বামেদের 'অনুসরণ' করছেন অনুব্রত! স্বীকারোক্তিতে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি
বামেদের 'অনুসরণ' করছেন অনুব্রত! স্বীকারোক্তিতে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি
গত দুবছর ধরে বিরোধীদের দাবিতে স্বীকৃতি দিলেন অনুব্রত মণ্ডল (anubrata mondal) । ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনের (panchayat election) আগে হোক কিংবা পরে, বিরোধীরা অভিযোগ করেছিল শাসক তৃণমূল (trinamool congress) পঞ্চায়েত ভোট করাতেই দেয়নি। এবার বিরোধীদের সেই অভিযোগেই সুর মেলালেন অনুব্রত মণ্ডল।
২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়নি
নিজের জেলায় বুথ কমিটির সভায় অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়নি। যা হয়েছিল ভুল হয়েছিল। পরেরবার ভোট করানো হবে বলেও জানান তিনি। এই স্বীকারোক্তি দলকে অস্বস্তিতে ফেললেও অনুব্রত মণ্ডলের মতো নেতারা জানেন, এছাড়া উপায় নেই। ২০২১-এর নির্বাচনে কড়া চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে তাদের সামনে।
বুথ সভাপতির অভিযোগ
বীরভূমের সাঁইথিয়ার বুথ কমিটির সভায় কুনুড়ির বুথ সভাপতির কাছে অনুব্রত মণ্ডলের প্রশ্ন ছিল, বুথে ভাল ফল হল না কেন। সেই সময় বুথ সভাপতি বলেন, খারাপ ফলের কারণ পঞ্চায়েত ভোট। সেই সময় সিলেকশন হয়েছিল। এরপরেই অনুব্রত মণ্ডল বলেন ভুল হয়েছিল। পরেরবার ভোট করানো হবে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে বীরভূমের পরিস্থিতি
২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে বীরভূমে জেলাপরিষদের ৪২ টি আসনের মধ্যে ৪২ টিই দখল করেছিল তৃণমূল। এর অধিকাংশই ছিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন। একই অবস্থা ছিল পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে। অধিকাংশ আসনেই তৃণমূলের জয়। আর ভোটের পরে এই জয় নিয়ে অনুব্রত মণ্ডল বলেছিলেন উন্নয়নের জয় হয়েছে।
অনুন্নয়নের অভিযোগ অনুব্রত-র সামনে
মাস কয়েক আগেও অনুব্রত মণ্ডল দাবি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খালি উন্নয়নের কাজ করছেন। আর তাঁর উন্নয়নের কাজে ভরসা করেই অন্য দল থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু বুথ পর্যায়ের সভা শুরু হতেই সামনে এসে পড়ে গ্রাম বাংলার অনুন্নয়নের চিত্রটা। তৃণমূলের বুথ সভাপতিদের কাছে অনুব্রত মণ্ডল প্রশ্ন করেন, কেন বিভিন্ন বুথে পিছিয়ে তৃণমূল। কোনও জায়গায় রাস্তা আবার কোনও জায়গায় ব্রিজ না হওয়ার অভিযোগ উঠে আসে। পাশাপাশি সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগও উঠে আসে তার সামনে।
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে অভিযোগ ছিল বিরোধীদের
অনুব্রত মণ্ডল যেটা আজ স্বীকার করছেন, তা নিয়ে ২০১৮ সালেই অভিযোগ জানিয়েছিল বাম, কংগ্রেস, বিজেপি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসকদলের বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ করেছিল বিরোধীরা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করে বিরোধীরা বলেছিল, তৃণমূলের সন্ত্রাসের কারণে অনেক জায়গাতেই প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা। বহু জায়গায় ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছিল তৃণমূল। সেই সময় এব্যাপারে তৃণমূল তাদের সাফল্য দেখেছিল। বলেছিল বিরোধীরা প্রার্থী দিতে না পারলে, তারা কি প্রার্থী জোগার করে দেবে?
বামেরাও করেছিল ভুল স্বীকার
২০০৮-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর কিংবা ২০০৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পর বামেরাও ভুল স্বপীকার করতে শুরু করেছিল। সেই সময় তাদের ক্যাডারদের ঔদ্ধত্বের কথা স্বীকার করে নিয়ে সংশোধনের পরামর্শ দিয়েছিলেন নেতারা। যদিও তার আর দরকার পরেনি। মানুষই সরিয়ে দিয়েছিল বামেদের। আর ক্ষমতা থেকে সরার পর নন্দীগ্রাম নিয়ে ভুল স্বীকার করেছিল সিপিএম। তবে বামেদের থেকে তৃণমূলের পার্থক্য হল ৪৩ বছরের শাসনের একেবারে শেষে এসে তারা ভুল স্বীকার করেছিল। কিন্তু তৃণমূল তা করছে ৯ বছরের শাসন কালের শেষে।
৬ মাসের অপেক্ষা! পিসির মন্দিরে 'বখরা', চাপ পুলিশ সুপারের, বিস্ফোরক সায়ন্তন বসু