For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

গোপাল ভাঁড়ের তিন মজাদার গল্প!

  • By Oneindia Bengali Digital Desk
  • |
Google Oneindia Bengali News

চোরের আজব সাজা

একদিন গোপালের জ্বর হওয়ায় সে সেদিন রাজসভায় যেতে পারেনি। মহারাজ সভাসদদের নিয়ে নানা আলাপ আলোচনা করতে করতে হঠাৎ বললেন, আমার সভার মধ্যে এমন কি কেউ আছে, যে গোপালের ঘর থেকে কিছু চুরি করে আনতে পারে? যদি কেউ পারে, তবে সে সামান্য জিনিস হলেও আমি তাকে বিশেষভাবে পুরষ্কৃত করব। তোমরা কেউ রাজী থাকলে বল।

গোপাল ভাঁড়ের সরস জোকস

মহারাজের পুরষ্কার লোভেও কেউ রাজি হল না গোপালের ঘরে চুরি করতে। কারণ বড় চতুর সে। তার চোখে ধুলো দেওয়া সহজ নয়। ধরা পড়লে নাকালের শেষ থাকবে না। নাকানি চোবানি তো খেতে হবেই, আর সে তার প্রতিশোধ একদিন না একদিন নেবেই নেবে এবং অশেষ দুর্গতির সীমা থাকবে না।

গোপাল ভাঁড়ের তিন মজাদার গল্প!

ভূপাল নামে একটি লোক পুরষ্কারের লোভে সেদিন মধ্যরাত্রে গোপালের বাড়িতে সিদ কেটে প্রবেশ করল। গোপাল আগে থেকেই রাজসভার কথা জানতে পেরেছিল, তাই সে লোভি লোকটাকে জব্দ করার জন্য তৈরি হয়ে রইল। গোপালের ঘরের দেওয়ালে সিদ। গোপাল পূর্ব প্রস্তুতি মতো একটা মানুষের বিষ্ঠাপূর্ণ কলসির উপরে গোটাকতক টাকা রেখে দিয়েছিল এবং সেখানে নিজে একপাশে আত্নগোপন করে দাঁড়িয়ে রইল।

লোকটি সিদ কেটে যখন ঘরের মধ্যে মাথা গলিয়ে ঢুকে দেখল যে, সামনেই একটা টাকভর্তি কলসী বসানো আছে। সে আর কালবিলম্ব না করে তাই মাথায় তুলে নিয়ে মনের আনন্দে রাজবাড়িরে দিকে এগোতে যেতেই গোপাল ঢিল ছুঁড়ে ব্রাহ্মণের মাথার কলসীটা ভেঙে দিল। কলসী চুরমার হয়ে সঙ্গে সঙ্গে লোকটির সারা শরীর বিষ্ঠাতে পূর্ণ হয়ে গেল। তখন ভোর হয়েছে। গোপাল বেরিয়ে বলল, কি বাবা চুরি করা হল। মহারাজ পরে গোপালের মুখে এসব কথা শুনে বেশ আনন্দিত হলেন।


আজ যে ভীম একাদশী

গোপাল একাদশী করত। তার একাদশী করা অভ্যাস। গোপাল একাদশীর দিন সন্ধ্যেবেলায় প্রসাদ পেত লুচি, মিষ্টি- নানাবিধ ফল সহকারে। সেদিন যেন মহোৎসব লেগে যেত। গোপালকে ওভাবে একাদশীর দিন ভোজন করতে দেখে তার এক চাকর বললে, সামনের তারিখ থেকে আমিও একাদশী পালন করব বাবু। আমার একাদশী করার খুব ইচ্ছে। আপনি যদি আদেশ দেন আমি একাদশী করি। আমার খুব ইচ্ছা।

গোপাল মুচকি হেসে বলল, খুবই ভাল কথা, এই তো চাই। একাদশী করা সকলের উচিৎ। দেহের উপকার, তার সাথেই মনেরও সাত্ত্বিকভাব সাধনের জন্য একাদশী সকলের করা উচিত। পরবর্তী একাদশীর তারিখে সকাল থেকে গোপালের সঙ্গে অভূক্ত রইল।
কিন্তু সাঁঝ গড়িয়ে রাত্রি গভীর হয় হয়, তখনও গোপাল ভোজন করছে না দেখে চাকরটি ধৈর্যহারা হয়ে জিজ্ঞাস করলে, বাবু প্রতি একাদশীতেই তো আপনি সূর্যাস্তের ঠিক পরেই প্রচুর ভাল মন্দ ভোজন করে থাকেন, কিন্তু আজ এখনও কিছু খাচ্ছেন না কেন?
গোপাল মুচকি হেসে বলল, ওরে ব্যাটা আজ যে যেমন তেমন একাদশী নয়, সাক্ষাৎ ভীম একাদশী- আজ একদম নিরম্বু উপবাস। আজকে জলও খেতে নাই । সেজন্য আজ আর কিছু খাওয়ার ব্যবস্থা করিনি।

গোপালের চাকর হায় হায় করতে লাগল। এমন হবে জানলে কি সে একাদশীর নাম মুখে আনতো। পেট যে চোঁ চোঁ করছে। সেই থেকে চাকর আর কোন দিন একাদশীর কথা মুখে আনল না ভুলেও। গোপালও মুচকি হেসে মনে মনে বলল বেটা আজ বেশ ভালরকম জব্দ হয়েছে, আর কোনওদিন একাদশীর কথা মুখেও আনবে না। সহজে মতলব হাসিল হল দেখে মনে মনে আর একচোট হেসেও নিল গোপাল। যেমন কর্ম তেমন ফল।


