'হ্যাঁ-আমার স্তন আছে', তাঁর সমালোচকদের এভাবেই জবাব দিলেন অভিনেত্রী শামা সিকান্দর
হতাশায় আত্মহত্যা করতে চলেছিলেন তিনি। কিন্তু, পরিবারের সদস্যরা তাঁকে ঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ায় কোনওমতে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন শামা। আজ সেই অন্ধকার জীবন অতীত তাঁর কাছে।
কিছু ভালো লাগত না শামা সিকান্দরের। তাঁর চারপাশটা মনে হত অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে। আর ২০১২ সালে ধরা পড়ে চার বছর ধরে বাইপোলার ডিসঅর্ডারে ভুগছেন শামা সিকান্দার।
[আরও পড়ুন:শরীরে 'কার্ভ' না থাকলে মহিলারা পকেটহীন জিনস-এর মতো! সৈকতে উষ্ণতা ছড়িয়ে বললেন শামা]
হতাশায় আত্মহত্যা করতে চলেছিলেন তিনি। কিন্তু, পরিবারের সদস্যরা তাঁকে ঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ায় কোনওমতে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন শামা। আজ সেই অন্ধকার জীবন অতীত তাঁর কাছে। জীবনের আলোয় ফিরে আসা শামা এখন বুঝেছেন সময়ের আগে সবশেষ হওয়াটা অর্থহীন।
১৯৯৯ সালে আমির খানের সঙ্গে অভিনয়
ফিল্মি স্কুলের পাঠ শেষ করতে না করতে মিলেছিল সুযোগটা। 'মন' ছবিতে অভিনয় করার সুযোগ মিলেছিল। এই ছবির নায়ক-নায়িকা ছিলেন আমির খান ও মণিষা কৈরালা। শামার অভিনীত চরিত্র ছোট হলেও তাঁর সৌন্দর্য অনেকেরই নজর টেনেছিল।
'ইয়ে মেরি লাইফ হ্যায়'-এ পরিচিতির আলোয়
২০০৩ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ছোট পর্দায় সম্প্রচারিত হয়েছিল এই হিন্দি সিরিয়াল। এই ধারাবাহিকের দৌলতেই অভিনেত্রী হিসাবে পরিচিতি পেয়েছিলেন শামা।
রাজস্থানের মেয়ে শামা
১৯৭৯ সালে জন্ম শামার। ছোটবেলা কেটেছিল রাজস্থানের মারাকানায়। বাবা ছিলেন মার্বেলের ব্যবসায়ী। কিন্তু, সফল ব্যবসায়ী ছিলেন না তিনি। নিজেদের মাথার উপরে স্থায়ী ছাদও ছিল না শামা এবং তাঁর পরিবারের।
শৈশবে রোজ খাবারও জুটত না
অর্থ উপার্জনের জন্য শামার বাবা পরিবারের সকলকে সঙ্গে করে নিয়ে মুম্বই চলে এসেছিলেন। কিন্তু, অভাব-অনটনই ছিল তাঁদের নিত্য সঙ্গী। শামা ও তাঁর পরিবারের জীবনে এমন দিনও কেটেছে যেদিন তাঁরা এক ছটাক খাবারও জোটেনি। এই নিদারুণ অভাব-অনটনের মধ্যেই উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে অ্য়াক্টিং স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন শামা।
'মন' ছাড়াও আরও কয়েকটি ছবিতে অভিনয়
আমির খানের ছবিতে অভিনয় করার আগেও ১৯৯৮ সালে 'প্রেম আগন' বলে একটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন শামা। এছাড়াও ২০০২ সালে 'অংশ: দ্য ডেডলি পার্ট' বলেও একটি ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।
টেলি অভিনেত্রী হিসাবে একাধিক পুরস্কার
২০০৪ সালে 'ইন্ডিয়ান টেলিভিশন অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস'- এর অনুষ্ঠানে 'গ্রেট ফেস অফ দ্য ইয়ার' ও 'বেস্ট ডেবিউ'-এর পুরস্কার পেয়েছিলেন শামা। ২০০৫ সালে সোনি টিভি-তে ক্রিটিকস চয়েসে 'বেস্ট অ্যাকট্রেস' এবং 'বেস্ট চয়েস'-এর সম্মানে নির্বাচিত হন।
