জোরদার গল্প থাকা চাই, সাড়ে তিন বছর পর ফের ‘আরআরআর’–এ প্রমাণ করলেন রাজামৌলি
জোরদার গল্প থাকা চাই, সাড়ে তিন বছর পর ফের ‘আরআরআর’–এ প্রমাণ করলেন রাজামৌলি
এসএস রাজামৌলি আবার ময়দানে ফিরে এলেন। অ্যাকশন থেকেই শুধু তিনি গায়েব ছিলেন তাই নয়, সাড়ে তিন বছর পর ফিরে বড়পর্দায় আবার মাস্টার ম্যাজিক দেখালেন রাজামৌলি। বাহুবলী–এর পর থেকে দর্শকদের বিরাট প্রত্যাশা রাজামৌলির ওপর তৈরি হয়েছিল। সেই সিনেমাটি কত বাজেটের সেটার ওপর নির্ভর ছিল না। রাজামৌলি সত্যি সেটা বুঝতে পেরেছিলেন বলেই রাম চরণ ও জুনিয়র এনটিআরের মতো ২ জন এ–তালিকাভুক্ত অভিনেতা সহ আরআরআর নিয়ে হাজির হয়েছেন।
সিনেমার গল্প
যুদ্ধের সিনেমায় যা যা দেখা যায় আরআরআ-এও তাই দেখানো হয়েছে। ব্রিটিশ যুগস মিস্টার অ্যান্ড মিসেস স্কট (রে স্টিভেনসন ও আলিসন ডুদে) জোর করে মায়ের থেকে এক শিশুকে আলাদা করে দেন, যিনি আদিলাবাদের গোণ্ড উপজাতির মহিলা। ভীম (জুনিয়র এনটিআর) আদিবাসীদের সুরক্ষার দায়িত্বে রয়েছেন। ভীম সহ তাঁর উপজাতির কিছু সদস্য দিল্লির দিকে রওনা দেন শিশুটিকে উদ্ধার করার জন্য। দিল্লিতে রামারাজু (রাম চরণ) ব্রিটিশের হয়ে পুলিশ অফিসারের কাজে নিযুক্ত। তাঁকে গোণ্ড উপজাতিদের আটকাতে বলা হয় এবং এরজন্য তাঁর পদোন্নতি করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। রামারাজু কি তাঁর মিশনে শপল হবেন? রামারাজুর অতীত কি? ভীম কী পারবে শিশুটিকে উদ্ধার করতে? আরআরআর এই সব প্রশ্ন সহ আরও অনেক কিছুর উত্তর দিতে প্রস্তুত।
মূল গল্প গুরুত্বপূর্ণ
এসএস রাজামৌলি আবারও প্রমাণ করেছেন যে মূল গল্পটি গুরুত্বপূর্ণ। শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় পাঞ্চ থাকতে হবে উচ্চতর মাত্রায়। আরআরআর হল তাঁর এবং তাঁর লেখক বাবা বিজয়েন্দ্র প্রসাদের হাতে থাকা মজবুত একটি গল্প। দারুণ প্লট ও গায়ের লোম খাঁড়া হয়ে যাওয়া আবেগের সিক্যুয়েন্স সহ, আরআরআর একটি যুদ্ধের প্রেক্ষাপট যা আমাদেরকে স্বাধীনতা-পূর্ব যুগে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
জুনিয়র এনটিআর বনাম রাম চরণ
ব্রিটিশরা ভারতীয়দের বীরত্ব ও সাহস প্রদর্শনের জন্য কতটা নির্মম ছিল তা দেখানো থেকে শুরু করে ছবিটির মধ্যে সব ধরনের মশলাই রয়েছে। যা সবচেয়ে বেশি নাড়া দেয় তা হল জল বনাম আগুন। জুনিয়র এনটিআর তথা ভীম হল জলের রূপক। তাঁর চরিত্রকে পরিস্থিতি অনুযায়ী 'প্রবাহিত' করতে হবে যাতে সে শিশুটিকে উদ্ধার করতে পারে। রামানুজের ভূমিকায় থাকা রামচরণ হলেন জ্বলন্ত শিখা। দর্শকরা তাঁর চোখে রাগ দেখতে পারবে।
রামায়ণের মূল্যায়ণ
রাজামৌলি পৌরাণিক গল্পের একনিষ্ঠ একজন ভক্ত, বিশেষ করে রামায়ণ ও মহাভারতের। এমনকি আরআরআর-তেও, আমরা দেখতে পাচ্ছি কিভাবে তিনি রামায়ণকে মূল্যায়ন করেন কারণ তিনি ভগবান রাম এবং সীতার জীবনের চারপাশে রাম চরণ এবং আলিয়া ভাটের চরিত্রকে নিয়ে গিয়েছেন।
অভিনয় অসাধারণ
রামচরণ ও জুনিয়র এনটিআর তাঁদের জীবনের সেরা অভিনয় দেখিয়েছেন এই সিনেমাতে। যদিও, জুনিয়র এনটিআর-এর ভূমিকার তুলনায় রাম চরণ সামান্যতম। রাম চরণের চরিত্র রোলার কোস্টারে করে আপনাকে অতাতে নিয়ে যাবে, যেখানে প্রকাশ্যে আসবে তাঁর আগের ঘটনা এবং তখন আপনি তাঁর চোখে থাকা রাগকে বুঝতে পারবেন। অন্যদিকে, জুনিয়র এনটিআরের চোখ কথা বলবে। তিনি যখন শিশুটিকে উদ্ধার করার পরিকল্পনা করেন, তখন তার আকুল চোখ আপনি অনুভব করবেন। সীতার চরিত্রে আলিয়া ভাট পার্শ্ববর্তী ভূমিকার চেয়ে ক্যামিও চরিত্র বেশি মনে হবে। তবে পর্দায় তাঁর চরিত্র সীমিত হলেও বড় পাঞ্চ মেরে গিয়েছেন অজয় দেবগণ।
৩ ঘণ্টা ধরে বসে দেখার মতো নয়
যাইহোক, আরআরআর একটি নিখুঁত সিনেমা নয়। ফিল্মের দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কয়েকটি স্টান্ট সিকষুয়েন্স রয়েছে যা আপনাকে উত্তেজিত করবে না। স্টান্ট সিক্যুয়েন্সের চেয়ে বেশি, আবেগের সংযোগ অনুপস্থিত, যা সবাইকে অস্থির করে তুলবে। সিনেমাটি ৩ ঘণ্টা দীর্ঘ এবং যদিও বেশ কিছু অসাধারণ মুহূর্ত রয়েছে যা আপনাকে পর্দায় আটকে রাখবে। আর যুদ্ধের কিছু দৃশ্য যা আমরা অনেক সিনেমাতেই দেখে থাকি।
ব্যাকফুটে গাঙ্গুবাঈ, বচ্চন পাণ্ডে, আরআরআর-কে টক্কর দিয়ে ব্লকবাস্টার খেতাব 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস'এর