সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাতে চাইছে সিপিএম! সেলিমকে মাথায় রেখে অঙ্ক কষা শুরু
২০২২-এর রাজ্য সম্মেলনে পুরনোকে বিদায় দিয়ে নতুনকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিএম। সূর্যকান্ত মিশ্রের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন মহম্মদ সেলিম। সিপিএমের ৬০ বছরের ইতিহাসে তিনিই প্রথম সংখ্যালঘু রাজ্য সম্পাদক।
২০২২-এর রাজ্য সম্মেলনে পুরনোকে বিদায় দিয়ে নতুনকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিএম। সূর্যকান্ত মিশ্রের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন মহম্মদ সেলিম। সিপিএমের ৬০ বছরের ইতিহাসে তিনিই প্রথম সংখ্যালঘু রাজ্য সম্পাদক। তাঁর হাতে ব্যাটন তুলে দিয়ে সিপিএম স্বপ্ন দেখছে হারানো দিন ফিরিয়ে আনার। আবার হারানো ভোটব্যাঙ্ক ফিরিয়ে তিনি সিপিএমে সুদিন ফেরাবেন, বিশ্বাস নেতৃত্বের।
ঘুরে দাঁড়াতে সিপিএমের ভরসা সংখ্যালঘু মুখ
বর্তমান রাজনীতির প্রেক্ষাপটে মহম্মদ সেলিমের রাজ্য সম্পাদক পদে বসা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। রাজ্যে সংখ্যালঘু সমাজ মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার পরই ধীরে ধীরে ক্ষয়িষ্ণু হতে শুরু করেছিল সিপিএম। বাম শাসনের অবসানের পর দেখা যাচ্ছে সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ক প্রায় পুরোটাই তৃণমূলের সঙ্গে চলে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মহম্মদ সেলিমকে রাজ্য সম্পাদক করে হারানো ভোটব্যাঙ্ক ফিরে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে সিপিএম।
সিপিএমের তাস ধর্ম নিরপেক্ষতা!
স্বাধীন ভারতে প্রথম সংখ্যালঘু পরিবারের একজন বসলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের পদে। মহম্মদ সেলিমের মতো ডাকাবুকো নেতাকে মুখ করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানাতে তৈরি হচ্ছে সিপিএম। একইসঙ্গে তারা চ্যালেঞ্জা জানাতে তৈরি বিজেপিকেও। কারণ হিন্দুত্ব নয়, সংখ্যালঘুত্বও নয়, সিপিএমের তাস ধর্ম নিরপেক্ষতা।
যে প্রশ্নে সংখ্যালঘু মন জিততে চাইছে সিপিএম
২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার জন্য তৃণমূল সংখ্যালঘু মুসলিমদের ব্যবহার করেছিল। তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর তাদের আস্তে আস্তে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেই জায়গাটাই ধরতে চাইছে সিপিএম। তাই মহম্মদ সেলিমের মতো নেতাকে সামনে রেখে তারা লড়াইয়ে নেমে পড়েছে। সংখ্যালঘুদের ৩০ শতাংশের সমর্থনে সিপিএমের বার্তা, কেন তাদের কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হবে না? এই প্রশ্নেই সংখ্যালঘু মন জিততে চাইছে সিপিএম।
কেন কোনও মুসলিম মুখ্যমন্ত্রী হবে না বাংলায়
গুজরাটে ২৫ শতাংশ প্যাটেল গোষ্ঠীর মানুষ রয়েছেন, সেখানে যদি প্যাটেল সম্প্রদায় থেকে একজন মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন, তাহলে কেন বাংলায় ৩০ শতাংশ মুসলিমদের মধ্যে কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবেন না? উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের ঠাকুর সম্প্রদায়ের মাত্র ৫ থেকে ৭ শতাংশের বাস, তারপর তিনি যদি মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারেন, কেন কোনও মুসলিম মুখ্যমন্ত্রী হবে না বাংলায়, সেই প্রশ্নও উঠে পড়েছে।
সিপিএম ও তৃণমূল সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হবে
মহম্মদ সেলিমকে রাজ্যে সিপিএম তাদের দলেক সর্বোচ্চ পদে বসানোর পর স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূলের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে, তারা যদি এই কাজ করতে পারে, ধর্মনিরপেক্ষ বলে দাবি করা তৃণমূল কেন পরাবে না। এই প্রশ্নেই যে এবার আন্দোলিত হবে বাংলার রাজনীতি, তা নিয়ে কোনও সন্দোহ নেই। সংখ্যালঘু স্বার্থ নিয়ে এবার সিপিএম ও তৃণমূল সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হবে বলাই যায়।
সিপিএমের আপাতত টার্গেট ১০ শতাংশ মুসলিম ভোট
মহম্মদ সেলিমকে দলের মাথায় বসিয়ে সিপিএম চেষ্টা করছে বাংলার রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে দেওয়ার। সিপিএম রাজনৈতিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থান নিলেও তারা আপাতত টার্গেট করছে ১০ শতাংশ মুসলিম ভোটকে। যদি ১০ শতাংশ মুসলিম ভোট সিপিএম নিজেদের দিকে আনতে পারে, তবে ফের একবার তৃণমূলকে তাঁরা চ্যালেঞ্জের জায়গায় দাঁড় করাতে সম্ভবপর