IPL 2022: লোকেশ রাহুল গেইল-ওয়ার্নারদের ছাপিয়েও ট্র্যাজিক হিরো! লখনউয়ের বিদায়ের নেপথ্যে কোন কারণ?
আইপিএল নিলামের পর শক্তি ও ভারসাম্যের নিরিখে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে খেতাব জয়ের অন্যতম দাবিদার হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। লিগ পর্বের মাত্র পাঁচটি ম্যাচ হেরে তৃতীয় স্থান দখল করে প্লে অফে পৌঁছায় লোকেশ রাহুলের দল। ১৪ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট থাকলেও নেট রান রেটে রাজস্থান রয়্যালসের চেয়ে সামান্য পিছিয়ে থাকায় ইডেনে খেলতে হলো এলিমিনেটর। একটা সময় লিগশীর্ষেও ছিল লখনউ। সেখান থেকে নামতে নামতে এলিমিনেটরে পরাস্ত হয়ে বিদায়। ইডেন দেখল ট্র্যাজিক হিরো লোকেশ রাহুলকে।
|
ফিল্ডিংয়ের দিকে আঙুল
পরাজয়ের পর এলিমিনেটরে দলের ফিল্ডিংয়ের দিকেই আঙুল তুলেছেন রাহুল। তিনি বলেন, আমাদের ফিল্ডিং মোটেই ভালো হয়নি। তাছাড়া দুই দলের মধ্যে ফারাক গড়ে দিয়েছে রজত পাতিদারের ইনিংসটি। শুরু থেকে শেষ অবধি ক্রিজে থেকে যদি কেউ এমন ইনিংস খেলেন, তাহলে সেই দলের জেতাই স্বাভাবিক। আমাদের ফ্র্যাঞ্চাইজি আইপিএলে নতুন। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েই ঘুরে দাঁড়াতে হবে। দলে অনেক তরুণ ক্রিকেটার রয়েছেন। গড় বয়স ২৫-এর নীচে। কয়েকটি ম্যাচে আমরা ভালো খেলেছি। মহসীন খান প্রমাণ করে দিয়েছেন তিনি কতটা ভালো এবং কেমন দক্ষতার অধিকারী। এটা তাঁরও প্রথম মরশুম ছিল। এবারের অভিজ্ঞতাকে সম্বল করে কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যেতে হবে তাঁকে। তাতে আগামী বছর আরও বেশি গতিতে আরও ভালো বোলিং করতে পারবেন মহসীন।
কোথায় গলদ?
গতকাল এলিমিনেটরে রাহুলরা যখন রান তাড়া করছিলেন তখন ধারাভাষ্যকাররাও লখনউয়ের স্ট্র্যাটেজি নিয়ে অসন্তোষ ব্যক্ত করেন। এভিন লুইস ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ওপেন করেন। ম্যাচ জেতানো বড় ইনিংসও রয়েছে টপ অর্ডারে নেমেই। তাঁকে তিনে না নামিয়ে মিডল অর্ডারে অনেক পরে নামানো উচিত হয়নি বলে আলোচনায় উঠে আসে। লুইস নিজের চেনা পজিশনে ব্যাট করলে খেলার ফল অন্যরকম হতেও পারতো। জেসন হোল্ডারের মতো অলরাউন্ডারের মতো অলরাউন্ডারকেও এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বসানো উচিত হয়নি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দেখা যাচ্ছে, প্রথম ৬ ওভারে আরসিবি তোলে ১ উইকেটে ৫২, লখনউ ২ উইকেটে ৬২। ৭ থেকে ১৫ ওভারে আরসিবি তিন উইকেট হারিয়ে ৭১ রান সংগ্রহ করেছিল, লখনউ মাঝের ওভারে মাত্র ১টি উইকেট খুইয়ে ৮১ রান তোলে। ডেথ ওভারে অর্থাৎ শেষ পাঁচ ওভারে আরসিবি কোনও উইকেট না হারিয়ে ৮৪ রান তোলে, লখনউ ৩ উইকেট হারিয়ে ৫০-এর বেশি তুলতে পারেনি।
শঙ্কায় ছিল আরসিবি
তবে লোকেশ রাহুল যেভাবে ব্যাট করছিলেন তাতে শঙ্কায় ছিল আরসিবি। একটা সময় দল চাপে পড়েছিল বলে স্বীকার করেছেন বিরাট কোহলি। রজত পাতিদারও বলেন, রাহুলকে নিয়েই চিন্তা ছিল। দীনেশ কার্তিকের কথায়, লোকেশ রাহুল পরিস্থিতি অনুযায়ী দ্রুত গিয়ার পরিবর্তন করে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলতে সক্ষম। তাই তাঁকে ফেরানোটাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। জশ হ্যাজলউডের বলে দারুণ ক্যাচ ধরেন শাহবাজ আহমেদ। বাংলার অলরাউন্ডারের প্রশংসা করেছেন বিরাট, কার্তিকরা।
উজ্জ্বলতম রাহুল
এবারের আইপিএলের প্লে অফে যে বাকি তিনটি দল উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে একটিতেও জয় পেল না লখনউ সুপার জায়ান্টস। গুজরাত টাইটান্স, রাজস্থান রয়্যালস ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে দুটি করে ম্যাচে হেরেছে তারা। তবে উজ্জ্বলতম নক্ষত্র অবশ্যই লোকেশ রাহুল। লখনউ সুপার জায়ান্টসের অধিনায়ক এই নিয়ে চারটি আইপিএল মরশুমে ছয় শতাধিক রান করেছেন। ২০১৮ সালে ৬৫৯, ২০২০ সালে ৬৭০, ২০২১ সালে ৬২৬ এবং চলতি আইপিএলে মোট ৬১৬ রান করলেন রাহুল। এর আগে, তিনবার করে ছয় শতাধিক রান করেছেন ক্রিস গেইল ও ডেভিড ওয়ার্নার।