
আচমকা তল্লাশি, পর্ন কনটেন্ট উদ্ধার, কীভাবে পর্নকাণ্ডে ফেঁসে গ্রেফতার হলেন রাজ কুন্দ্রা দেখে নিন
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পর্নকাণ্ড নিয়ে এফআইআরের ভিত্তিতে গত ১৯ জুলাই মুম্বই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেট্টি স্বামী তথা ব্যবসায়ী রাজ কুন্দ্রা। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম এই পুরো ঘটনাটির চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছে এবং ফেব্রুয়ারিতে অভিযোগের পর কীভাবে পুলিশ রাজ কুন্দ্রাকে পর্নোগ্রাফি কাণ্ডে গ্রেফতার করতে সফল হয় তার বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছে।

৫ ফেব্রুয়ারি ফাঁস হয় পর্নোগ্রাফি চক্র
এ বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ পর্নোগ্রাফি চক্র ফাঁস করে। সেই সময় এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তদন্ত চলাকালীন আরও ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর এপ্রিল মাসে পর্নোগ্রাফি ফিল্ম মামলা নিয়ে যে চার্জশিট গঠন করা হয়েছিল তাতে কোথাও শিল্পা শেট্টির স্বামী রাজ কুন্দ্রার নাম উল্লেখ ছিল না।
এরপর অ্যান্টিলিয়া বিস্ফোরণ এবং মনসুখ হিরেন হত্যা কাণ্ড সামনে আসে, যেখানে মুম্বই পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিং বদলি হয়ে যান, যার ফলে পর্নকাণ্ডের তদন্ত একটু হলেও বেলাইন হয়ে যায়। তবে নতুন পুলিশ কমিশনার হেমন্ত নাগরালে আসার পর ক্রাইম ব্রাঞ্চের বহু অফিসারকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেন।

জুন মাসে নতুন করে তদন্ত শুরু
জুন মাসে মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ পর্নোগ্রাফি কেস নিয়ে নতুন করে তদন্ত শুরু করে। তখনই ক্রাইম ব্রাঞ্চ হটশট অ্যাপের যুক্ত থাকার খবর পায়, যার মালির রাজ কুন্দ্রার সংস্থা। ক্রাইম ব্রাঞ্চের সূত্রের খবর, রাজ কুন্দ্রার গ্রেফতারের সপ্তাহখানেক আগে উচ্চ-পর্যায়ের বিভাগীয় বৈঠক করা হয় পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করার জন্য। ক্রাইম ব্রাঞ্চের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে তাঁরা রাজ কুন্দ্রার বাড়ি তল্লাশি করতে চেয়েছিলেন কিন্তু পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে সেই সময় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে পারেননি।

কি ঘটেছিল ১৯ জুলাই
১৯ জুলাই দুপুরে ক্রাইম ব্রাঞ্চ স্থানীয় আদালতকে রাজ কুন্দ্রার বাড়ি ও অফিস তল্লাশির জন্য সার্চ ওয়ারেন্ট জারি করার আবেদন করে। ক্রাইম ব্রাঞ্চের একটি দলকে অন্ধেরি পশ্চিমে থাকতে বলা হয়। দুপুর ৩টের সময় তল্লাশি পরোয়ানা জারি করে আদালত। এর কিছু মিনিটের মধ্যেই অন্ধেরিতে থাকা ক্রাইম ব্রাঞ্চের দল বীরা দেশাই রোডে অবস্থিত রাজ কুন্দ্রার অফিস ভিয়ানে হানা দেয়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে তল্লাশির সময় বাজেয়াপ্ত হওয়া সার্ভারে প্রচুর প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্ট পাওয়া যায়। আশ্চর্যজনকভাবে এই তল্লাশি চলার সময়ই রাজ কুন্দ্রাকে তাঁর কর্মীদের এই কনটেন্ট মুছে দেওয়ার জন্য বলতে শোনা যায়। সূত্রের খবর, কুন্দ্রা ও তাঁর সহযোগী রায়ান থর্পে সার্ভার থেকে একাধিক তথ্য সরিয়ে ফেলতে সফল হন। তদন্তে প্রয়োজন এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুছে ফেলতে পারে এই আশঙ্কায় ক্রআইম ব্রাঞ্চ ৪১এ ধারায় নোটিস পাঠায় রাজ কুন্দ্রা ও রায়ান থর্পেকে। এই নোটিস আলাদা আলাদা করে পাঠানো হয় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য।

১৯ জুলাই রাতে গ্রেফতার রাজ কুন্দ্রা
রায়ান থর্পে এই নোটিস গ্রহণ করলেও রাজ কুন্দ্রা তা নিতে অস্বীকার করেন। এরপর ব্যবসায়ী রাজ কুন্দ্রাকে মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিস বায়কুল্লাতে হাজির হতে বলা হয়। কিন্তু রাজ কুন্দ্রা পুলিশের ভ্যানে করে সেখানে যেতে অস্বীকার করেন। ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করে ক্রাইম ব্রাঞ্চ। এরপর ওইদিন রাত ১০টা ৪৫ নাগাদ রাজ কুন্দ্রাকে গ্রেফতার করা হয়। রাজ কুন্দ্রাকে হেফাজতে নেওয়ার সিদ্ধান্তটি শীর্ষ কর্মকর্তারা নিয়েছিলেন যাঁরা নিশ্চিত ছিলেন যে তাঁর এবং রায়ান থর্পের বিরুদ্ধে ক্রাইম ব্রাঞ্চের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। বর্তমানে রাজ ও রায়ান থর্পে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন।
পর্নভিডিও কাণ্ডের পর আরও বিপাকে শিল্পা শেট্টির স্বামী, রাজের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ বিজেপি নেতার