরও কঠিন
গুরু-শিষ্যের লড়াইয়ে জিতলেন গুরুই। মহেন্দ্র সিং ধোনি রবীন্দ্র জাদেজার হাত থেকে ক্যাপ্টেন্সির ব্যাটন নেওয়ার পর দলকে চেন্নাই সুপার কিংসকে এনে দিলেন দ্বিতীয় জয়। ৯১ রানে হারায় দিল্লি ক্যাপিটালসের প্লে অফে ওঠার সমীকরণও কঠিন হয়ে গেল। অষ্টম থেকে একাদশ ওভারের মধ্যেই পড়ল পাঁচ উইকেট। মঈন আলি ৪ ওভারে ১৩ রান দিয়ে নিলেন ৩ উইকেট। মুকেশ চৌধুরী, ডোয়েইন ব্র্যাভো ও সিমরজিৎ সিংয়ের ঝুলিতে ২টি উইকেট। এই জয়ের সুবাদে পয়েন্ট তালিকায় কেকেআরকে নয়ে নামিয়ে আটে উঠে এল সিএসকে।
শুরু থেকেই চাপে
জয়ের জন্য ২০৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে প্রথম উইকেট হারায় দিল্লি ক্যাপিটালস। মনদীপ সিংয়ের জায়গায় চলতি আইপিএলে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে ব্যর্থ ভারতীয় দলে রিজার্ভ উইকেটকিপার হওয়ার দৌড়ে থাকা কেএস ভরত। ৫ বলে ৮ রান করে তিনি সিমরজিৎ সিংয়ের শিকার হন। ৪.২ ওভারে দিল্লির দ্বিতীয় উইকেট পড়ে ৩৬ রানের মাথায়। ১২ বলে ১৯ রান করে মাহিশ থিকশানার বলে লেগ বিফোর হন ডেভিড ওয়ার্নার। রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি। ১টি চার ও ২টি ছয় ছিল তাঁর ইনিংসে। মিচেল মার্শ ও ঋষভ পন্থের জুটিতে এরপর যোগ হয় আরও ৩৬ রান।
মাঝের ওভারে ব্য়াটিং বিপর্যয়
৭.৩ ওভারে দলের ৭২ রানের মাথায় মিচেল মার্শ আউট হন। ২০ বলে ২৫ রান করে মঈন আলির বলে বড় শট নিতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনের কাছে ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। তিনটি চার ও একটি ছয় মারেন মার্শ। তিনি ফেরার পরেই ধস নামে দিল্লি ক্যাপিটালস ইনিংসে। ৩.২ ওভারের মধ্যে পড়ে আরও চারটি উইকেট। ৩ উইকেটে ৭২ রান থেকে সাত উইকেটে ৮৫ রান হয়ে যায় পন্থের দলের স্কোর। দশম ওভারের প্রথম বলে পন্থকে বোল্ড করে দেন মঈন আলি, ১১ বলে ২১ করেন ক্যাপিটালস ক্যাপ্টেন। এই ওভারের চতুর্থ বলেই রিপল প্যাটেলকেও ফেরান আলি। তিনি ৩ বলে ৬ রান করে দলের ৮১ রানের মাথায় আউট হন। স্কোরবোর্ডে ১ রান যোগ হওয়ার পর অক্ষর প্যাটেলের উইকেট হারায় দিল্লি ক্যাপিটালস। ৩ বলে ১ রান করে মুকেশ চৌধুরীর বলে বোল্ড হন অক্ষর। এই ওভারের পঞ্চম বলেই রভম্যান পাওয়েল (৯ বলে ৩) কট বিহাইন্ড হন।
সব বিভাগেই পরাস্ত
