অস্ট্রেলিয়ায় বিপর্যয় গোলাপি বলে টেস্টের আগে কতটা ভাবাচ্ছে জানালেন পূজারা
ভারত-ইংল্যান্ড চার টেস্টের সিরিজ এখন ১-১। এই অবস্থায় আমেদাবাদে নবনির্মিত মোতেরা স্টেডিয়ামে ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে দিন-রাতের টেস্টে মুখোমুখি হবে দুই দল। গোলাপি বলে দেশের মাটিতে বাংলাদেশকে টেস্টে হারালেও গত ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অ্যাডিলেড টেস্টে বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৬ রানে অল আউট হয়ে লজ্জার হারের সম্মুখীন হতে হয় বিরাট কোহলির দলকে। ইংল্যান্ড শিবির সে কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা সাজালেও ওই বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তি হবে না বলেই আত্নবিশ্বাসী চেতেশ্বর পূজারা।
অন্যরকম পরিস্থিতি
অ্যাডিলেডের মতো অবস্থার সম্মুখীন ভারতীয় দলকে আমেদাবাদে হতে হবে না বলে দাবি করে পূজারা বলেন, ওই টেস্টে প্রথম ইনিংসে আমরা এগিয়ে ছিলাম। বল স্যুইং করছিল। একটা খারাপ সেশন সব ওলটপালট করে দিয়ে বিপর্যয় ডেকে আনে। তবে এখানকার পরিবেশ, পরিস্থিতি অন্যরকম। টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা আমার থাকলেও গোলাপি বলে টেস্ট বেশি খেলিনি। যত বেশি খেলব তত অভিজ্ঞতা বাড়বে। তবে আগের টেস্টেও যেমন আমরা পরিকল্পনা সঠিকভাবে প্রয়োগ করেছিলাম, এখানেও গেমপ্ল্যান সঠিকভাবে প্রয়োগ করায় নজর রাখতে হবে। কী ঘটেছে তা মাথায় রাখব না। আমি নিশ্চিত চেনা পরিবেশে আমরা ভালোই খেলব।
পিচ নিয়ে
করোনা পরিস্থিতিতে আমেদাবাদে সেভাবে খেলাই হয়নি। এই টেস্টের আগে সৈয়দ মুস্তাক আলি টি ২০-র কয়েকটি খেলা হয়েছে। উইকেটে ঘাস থাকলেও পূজারা বলেন, টেস্ট শুরু হতে দেরি আছে। তখন কেমন পিচ থাকবে তা বলা সম্ভব নয়। তাছাড়া গোলাপি বলের জন্য এই পিচ কেমন হবে সেটাও দেখার। তবে আমি পিচ নিয়ে কখনোই চিন্তা করি না। তবে শেষ সেশনে ডিউ ফ্যাক্টর হতে পারে। যদিও সাদা বলে আমাদের বোলারদের ডিউ ফ্যাক্টর মোকাবিলার অভিজ্ঞতা আছে। ব্যাটসম্যানরা অনুশীলন করছি। তবে ডিউ ফ্যাক্টর ব্যাটিংয়ে অসুবিধা তৈরি করবে কিনা তা তো সময়ই বলবে। চেন্নাইয়ের উইকেট প্রসঙ্গে পূজারা বলেন, পিচ মোটেই বিপজ্জনক ছিল না। বল ঘুরেছে। তেমন তো আমরা বিদেশে খেলতে গেলে সিম সহায়ক পিচে খেলি, সেখানেও তিন-চারদিনে শেষ হয়ে যায় টেস্ট ম্যাচ। বিদেশের কথা মাথায় রেখে আমরা যেমন গতিময় পিচে খেলার উপযোগী হতে অনুশীলন করি, তেমনই এ ধরনের পিচে খেলতে খেলতে ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞতাও বাড়বে।
আইপিএলে প্রত্যাবর্তন
আইপিএলের আসরে ফিরতে পেরে খুশি পূজারা বলেন, আইপিএলে যুক্ত হতে পেরে সত্যিই ভালো লাগছে। আমাকে নেওয়ার জন্য চেন্নাই সুপার কিংসকে ধন্যবাদ জানাই। আমি সীমিত ওভারের ফরম্যাটে খেলতে চাই। তবে আপাতত বাকি দুটি টেস্টে মনোনিবেশ করছি। আশা করি আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালেও খেলব। টেস্ট সিরিজের পর আইপিএল নিয়ে ভাব। ভারতের ইংল্যান্ড সফর রয়েছে অগাস্টে। তার আগে আইপিএল শেষ হলে কাউন্টিতেই কিছু ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা রয়েছে পূজারার।
নিজের ব্যাটিং নিয়ে
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে একটা হাফ সেঞ্চুরি করলেও চলতি সিরিজে পূজারাকে চেনা ছন্দে পাওয়া যায়নি। ২০১২ সালে শেষবার আমেদাবাদে খেলেছিলেন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে। তখন রাহুল দ্রাবিড়ের অবসরের পর তিনি তিন নম্বরে নিজের জায়গা মজবুত করছিলেন। তাঁর দ্বিশতরানে ভর করে ভারত জিতেছিল ৯ উইকেটে। তবে গত ২৬টি টেস্ট ইনিংসে শতরান করেননি পূজারা। শেষ শতরান ২০১৯ সালে সিডনিতে। নবরূপে সজ্জিত মোতেরায় এখন ১ লক্ষ ১০ হাজার মানুষ খেলা দেখতে পারেন। তবে চলতি সিরিজে ৫০ শতাংশ দর্শক মাঠে থাকবেন। ৯ বছর পর নিজের রাজ্যে আবার টেস্ট খেলতে নামার আগে নিজের ব্যাটিং নিয়ে উদ্বেগ নেই পূজারার গলায়। তিনি বলেন, ভালো শুরু করেও তিন অঙ্কের রান পাচ্ছি না। দ্বিতীয় টেস্টেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে আউট হয়েছি। অনুশীলন করছি, প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করছি শতরানের জন্য খুব বেশি অপেক্ষা করতে হবে না।