ফক্সক্যাচার থেকে আনব্রোকেন, অলিম্পিক নিয়ে সেরা হলিউড সিনেমাগুলি দেখে নিন এক ঝলকে
ফক্সক্যাচার থেকে আনব্রোকেন, অলিম্পিক নিয়ে সেরা হলিউড সিনেমাগুলি দেখে নিন এক ঝলকে
বছরের পর বছর একাধিক অলিম্পিকের উজ্জ্বল মুহূর্ত নিয়ে তৈরি হয়েছে অস্কারে যাওয়ার মতো হলিউড সিনেমা। জরুরি নয় যে সেগুলি স্বর্ণপদক জয়ের মুহূর্তই হতে হবে। কিন্তু এই অলিম্পিকে এমন অনেক অ্যাথলেটিক ও ক্রীড়াবিদ রয়েছেন যাঁরা এই খেলার সংবেদনশীল রোলার কোস্টার হিসাবে পরিচিত।
ফক্সক্যাচার (২০১৪)
আমেরিকান কোটিপতি জন এলিউথার ডু পন্ট এবং তাঁর টিম ফক্সক্যাচার, যা প্রথমে আমেরিকান কুস্তিবিদদের প্রচারের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সমস্ত ভুল কারণের জন্য আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছিল। কুস্তিবিদ ডু পন্টের সঙ্গে সমীকরণ করে ১৯৮৪ সালের লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকের স্বর্ণ পদক-জয়ী শুল্টজ ব্রাদার্স ডেভ ও মার্ক, এই ত্রয়ীর ভূমিকায় ফক্সক্যাচার কুস্তিবিদদের পরবর্তী পর্যায়ে পৌঁছাতে সহায়তা করেছিল। তবে মার্ক শুল্টজ তাঁর আরও দক্ষ ভাইদের মধ্যে ছাপিয়ে গিয়েছিল। ১৯৮৮ সালে সিওল গেমে তাঁর সফর ডু পন্ট ও ডেভের সহায়তায় শুরু হয়। কিন্তু তাঁকে পরে গুলি করে খুন করা হয়েছিল। ২০১৪ সালে মুক্তি পাওয়া একাধিক অভিনেতা সহ এই সিনেমাটি দারুণ সফল হয়েছিল। স্টিভ কারেল, চ্যানিং টাটাম ও মার্ক র্যাফেলো অভিনয় করেছিলেন এই ছবিতে।
চ্যারিওথ অফ ফায়ার (১৯৮১)
ব্রিটিশ
রানার্স
এরিক
লিডেল
ও
হ্যারল্ড
অ্যাব্রাহামের
১৯২৪
সালে
প্যারিস
অলিম্পিকে
তাঁদের
সফলতার
ওপর
ভিত্তি
করে
তৈরি
হয়েছে
এই
সিনেমাটি।
স্কটিশ
মিশনারি
ধর্মের
লিডেলের
জন্ম
হয়
চিনে
এবং
তিনি
এই
খেলায়
স্বর্ণ
(৪০০
মিটার)
ও
ব্রোঞ্জ
(২০০
মিটার)
পদক
লাভ
করেছিলেন,
অন্যদিকে
ইংলিশ
ইহুদি
আব্রাহাম
স্বর্ণ
(১০০
মিটার)
ও
রূপোর
(৪১০০
মিটার
রিলে)
পদক
জয়
করেন।
ফিল্ম
সমালোচকদের
দ্বারা
প্রশংসিত
চ্যারিয়ত
অফ
ফায়ার
চারটে
অ্যাকাডেমি
অ্যাওয়ার্ড
জেতে
১৯৮২
সালে।
আই, টোনিয়া (২০১৭)
দু'বারের আমেরিকা অলিম্পিয়ান টোনিয়া হার্ডিংয়ের কেরিয়ারে এমন বিতর্কিত মুহূর্ত থাকতে পারে তা আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন না যে এমন কিছুও ঘটতে পারে। ১৯৯১ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিনশিপে রৌপ্য পদক জয়ী স্কেটার ব্যক্তিত্বের জীবন নিয়ে তৈরি এই ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন মার্গট রবি। তাঁর সহ অভিনেতা সেবাস্টিয়ান স্টান, যিনি টোনিয়ার স্বামী জেফ গিলোলির ভূমিকায় অভিনয় করেন এবং অ্যালিসন জেনি, যিনি টোনিয়ার মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করে অস্কার জিতে নেন। টোনিয়া ও তাঁর মায়ের মধ্যেকার তিক্ত সম্পর্ক, টোনিয়ার প্রতিদ্বণ্ডী ন্যান্সি কেরিগানের ওপর জেফের হামলা এবং ১৯৯৪ সালের লিলেহ্যামার উইনটার অলিম্পিকের আগে ও পরের সব ঘটনাই এই সিনেমায় চিত্রিত হয়েছে।
উইদাউট লিমিট (১৯৯৮)
আমেরিকার দীর্ঘ দুরত্বের রানার্স স্টিভ প্রফন্টেনির আকস্মিক মৃত্যু ও তাঁর জীবন নিয়ে তৈরি ছবি উইদাউট লিমিট, যা ১৯৯৮ সালে মুক্তি পায়। ১৯৯৭ সালে মুক্তি পায় প্রফন্টেনি, এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন জ্যারেড লেটো। এর ঠিক পরের বছর মুক্তি পায় উইদাউট লিমিট, যেখানে প্রফন্টেনির চরিত্রে দেখা গিয়েছে বিলি ক্রুডাপকে। তবে ফিল্ম সমালোচকদের মতে দ্বিতীয় ছবিটি বেশি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। উইদাউট লিমিটে প্রফন্টেনির সঙ্গে তাঁর কোচ বিল বোওয়ারম্যান, যিনি সহ-প্রতিষ্ঠাতা নাইকের, মধ্যেকার সম্পর্ককে তুলে ধরা হয়েছিল। প্রফন্টেনি যিনি ১৯৭২ সালের অলিম্পিকের ৫০০০ মিটার ইভেন্টে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছিলেন, যা মিউনিখে হয়েছিল। ১৯৭৬ সালে মন্ট্রেয়াল অলিম্পিকে নিজেকে প্রস্তুত করার সময়ই একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়।
রেস (২০১৬)
জেমস ক্লিভল্যান্ড জেসি ওয়েন্স জনপ্রিয় মার্কিন ক্রীড়াবিদ। বার্লিনে অনুষ্ঠিত ১৯৩৬ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে ১০০ মিটার, ২০০ মিটার, দীর্ঘ লম্ফ ও ৪x১০০ মিটার রিলে দৌড়ে স্বর্ণপদক জয় করে তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেন। বর্ণগত বিদ্বেষ সেই সময় তুঙ্গে থাকলেও তাঁকে কেউ কোনওদিন আটকাতে পারেনি। তাঁর এই সাফল্যের পেছনে তাঁর কোচ ল্যারি সিন্ডারের গুরুতর ভূমিকা রয়েছে। এই সিনেমায় কৃষ্ণবর্ণ ও সাদা চামড়ার অ্যাথলেটিকদের মধ্যেকার বিবাদকে তুলে ধরা হয়েছে।
মিরাকেল (২০১৪)
কার্ট রাসেলকে প্রায়শই সেরা অভিনেতা হিসাবে বিবেচনা করা হয় যিনি কখনও অ্যাকাডেমী পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন নি। এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক আইস হকি দলের প্রধান কোচ হার্ব ব্রুকস হিসাবে তার অভিনয় তাকে অস্কারের মনোনয়নের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। ১৯৮০ সালে স্বর্ণ পদক জয় করা আমেরিকার হকি দল প্রিয় দলের মধ্যে ছিল না, যারা শীর্ষে উঠে এসেছিল। লেক প্ল্যাসিড উইনটার অলিম্পিকে সোভিয়েত ইউনিয়নকে হারিয়ে দেশকে গর্ববোধ করিয়েছিল। মিরাকেলে দেখানো হয়েছে হকি দলের প্রস্তুতি, দলের মধ্যে প্রতিদ্বণ্ডী, কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীনে কোট ব্রুক ও তাঁর ফিরে আসা নিয়ে।
জ্যাপেলআপ (২০১৩)
ফরাসী অশ্বারোহী পিয়ারে ডুরাণ্ড জুনিয়র অশ্বারোহীর জন্য নিজের আইজীবীর পেশা ত্যাগ করেছিলেন। তিনি একটি ঘোড়া কেনেন যার নাম রাখেন জ্যাপেলআপ ডে লুজ এবং গৌরবময় সফরের দিকে অগ্রসর হন। তবে তিনি এটা জানতেন না যে তবে ১৯৮৮ সালের সিওল অলিম্পিকে জ্যাপেলাপ এক কিংবদন্তি মর্যাদায় পৌঁছে যাবে। ডুরান্ড জুনিয়র ও জ্যাপেলাপের অসামান্য জুটির গৌরব ২৫ বছর পর কানাডিয়ান-ফরাসী ছবিতে জায়গা পেল। তবে দুঃখের কথা হল ১৯৮৪ সালের লস অ্যাঞ্জেলসের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়নে ব্যর্থ হয় জ্যাপেলাপ। তবে এই হার তাকে থামাতে পারেনি, ১৯৮৮ সালে ডুরান্ড জুনিয়র ও জ্যাপেলাপ স্বতন্ত্র জাম্পিং শোতে সোনার পদক ও টিম জাম্পিংয়ে ব্রোঞ্জ পদক জয় করেন।
আনব্রোকেন (২০১৪)
অ্যাঞ্জেলিনা জোলির পরিচালনায় আমেরিকান অলিম্পিয়ান লুইস জাম্পেরিনির লড়াই চিত্রিত হয়েছে, যিনি সকলের কাছে লুই হিসাবে পরিচিত। জাম্পেরিনি ৫০০০ মিটার দৌড়ে পঞ্চম স্থান লাভ করেছিলেন ১৯৩৬ সালে বার্লিম গেমসে। তবে তিনি দৌড়ের চূড়ান্ত ল্যাপে রেকর্ড তৈরি করেছিলেন, এমনকি অ্যাডলফ হিটলারকেও তুষ্ট করেছিলেন। এরপরে ইতালীয় বংশোদ্ভূত দূরবর্তী রানার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানী বাহিনীর সঙ্গে মোকাবিলা করতে নাউরু দ্বীপে বোমা ফেলার মিশনে যান। বোম ফেলার সময় তাঁর বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং তিনি সেখানেই আটকে পড়েন। সিনেমার বাকি অংশে দেখানো হয়েছে যে জাপানের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে জাম্পেরিনির সফর থেকে ৮১ বছর বয়সে র নাগানো শীতকালীন অলিম্পিকে টর্চ রিলেতে তাঁর অংশগ্রহন।