ঠাট্টার জন্য অস্কার মঞ্চে সঞ্চালককে চড়! কিন্তু কেন চুল উঠে গিয়েছে স্মিথ-পত্নী জাডার?
কেন চুল উঠে গিয়েছে জাডার?
৯৪ তম অস্কার মঞ্চে দাঁড়িয়ে কমেডি করছিলেন সঞ্চালক। আচমকাই মঞ্চে উঠে সজোরে সেই সঞ্চালককে চড় মারতে দেখা যায় জনপ্রিয় অভিনেতা উইল স্মিথকে। আচমকা এই জাতীয় ঘটনায় সবাই হতবাক হয়ে পড়েন। আর এই মুহূর্তে যা গোটা বিশ্বের মূল চর্চার বিষয়। কিন্তু কেন সঞ্চালক ক্রিস রকের সঙ্গে এই রকম ব্যবহার করলেন অভিনেতা? কী হয়েছে উইল স্মিথের স্ত্রী জাডার?
উইল স্মিথের ব্যবহার
৯৪ তম অ্যাকাডেমি পুরস্কারের আসর বেশ মজার মজার কথা বলে জমিয়ে রেখেছিলেন সঞ্চালক তথা বিখ্যাত কমেডিয়ান ক্রিস রক। কিন্তু আচমকাই অভিনেতা উইল স্মিথের স্ত্রীকে নিয়ে রসিকতা শুরু করেন সঞ্চালক। উইল স্মিথের স্ত্রী জাডা পিঙ্কেট অ্যালোপেশিয়া নামে এক রোগে আক্রান্ত। যার জেরে জাডা পিঙ্কেটের মাথার চুল কম। স্ত্রীর রোগ নিয়ে এই অসম্মান মেনে নিতে পারেননি অভিনেতা। তাই দর্শক আসন থেকে মঞ্চে উঠে সপাটে চড় কষান সঞ্চালকের গালে। এই ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই সেরা অভিনেতার অস্কার পান উইল স্মিথ। মঞ্চে পুরস্কার নিতে উঠে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন অভিনেতা। তিনি নিজে জানান, স্ত্রীকে তিনি খুব ভালোবাসেন। তাকে অসম্মান করলে তিনি মেনে নেবেন না।
অসুস্থ জাডা পিঙ্কেট
হলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় সিনেমা 'মেন ইন ব্ল্যাক' খ্যাত অভিনেতা উইল স্মিথের স্ত্রী জাডা পিঙ্কেট ২০১৮ সালে 'রেড টেবিল' টক শো সিরিজে তাঁর এই অবস্থা সম্পর্কে প্রথম প্রকাশ্যে এনেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, যখন প্রথম অ্যালোপেসিয়া শুরু হয়েছিল, রোগটিকে মোকাবেলা করা অত্যন্ত কঠিন ছিল। স্নানে সময় মুঠো মুঠো চুল উঠে আসত তাঁর। চুল এতটাই পড়ে যাচ্ছিল, তারপর তিনি চুল কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। আর তা নিয়েই এইদিন ঠাট্টা করছিলেন ক্রিস রক। যার মূল্য চড় খেয়ে দিতে হল তাঁকে।
অ্যালোপেসিয়া কী
উইল স্মিথের স্ত্রী জাডার রোগ নির্ণয় হয় ২০১৮ সালে। তার পর থেকে চিকিৎসা চলছে তাঁর। কিন্তু কী এই বিরল রোগ অ্যালোপেসিয়া? মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অফ হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস সূত্রে খবর, অ্যালোপেসিয়া ল এমন একটি রোগ তা, চুলের ওপর এফেক্ট ফেলে। চুলের ফলিকলকে আক্রমণ করে এবং চুলের ক্ষতি করে। রোগটি সাধারণত মাথা ও মুখের ওপর প্রভাব ফেলে। মানুষের অনেক সময়ই চুল পড়ে। তা কখনো স্বল্প, আংশিক হয়। আবার কখনও ব্যাপকভাবে চুল পড়ে। তা কখনো বাহ্যিক আবার কখনো আভ্যন্তরীণ কারণে হয়ে থাকে। কিন্তু অ্যালোপেশিয়ায় আক্রান্ত হলে চুলের ক্ষতি হয় ব্যাপকভাবে। তবে অ্যালোপেসিয়া আক্রান্তরা সুস্থই হন।
অ্যালোপেসিয়া নিয়ে কিছু কথা
সাধারণত এটা এক ধরনের অটো ইমিউন ডিজিজ। কোনও কারণে শরীরের নিজস্ব ইমিউন সিস্টেম অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা মাথার হেয়ার ফলিকলদের ধ্বংস করে দেয়। ফলে চুল তো ঝরে পড়েই, নতুন করে চুল গজাতেও পারে না। বিষয়টি বংশগত বা পরিবেশগত কারণে হয়ে থাকে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা চুল পড়ার অবস্থাকে তিন প্রকারে শ্রেণীবদ্ধ করেছেন-
১) প্যাচি- সাধারণভাবে দেখা যায় মাথায় বা শরীরের কোন একটি অংশে প্রমাণ আকারে চুল পড়ে।
২) টোটালিস- এই ক্ষেত্রে মাথার ত্বকের সম্পূর্ণ বা অর্ধেক চুল পড়ে যায়।
৩) ইউনিভার্সালিস: এটি অত্যন্ত বিরল। মাথার ত্বক, মুখ এবং শরীরের বাকি অংশে সম্পূর্ণ বা প্রায় সম্পূর্ণ চুল পড়ে যায়।
ছবি সৌ:jadapinkettsmith/ইনস্টাগ্রাম
সঞ্চালককে সপাটে চড় মারলেন উইল স্মিথ, তবে কি অস্কার খোয়াবেন তিনি?