নিজস্ব প্রোডাকশন সংস্থা
২০১২ সালে শামা একটি প্রোডাকশন সংস্থাও খুলেছেন। কিন্তু, এখনও ,পর্যন্ত এই সংস্থা কোনও প্রজেক্ট লঞ্চ করেনি।
নিউ ইয়ারে বিকিনি পোস্টে উষ্ণতা
নিউ ইয়ার সেলিব্রেশনে সিডনি বিচে বিকিনি পরা বেশকিছু ছবি পোস্ট করেন শামা। এই ছবিগুলি এতটাই উষ্ণতায় ভরা ছিল যে শামাকে ট্রোলডও হতে হয়।
ট্রোলড-এ ক্ষিপ্ত শামা
সাধারণ মানুষই নয় তাঁর বিকিনি পরিহিত ছবি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বেশকিছু অভিনেত্রী। এঁদের পাল্টা তোপ দেগেছেন শামা।
|
'হ্যাঁ, আমার স্তন আছে'
এমনই মারাত্মক প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন শামা। তাঁর বিকিনি পরিহিত ছবি বিতর্কে শামা সাফ জানিয়েছেন, 'হ্য়াঁ, আমার স্তন আছে এবং এগুলি সত্যিই সুন্দর।' তাঁকে যারা ট্রোল করেছেন তাঁদের উদ্দেশে শামা বলেছেন, 'অনেকে আমার বিকিনি পরা ছবি দেখে আমার শরীরকে নানাভাবে ব্যখ্যা করেছেন। এমনকী, আমার শরীরের প্রাইভেট পার্টসজকে নানা নামও দিয়েছেন। এগুলি আমার এবংআমি এদের ভালোবাসি।'
শামা এখন অনেক সাহসী
জীবনের বহু চড়াই-উতরাই দেখে বড় হওয়া শামা বুঝে গিয়েছেন জীবনের আসল মানে। নিজের ব্যক্তিত্বকে সঠিকভাবে মেলে ধরাটাই তাঁর জীবনের এখন মূল লক্ষ্য। আর একথা তিনি বুঝেছেন আত্মহত্যার চেষ্টার পরে।
জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণায় আত্মহত্যার চেষ্টা
সংঘর্ষ। ছোট থেকে নিদারুণ গরিবী আর জীবনে টিকে থাকার লড়াই করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন শামা। মনে হচ্ছিল জীবনটাই শেষ হয়ে গিয়েছে। বেঁচে থাকাটাই অর্থহীন। বাইপোলার ডিজিজে ভোগা শামা তাই আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন।
জীবনের মানে বুঝতে পারা
এ
যেন
অন্ধকারে
হারিয়ে
হারিয়ে
যেতে
যেতে
আলোয়
ফেরা।
মৃত্যুর
সেইক্ষণকে
উপলদ্ধি
করেছিলেন
শামা।
বুঝেছিলেন
জীবনের
মানে
কারোর
মতো
করে
নিজেকে
সাজিয়ে
নেওয়া
হয়।
নিজের
জীবনকে
নিজের
মতো
করে
সাজিয়ে
তোলাটাই
মানবজীডবনের
লক্ষ্য।
ব্যর্থতা
আসতেই
পারে।
কিন্তু
তা
সব
নয়।
নিজে
বাঁচে
নিজের
মতো
করে।
নিজের মতোই করে বাঁচছেন শামা
একটা সময় যে শামা অভিনয় জগতের ইঁদুর দৌঁড়ের ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছিলেন, সেই তিনি এখন টেলিভিশন পর্দার এক জনপ্রিয় মুখ। ডিজিটাল ওয়েব সিরিজগুলির মুখ্য চরিত্রেও এখন তাঁর নাম বিবেচিত হচ্ছে। জীবনটা এমনই। সেটা শামা-র থেকে কে বেশি ভালো বুঝবেন।
শামা এখন শুধু এগোবেন
তিনি জানেন তাঁর লক্ষ্য কি। তাই হাজারো ট্রোল-এও শামা তাঁর লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হবেন না। যে মানুষ মৃত্যুর ক্ষণকে উপলদ্ধি করে তিনি আর কীসে ভয় পাবেন। তাই শামা যে আরও সাহসী হবেন এবং আগামিদিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলবেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই।