ব্যাঘ্র-বিক্রমে পাকিস্তানকে দুরমুশ করে এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি বাংলাদেশ
ব্যাঘ্র-বিক্রমেই এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছল বাংলাদেশ। আরবের মাটিতে পাকিস্তানকে পর্যুদস্ত করে বাংলাদেশ এবার ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারতের।
ব্যাঘ্র-বিক্রমেই এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছল বাংলাদেশ। আরবের মাটিতে পাকিস্তানকে পর্যুদস্ত করে বাংলাদেশ এবার ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারতের। অথচ দিনের শুরুটা বাংলাদেশের পক্ষে সুখর ছিল না। সকাল দেখেই যে সবসময় বোঝা যায় না দিনটা কেমন যাবে, তা এদিন ভালো করেই পাকিস্তানকে বুঝিয়ে দিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের আক্রমণাত্মক বোলিংয়ের সামনে ৯ উইকেটে ২০২ রান করতে সমর্থ হয় পাকিস্তান।
টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ১২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে যখন ধুঁকছে ওপার বাংলার প্রতিবেশীরা, তখন তাদের অতিবড় সমর্থকও ভাবেননি এই ম্যাচে কামব্যাক করতে পারে বাংলাদেশ। কিন্তু ১১ বাঙালির দাঁতে দাঁত চাপা লড়াই দেখল আবুধাবি। আরও স্পষ্ট করে বললে, মুশফিকুর রহিমের হার না মানা মানসিকতাতেই জয়ের মোমেন্টাম পেয়ে যায় বাংলাদেশ।
১২ রানে তিন উইকেট পড়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশকে টেনে তোলেন মুশফিকুর রহিম ও মহম্মদ মিঠুন। দু-দলের মাস্ট উইন ম্যাচে বাংলাদেশ দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে গেল। শেষমেশ এল কাঙ্খিত জয়। পাকিস্তানকে ধরাশায়ী করে জিতল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের ইনিংসের শুরুটাও তেমনই হয়েছিল।
প্রথম ওভারই ধাক্কা মেহেদির। ফের ঝটকা দ্বিতীয় ওভারে। এবার বোলার মুস্তাফিজুর। ওপেনার ফাকহার জামান ও বাবর আজমের উইকেট চলে যাওয়ার পর সরফরাজের আউটে কোমর ভেঙে যায় পাকিস্তানের। পাকিস্তানকে এই অবস্থা থেকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন শোয়েব মালিক ও ইমামুল হক। কিন্তু শোয়েব ফিরতেই লাইন দিয়ে দেন অন্য ব্যাটসম্যানরা। ৪৬ তম ওভারে নবম উইকেটের পতনের পর আর কিছুই করার ছিল না পাকিস্তানের। হার তখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। শেষমেশ ৩৭ রানে পরাজিত হন ইমানুলরা।
এর আগে মুশফিকুর রহিম (৯৯) মিঠুনকে সঙ্গে তিনি বাংলাদেশকে ভদ্রস্থ জায়গায় পৌঁছে দেন। মিঠুন ব্যক্তিগত ৬০ রানের মাথায় আউট হন। ১২ রানে তিন উইকেট হারানোর ১৪৪ রান করে যায় মুশফিকুর-মিঠুন জুটি। মিঠুনের ফিরে যাওয়ার পরই ১০ বলে ৯ রান করে ফিরে যান ইমরুল কায়েস। কিন্তু একদিকে মুশফিকুরের লড়াই চলতেই থাকে। ব্যক্তিগত ৯৯ রানে মুশফিকুর ফিরে যাওয়ার সময়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ১৯৭ উইকেটে। তারপর অবশ্য ৪২ রানের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় তাঁদের ইনিংস।
তবে পুরো ৫০ ওভার খেলতে পারলেন না বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। ১ ওভার ১ বল বাকি থাকতেই বাংলাদশের ইনিংস শেষ। ৪৮.৫ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৯ রান। অর্থাৎ পাকিস্তানের কাছে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ২৪০ রান। এশিয়া কাপে ফাইনালের টিকিট পেতে পাকিস্তানকে করতে হবে ওই রান। কিন্তু মুস্তাফিজুর রহমানের আক্রমণাত্মক বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতে পারেননি পাক ব্যাটসম্যানরা। মুস্তাফিজুর নেন চার উইকেট। মেহেদি নেন দুই উইকেট।
ভারত ইতিমধ্যেই এশিয়া কাপ ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে। এদিনের পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশ ম্যাচ আদতে রূপ নিয়েছে সেমিফাইনালের। সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ২৪০-এর লক্ষ্যমাত্রা রাখে বাংলাদেশ। শেষমেশ পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপ ফাইনালের টিকিট পেয়ে গেলেন মুশফিকুর-মিঠুনরা।
এদিকে মুশফিকুরের আক্ষেপটা রয়েই গেল। ভাগ্যটা শেষ পর্যন্ত সঙ্গ দিল না মুশফিকুর রহিমের। সেই কারণে নড়বড়ে ৯৯ রানেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরতে হল বাংলাদেশের লিটল মাস্টারকে। পাঁজরের হাড় ভাঙা। ব্যাথানাশক ওষুধ খেয়ে নেমেছিলেন মুশফিকুর। কিন্তু শাহিন আফ্রিদির বলে উইকেট রক্ষকের হাতে ধরা পড়ে গেলেন সরফরাজ খান। ফলে সেঞ্চুরিটা মাঠেই ফেলে আসতে হল তাঁকে।