জেলের প্যাশন প্রত্নতত্ত্ব, বাঁচিয়ে রেখেছেন সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য
জেলের প্যাশন প্রত্নতত্ত্ব, বাঁচিয়ে রেখেছেন সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য
পেশায় তিনি জেলে, কিন্তু প্যাশনে আর্কিওলজিস্ট। ১৪ বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে দিনমজুরের কাজ শুরু করেছিলেন। নদীর বাঁধ তৈরি কিংবা মাছ ধরার কাজে প্রবেশ করেন ।
কীভাবে মাথায় আসে এই ভাবনা?
১৬ বছর বয়সে অ্যাপেনডিসাইটিসের চিকিৎসার জন্য তাঁকে কলকাতায় যেতে হয় । তারই মাঝে সময় কাটানোর উদ্দেশ্যে তিনি একবার জাদুঘর দেখতে যান। আকস্মিকভাবে সেই থেকেই তৈরি হলো প্রত্নতত্ত্বের প্রতি আগ্রহ ।
কী রয়েছে তাঁর সংগ্রহে
গত ৩০ বছরে বিশ্বজিৎ বাবু মাছ ধরার সময় সুন্দরবনের জঙ্গলের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১০ হাজারের এরও বেশি প্রত্নবস্তু সংগ্রহ করেছেন। সংগ্রহের মধ্যে রয়েছে হরিণের শিং এর ফসিল,ভাস্কর্য, পাথরের হাতিয়ার, মুদ্রা, পোড়ামাটির বস্তু, অলঙ্কার এবং প্রচুর মৃৎপাত্র । বেশকিছু আইটেম তিন /সাড়ে তিন হাজার বছর কিম্বা তারও অধিক সময়ের পুরনো। কিছু গুপ্ত (৩২০-৫৪০ খ্রিস্টাব্দ) এবং গুপ্ত-পরবর্তী সময়ের । আরো কিছু রয়েছে ব্রাহ্মী এবং প্রাথমিক ব্রাহ্মী শাস্ত্র, মৌর্য (প্রায় ৩২১ থেকে ১৮৫ খ্রিস্টপূর্ব), কুষাণ (খ্রিস্টপূর্ব প্রথম থেকে তৃতীয় শতাব্দী) এবং শুঙ্গ (প্রায় ১৮৫ থেকে ৭৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) সময়কালের নির্দেশক। তাঁর এই সংগ্রহের গুরুত্ব বুঝে ভারত সরকারের আর্কিওলজিকাল বিভাগ স্মারক দিয়ে সম্মানিত করেন।
শর্মী চক্রবর্তীর বিশ্বজিৎ বাবুর প্রতি একটি মন্তব্য , "His work indicates that the history of the Sundarbans goes back to the 1st or 2nd century BC, even in areas that still constitute the forests. So, his work is very important,"
বহু গবেষকের গবেষণার উপাদান প্রদানে তিনি সাহায্য করেছেন। তার মাঝেও সহজ মানুষটির সরলতাকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছেন , ঠকিয়েছেন কত অধ্যাপক, গবেষক , স্কলার । বিশ্বজিৎ বাবুর মুখে সেসব কাহিনী শুনলে অবাক হতে হয়। মনে প্রশ্ন ওঠে এমনও হয়! কিন্তু আশ্চর্য , আজও তাঁর আপন ব্যবহারে, বিশ্বাসে, সারল্যে, ঔদার্যে এতটুকু পরিবর্তন আসেনি। মানুষটা এখনও সেই সহজ মানুষই । আর্থিক অনটনের কারণে প্রত্নদ্রব্য গুলির উপযুক্ত সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারছেন না। এবিষয়ে বিশ্বজিৎ বাবু বেশ চিন্তিত।
প্রত্নতত্ত্ব হল বস্তুগত অবশেষের মাধ্যমে প্রাচীন এবং সাম্প্রতিক মানব অতীতের অধ্যয়ন। প্রত্নতাত্ত্বিকরা আফ্রিকায় আমাদের প্রাচীনতম মানব পূর্বপুরুষদের মিলিয়ন বছরের পুরনো জীবাশ্ম অধ্যয়ন করতে পারেন। অথবা তারা বর্তমান নিউ ইয়র্ক সিটিতে ২০ শতকের ভবনগুলি অধ্যয়ন করতে পারে। প্রত্নতত্ত্ব অতীতের ভৌত অবশেষ বিশ্লেষণ করে মানব সংস্কৃতির বিস্তৃত এবং ব্যাপক বোঝার জন্য।
বৈচিত্র্যময় ক্ষেত্র
প্রত্নতত্ত্ব অধ্যয়নের একটি বৈচিত্র্যময় ক্ষেত্র। বেশিরভাগ প্রত্নতাত্ত্বিক বিশ্বের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল বা অধ্যয়নের একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ফোকাস করে। একজন প্রত্নতাত্ত্বিককে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা বিকাশের অনুমতি দেয়। কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক মানুষের দেহাবশেষ (জৈব প্রত্নতত্ত্ব), প্রাণী (প্রাণিবিদ্যা), প্রাচীন গাছপালা (প্যালিওথনোবোটানি), পাথরের হাতিয়ার (লিথিক্স) ইত্যাদি ব্যবহার করেন।
প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলি
কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলি খুঁজে, মানচিত্র বা বিশ্লেষণ করে এমন প্রযুক্তিতে বিশেষজ্ঞ। পানির নিচের প্রত্নতাত্ত্বিকরা মানুষের ক্রিয়াকলাপের অবশিষ্টাংশগুলি অধ্যয়ন করেন যা জলের পৃষ্ঠের নীচে বা উপকূলে থাকে। সাংস্কৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা, "সিআরএম" নামে পরিচিত, প্রত্নতাত্ত্বিকরা ফেডারেল এবং রাষ্ট্রীয় আইন অনুসরণ করার জন্য যে কাজটি করেন তা বোঝায়।
নাসার আর্টেমিস-১ চাঁদে পাড়ি রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে, উৎক্ষেপণের দিনক্ষণ সুনির্দিষ্ট কেন