মঈন আলির বল হাতে বিধ্বংসী ফর্মই দিল্লির ভরাডুবি নিশ্চিত করল। ১৫.২ ওভারে ৯৯ রানের মাথায় ক্যাপিটালসের অষ্টম উইকেটটি তুলে নেন সিমরজিৎ সিং। ১৭ বলে ৫ রান করে আউট হন কুলদীপ যাদব। ১৮তম ওভারের তৃতীয় ও চতুর্থ বলে শার্দুল ঠাকুর (১৯ বলে ২৪) ও খলিল আহমেদ (০)-কে আউট করে সিএসকের ৯১ রানে জয় এনে দেন। সেই সঙ্গে সিএসকের নেট রান রেট পজিটিভে চলে এলো। চেন্নাই ও কলকাতার ১১ ম্যাচে রয়েছে ৮ পয়েন্ট। তবে সিএসকের নেট রান রেট ০.০২৮, কেকেআরের মাইনাস (-) ০.৩০৪। সে কারণে কেকেআর নেমে গেল নয়ে, চেন্নাই সুপার কিংস এক ধাপ উপরে উঠে এলো। মুকেশ চৌধুরী ৩ ওভারে ২২ ও সিমরজিৎ ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে দুটি করে উইকেট নিলেন। ব্র্যাভো ২.৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ২টি উইকেট নিলেন। মাহিশ থিকশানা ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে ১টি উইকেট নেন।
ঋতু-কনওয়ে দুরন্ত
এদিন টস জিতে দিল্লি ক্যাপিটালস রান তাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ১১০ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপের দৌলতে চেন্নাই সুপার কিংস তুলেছিল ৬ উইকেটে ২০৮। ডেভন কনওয়ে ৪৯ বলে ৮৭, ঋতুরাজ গায়কোয়াড় ৩৩ বলে ৪১, শিবম দুবে ১৯ বলে ৩২ রান করেন। ৮ বলে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। আনরিখ নরকিয়া তিনটি ও খলিল আহমেদ ২টি উইকেট দখল করেন।
ডু অর ডাই দিল্লির
সব বিভাগেই সিএসকে তাঁদের পরাস্ত করেছে মেনে নিয়ে দিল্লি ক্যাপিটালস অধিনায়ক পন্থ ইতিবাচক থেকে বাকি তিনটি ম্যাচ জেতার ব্যাপারে প্রত্যয়ী। ১১ ম্য়াচে ১৬ পয়েন্ট করে নিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে লখনউ সুপার জায়ান্টস ও গুজরাত টাইটান্স। লখনউ (০.৭০৩) গুজরাতের (০.১২০) নেট রান রেটে এগিয়ে। রাজস্থান রয়্যালসের ১১ ম্যাচে রয়েছে ১৪ পয়েন্ট, আরসিবির ১২ ম্যাচে ১৪। দিল্লি ক্যাপিটালস দাঁড়িয়ে রইল ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্টে। পন্থদের ম্যাচ বাকি রাজস্থান রয়্যালস (পয়েন্ট তালিকায় তিনে রয়েছে), পাঞ্জাব কিংস (পয়েন্ট তালিকার সাতে রয়েছে) এবং মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (পয়েন্ট তালিকার দশম স্থানে)-এর বিরুদ্ধে। ফলে দিল্লিকে প্লে অফে যেতে এখন কার্যত সব ম্যাচই জিততে হবে। কেন না, ১৪ পয়েন্ট শেষ চারের টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নাও হতে পারে। তবে সানরাইজার্স ও পাঞ্জাব কিংসেরও ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট থাকলেও তাদের চেয়ে পন্থরা এগিয়ে নেট রান রেটে (০.১৫০), বাকি দুই দলের নেট রান রেটই চলে গিয়েছে মাইনাসে। দুটি ম্যাচ জিতলে আরসিবির প্লে অফের টিকিট কনফার্ম। পাঞ্জাব কিংস ও গুজরাত টাইটান্সের মধ্যে একটিতে জিতলেও নেট রান রেটের বিচারে শেষ চারে যেতে পারেন বিরাটরা।