
রিমেক ‘জার্সি’তে শাহিদ কাপুরের আবেগভরা ইনিংস ও অভিনয় মুগ্ধ করবে দর্শকদের
রিমেক সিনেমার ক্ষেত্রে দু’টি বিষয় হতে পারে। নয়তো এটা ভালো হবে এবং কিছু ক্ষেত্রে আসল সিনেমার চেয়েও ভালো হয় অথবা তা একেবারে পাতে দেওয়ার মতো নয়। ২০২২ সালে অভিনেতা সাহিদ কাপুরের প্রথম মুক্তি পাওয়া সিনেমা, যা একই পরিচালকের হাতে তৈরি একই নামের ২০১৯ সালের সিনেমা, যা ভালো এবং মন্দের মাঝখানে ঝুলে রয়েছে। আপনি যদি নানী সিনেমাটি দেখে থাকেন, তাহলে এই সিনেমার প্রত্যেকটা দৃশ্যই আপনার চেনা মনে হবে। আর যদি আপনি জার্সি দিয়েই শুরু করেন তবে ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করবেন।

জার্সি–এর গল্প
গোটা বিশ্বের কাছে জার্সি সিনেমাটি ক্রিকেট নিয়ে হলেও এর ভেতরে রয়েছে বাবা ও ছেলের মধ্যেকার সুন্দর একটি গল্প। এটি একটি দ্বিতীয় সুযোগের গল্প, প্রতিকূলতা সত্ত্বেও মানুষের আত্মাকে বাঁচিয়ে রাখার এবং তাঁর স্বপ্নকে প্রকাশ করার জন্য ত্যাগ স্বীকারের গল্প। এই সিনেমায় শাহিদ কাপুরকে দেখা যাবে ৩৬ বছরের ক্রিকেটার অর্জুন তালওয়ারের প্রধান চরিত্রে, যিনি তাঁর স্ত্রী (ম্রুনাল ঠাকুর) ও সন্তান (রণিত কামরা)-কে নিজের সবকিছু দুনিয়া বানাতে গিয়ে খেলা ছেড়ে দেন। তাঁর খেলা থেকে এক ব্যক্তিকে বের করে আনলেও ব্যক্তির মধ্যে থেকে খেলাকে বের করতে পারবেন না। শাহিদ কাপুরের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছিল। জীবনে অপ্রত্যাশিত মোড় আসে এবং অর্জুনকে আবার সেই পুরনো পিচে ফিরিয়ে দেয়। যদিও এবার পরিস্থিতি আলাদা এবং প্রত্যাশাগুলিও অনেক উচ্চ। বয়স ও স্ত্রী-সন্তানের প্রত্যাশা পূরণের জন্য সংঘর্ষ করতে গিয়ে, অর্জুন জীবনের সবচেয়ে বড় লড়াইয়ের মুখোমুখি হন। অর্জুন ছক্কা হাঁকাতে পারবে নাকি জীবনের দ্বিতীয় ইনিংসে ক্লিন বোল্ড হবেন সেটাই বলবে জার্সি।

পরিচালকের কৃতিত্ব
পরিচালক গৌতম তিন্নানুরি প্রকৃত সিনেমার প্লটের সঙ্গে কোনও বোঝাপড়া করেননি এবং সিনেমা যত এগোবে ততই আপনি বুঝতে পারবেন এর চরিত্রগুলি সবই উত্তর ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত। জার্সি চিরাচরিতভাবে ক্রীড়ামূলক সিনেমা নয়, যেখানে চার বা ছয় মারলেই হাততালির গুঞ্জন বা অত্যাধিক প্রশংসা পাওয়া যাবে। এই সিনেমার গল্প অত্যন্ত গুরুতর এবং এই সিনেমার গভীরে পৌঁছাতে হলে আপনাকে অবশ্যই সিনেমাটি দেখতে হবে। অর্জুনের রাগ, তাঁর অপরাধবোধ, তাঁর জীবনের প্রতি ব্যর্থতা এবং যতই চরিত্রটি এগিয়েছে শাহিদ ততই অর্জুনের চরিত্রে প্রবেশ করেছে। শাহিদ অর্জুনের যন্ত্রণাকে দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তবে এতে অবশ্যই পরিচালকের কৃতিত্বই দিতে হয়।

অভিনয়
অর্জুনের সংঘর্ষ-বেদনা, জীবনের সঙ্গে লড়াই ফুটিয়ে তুলতে একেবারে অনবদ্য শাহিদ কাপুর। হায়দার ও কামিনের পর এই সিনেমায় তাঁর অভিনয় প্রশংসার দাবি রাখে। অর্জুনের স্ত্রী বিদ্যার ভূমিকায় ম্রুনালের অভিনয় সত্যিই সুন্দর, কখনও ঠাণ্ডা আবার কখনও গরম মেজাজের বিদ্যা, যিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক রাখতে ব্যর্থ হন ভাগ্যের পরিহাসে। বিদ্যা ও অর্জুনের ভালোবাসা কীভাবে অভাব-সংঘর্ষ ও ঝগড়ায় পরিণত হয় সেটাই দেখা যাবে। শাহিদ ও বিদ্যার ছেলের চরিত্রে রণিত কামরাও সুন্দর অভিনয় করেছেন। কোচ হিসাবে পঙ্কজ কাপুরের অভিনয়ও যথাযথ ছিল।

কেন দেখবেন জার্সি
অন্যদিকে, জার্সি খুব দীর্ঘ একটি সিনেমা এবং নিজের গতির সঙ্গে লড়াই করছে, বিশেষ করে সিনেমার প্রথমার্ধ যথেষ্ট দীর্ঘ। অর্জুনের সঙ্গে পরিচয় করে দেওয়ার পর সে কেন এত অসহায় ও দুঃখিত তা বোঝার কৌতুহল তৈরি করে দেবে দর্শকদের মধ্যে। তবে ক্লাইম্যাক্সে বড্ড তাড়াহুড়ো করা হয়েছে, অর্জুনকে ঠিক মতো বোঝার আগেই সিনেমা শেষ হয়ে যায়। এছাড়াও, দ্বিতীয়ার্ধে ক্রিকেটের দৃশ্যগুলি খুব একটা দর্শকদের মন জয় করতে পারবে না। তবে জার্সি হল শাহিদ কাপুরের একটি কঠিন প্রচেষ্টা, এবং এটি আবারও একজন অভিনেতা হিসাবে তাঁর দক্ষতা প্রমাণ করে। অভিনেতার ভক্তদের জন্য ছবিটি অবশ্যই দেখার বিষয়।
অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তীর প্রিয় খাবার কী জানেন? শুনলে অবাক হবেন আপনিও