হাসি যে আর ধরে না দাদার

গোপাল গ্রামের এক মহাজনের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়েছিল। আজ দেব, কাল দেব বলে সে টাকা আর শোধ করতে পারেনি। সেই লোক গোপালকে একদিন হাটের মধ্যে পাকড়াও করে বললে, আমার টাকাগুলো দিয়ে দাও তো গোপাল, নইলে আজ আর তোমার ছাড়ব না। তোমাকে এত লোকের সামনে অপমান করব, দেখি তুমি কোথা যাও বাছাধন।

মহাজনের দ্বারা অপমানিত হয়ে গোপাল বললে, টাকা কি দেব না বলছি? আপনার টাকা আগামী কালেই দিয়ে দেবো। পরশু সকালেই আমার বাড়িতে চলে আসুন। আমি টাকা শোধ করে দেব পরশুর মধ্যে সামান্য টাকার জন্য এত অপমান করার আপার দরকার ছিল না। আমি টাকা যেমন করে পারিশোধ করার ব্যবস্থা করবই।

গোপালের কথা শুনে মহাজন মনে মনে ভাবলেন গোপাল যখন এত লোকের সামনে কথা ছিল তখন পরশু দিন যেভাবেই হোক টাকা পরিশোধ করবেই। এই ভেবে পরমু মহাজন গোপালের বাড়িতে গিয়ে হাজির হল। কই হে গোপাল টাকা দেবে বলেছিলে দাও, আমি ঠিক সময় মত এসেছি। মহাজনের ডাক শুনে গোপাল বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসে বললে, কাকভোরে ছুটে এসেছেন, দয়া করে বাড়ির দাওয়ায় একটু বিশ্রাম করুন- আমি যত তাড়াতাড়ি পারি আপনার টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা করছি। আপনি কষ্ট করে এসেছেন প্রাণের টানে তাতেই আমি কৃতার্থ। আমার বাড়ি আজ পবিত্র হল।

মহাজন তো এখনই টাকা পাবে মনে ভেবে নিশ্চিত হয়ে গোপালের বাড়ির দাওয়ায় বসে হাটু দোলাতে রইল। কিছুক্ষণ পরে গোপাল আর গোপালের বড় ছেলে, সামনের খোলামেলা বেশ বড় বাগান ছিল, তাতে পাঁচ হাত অন্তর বেশ কয়েকটি নারকেল চারা পুতঁতে লাগল মনোযোগ সহকারে। তা দেখে মহাজন গোপালকে অস্থির হয়ে বললে, এ কি করছে গোপাল? আমার যে বেলা হয়ে যাচ্ছে। কাজকর্ম আছে যে। গদিতে যেতে হবে, সকালে উঠেই এসেছি জলখাবারও খাওয়া হয়নি। বাড়ীতে লোকজন আসবে, শ্রীঘ্র কর।

গোপাল নারকেলের চারা পুঁততে পুঁততে বললে দেখছেন, তো চারা পুঁতছি। একটু বসুন না। এখনি হয়ে যাবে পোতাঁ। আপনার টাকার ব্যবস্থা করে তবে আজ জলগ্রহণ করবো বলছি। এই দেখুন। করছি কিনা আপনি আর একটু বসে নিজে দেখুন। আপনি অপেক্ষা করুন, হলো বলে। বিশ্বাস না হয় উঠে এসে দেখুন।

কাজ শেষ করে গোপাল কাছে এসে দাড়াঁতেই মহাজন জিজ্ঞেস করলে, সেই থেকে তো বসিয়ে রেখেছো- একটা তামাকও দিলে না, যাক্ কই টাকা ‍দাও। আমার তাড়া আছে।

গোপাল মুচকি হেসে বললে, এতক্ষণ ধরে তো আপনার টাকা শোধের ব্যবস্থাই করলুম মশায়।
তার মানে তুমি তো এখন নারকেলের চারা পুতলে। আমার টাকার ব্যবস্থা করলে কি করে?

গোপাল বললে, এই যে নারকেলের চারা পুতলাম তাতে নারকেল গাছ হবে এবং এতগুলো নাকেল গাছে যা ফল হবে তা তো আর কম নয়। দুবছরের নারকেলের টাকায় আপনার সব দায় দেনা শোধ হয়ে যাবেই। আপনাকে যখন কথা দিয়েছি আজই টাকা শোধের ব্যবস্থা করব, তাই ব্যবস্থা করে দিলাম। দুবছরের জন্য নারকেলের ইজরাও আপনাকে দিয়ে এলুম। আর ভাবছেন কেন, ধরুন আপনার টাকা বলতে গেলে নিশ্চিন্তে পেয়েই গেলেন সুদ সমেত।

গোপালের কথা শুনে পাওনাদার হাসবে না কাঁদবে ভাবতে ভাবতে শেষ পর্যন্ত বেচারা হেসেই ফেলল।
গোপাল বললে, এখন কি না টাকাটা নগদ পেয়ে গেলেন বলে হাসি আর ধরে না যে দাদার।

English summary
3 funny stories of Gopal Bahnd!
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X