আগের দিন রাতে গুগলে কী সার্চ করেন সুশান্ত, নয়া তথ্য তুলে আনল মুম্বই পুলিশ
আগের দিন রাতে গুগলে কী সার্চ করেন সুশান্ত, নয়া তথ্য তুলে আনল মুম্বই পুলিশ
সুশান্ত কাণ্ডের তদন্তে আসা বিহার পুলিশের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে মুম্বই পুলিশ, অভিযোগ উঠেছে এমনই। এই অভিযোগের পরই নড়েচড়ে বসেছে মুম্বই পুলিশ এবং কমিশনার পরম বীর সিং সোমবার সুশান্ত কাণ্ডের তদন্তের অগ্রগতি সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন।
গুগলে অনুসন্ধান
পরম বীর সিং জানিয়েছেন যে সুশান্ত সিং রাজপুত হতাশায় ভুগছিলেন কারণ তাঁর নাম জড়ানো হয়েছিল তাঁর প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা সালিয়ানের সঙ্গে। সুশান্তের মৃত্যুর পাঁচদিন আগে মারা যান দিশা এবং দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়। এর সঙ্গে কমিশনার আরও যোগ করে জানান যে সুশান্ত তাঁর মৃত্যুর আগে নিজের নাম গুগলে অনুসন্ধান করে দেখেছিলেন যে কী ধরনের খবর তাঁকে নিয়ে লেখা হয়েছে। তিনি গুগলে ‘যন্ত্রণাবিহীন মৃত্যু', ‘সিজোফের্নিয়া' ও ‘বায়পোলার ডিজঅর্ডার' লিখে অনুসন্ধান করেছিলেন। মুম্বই পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘তাঁর মৃত্যুর আগের রাতে প্রায় দু'ঘণ্টা নিজের নাম গুগলে দিয়ে সার্চ করেন তিনি।'
দিশা সালানির মৃত্যুর পাঁচদিন পর সুশান্তের মৃত্যু
প্রসঙ্গত, সুশান্তের প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা সালিয়ান তাঁর মৃত্যুর পাঁচদিন আগেই মারা যান। দিশার মৃত্যু দুর্ঘটনাজনক বলে মামলা করা হয়। মুম্বই পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘দিশার মৃত্যুর আগের দিন রাতে তাঁর হবু বরের বাড়িতে পার্টি চলছিল। দিশা আত্মহত্যা করেন ভোর ৩টের সময়। এটা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে। দিশার হবু বর সহ পাঁচজন ওই পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন। আরও চারজন সেখানে ছিলেন, কিন্তু কোনও রাজনৈতিক নেতা উপস্থিত ছিলেন না।' প্রসঙ্গত, ওই পার্টিতে রাজনৈতিক নেতা উপস্থিত ছিলেন বলে গুজব রটলেও তা স্পষ্ট অস্বীকার করা হয়েছে মুম্বই পুলিশের পক্ষ থেকে।
বিহার পুলিশের তদন্তের এখতিয়ার নেই
মুম্বই কমিশনারের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, ‘সুশান্ত কাণ্ডের তদন্তের জন্য বিহার পুলিশের কোনও এখতিয়ার নেই, আমরা এ বিষয়ে আইনি পরামর্শ নিচ্ছি। আমরা কাউকে ক্লিন চিট দিইনি, কিন্তু অভিযোগ (কে কে সিংয়ের) আমাদের কাছে আসেনি।' বিহার আইপিএসকে জোর করে কোয়ারেন্টাইনে রাখার অভিযোগ প্রসঙ্গে কমিশনার বলেন, ‘আমাদের কোনও অফিসারকে কোয়ারেন্টাইনে রাকার ভূমিকা নেই, বিএমসি এই কাজ করেছে।' পাটনা পুলিশের কাছে সুশান্তের পরিবারের অভিযোগ প্রসঙ্গে কমিশনার বলেন, ‘১৬ জুন তাঁদের সই করা বয়ানে স্পষ্ট করে সুশান্তের পরিবার জানিয়েছেন যে তাঁদের কারোর ওপর কোনও সন্দেহ নেই।'
রিয়া–সুশান্তের সম্পর্কের সমীকরণ
সুশান্তের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তী, যিনি সুশান্তের সঙ্গেই তাঁর বাড়িতে ছিলেন এবং অভিনেতার মৃত্যুর ৬ দিন আগে ৮ জুন তিনি ওই বাড়ি ছেড়ে চলে যান। এ প্রসঙ্গে মুম্বই পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘সুশান্তের বাড়ি ছাড়েন রিয়া ৮ জুন কারণ সুশান্ত অবসাদে চলে গিয়েছিলেন। তাঁর মানসিক অবস্থাও স্থিতিশীল ছিল না। সুশান্তের বোনও এসেছিলেন এরপর তাঁর বাড়িতে, কিন্তু তিনিও ১৩ জুন চলে যান কারণ তাঁর মেয়ে বাড়িতে একা ছিলেন এবং তাঁর পরীক্ষাও ছিল, বয়ানে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।' রিয়া এবং সুশান্তের সম্পর্ক নিয়েও তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে তাঁদের খোঁজ খবর সম্পর্কে কমিশনার বলেন, ‘রিয়ার সঙ্গে সুশান্তের পরিবারের কিছু সমস্যা ছিল। আমরা রিয়ার বয়ান দু'বার রেকর্ড করেছি। আমরা লক্ষ্য করে দেখেছি যে তাঁদের সম্পর্কে অনেক সমস্যা ছিল। রিয়া জানিয়েছেন তাঁরা কীভাবে সম্পর্কে জড়ালেন। তিনি সুশান্তের মানসিক অবস্থা ও তার সঙ্গে জড়িত ঘটনাও জানিয়েছেন। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনও পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। আমরা তাঁদের ইউরোপ সফরও খতিয়ে দেখেছি'। জানা গিয়েছে যে, ইউরোপ সফর থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবরে তাঁরা ফেরেন এবং এরপর থেকেই সুশান্ত ছিক ছিলেন না।
পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি মুম্বই পুলিশ
মুম্বই পুলিশ এও স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে তারা সুশান্তের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি। কমিশনার বলেন, ‘আমরা সুশান্তের বোন প্রিয়াঙ্কা সিংকে ফোন করি আবার। কিন্তু তাঁর স্বামী সিদ্ধার্থ জানান যে তিনি এখন কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।' প্রসঙ্গত, গত ১৪ জুন মুম্বইয়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় সুশান্তের ঝুলন্ত দেহ। এরপর তদন্তে নামে মুম্বই পুলিশ।
সুশান্ত কাণ্ডে নতুন মোড়, কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হল পাটনার এসপি বিনয় তিওয়ারিকে, নিন্দা নীতীশ কুমারের