একুশে ঠেকে শিক্ষা নেয়নি বিজেপি! বঙ্গভঙ্গের দাবির সমর্থনে স্পষ্ট বাঙালি-বিদ্বেষ
একুশে ঠেকে শিক্ষা নেয়নি বিজেপি! বঙ্গভঙ্গের দাবির সমর্থনে স্পষ্ট বাঙালি-বিদ্বেষ
বিজেপি বাংলা ও বাঙালি বিরোধী বলে দাবি উঠেছিল একুশের নির্বাচনের আগে। একুশের নির্বাচনে কার্যত বিজেপিকে রিজেক্ট করেছে বাংলা। তবু ঠেকে শিক্ষা নেয়নি বিজেপি। একুশের নির্বাচনের পরে তারা বারবার নিজেদের বাংলা ও বাঙালি বিরোধী প্রমাণ করে চলেছে। তাই খোলাখুলিই বঙ্গভঙ্গকে সমর্থন করছে তারা। বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির দাবিকে মান্যতা দিচ্ছে।
বিজেপির মানসিকতা ধরে ফেলেছে বাংলা
তৃণমূলের দাবি, বিজেপির মানসিকতা ধরে ফেলেছে বাংলা ও বাঙালিরা। তাই ২০১৯-এ ভুল করে তাদের সমর্থন করার পর একুশে বেশিরভাগই বিজেপির স্বরূপ চিনে সরে এসেছে তাদের পক্ষ থেকে। যে বিজেপি ২০০-র বেশি আসন জেতার জন্য টগবগিয়ে ঘোড়া ছুটিয়েছে, তারাই মুখ থুবড়ে পড়েছে ৭৭-এ। তারপর রাজনৈতিক মহল ভেবেছিল বিজেপি ভুল বুঝতে পারবে। নিজেদের ভুল শুধরে তৃণমূলকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ দিতে পারবে শক্তিশালী বিরোধী হিসেবে। কিন্তু তাঁরা দিন দিন বাঙালি-বৈরী হিসেবে প্রতিপন্ন হচ্ছেন।
বিজেপি বাংলা ও বাঙালি বিরোধী একটা দল
অন্তত সাম্প্রতিক বাংলা ভাগের দাবিকে সমর্থনের পর বাংলা তথা বাঙালির মনে হতে বাধ্য যে, বিজেপি বাংলা ও বাঙালি বিরোধী একটা দল। বিজেপির বঙ্গ বিরোধী মনোভাব একেবারে জলের মতো পরিষ্কার। বাংলার আমজনতা তা বুঝে গিয়েছে। তাই বিজেপি একের পর এক নির্বাচনে ধরাশায়ী হয়ে চলেছে। বাংলার জন্য তারা যে উপযুক্ত নয়, তার প্রমাণ দিয়ে চলেছে।
উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের দাবি বিজেপির
সম্প্রতি কোচ কামতাপুর নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন কেএলও সুপ্রিমো জীবন সিংহ। পৃথক রাজ্যের দাবিতে মমতাকে হুঁশিয়ারি দিতে গিয়ে তিনি তিন বিজেপি নেতার নাম করেন। দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা, নিশীথ প্রামাণিক ও সাংসদ জয়ন্ত রায়ের নাম করে তিনি বলেন, তাঁরা যথার্থ দাবি করেছিলেন। উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের দাবি করার আওয়াজ তুলেছিলেন তাঁরা।
কেএলও সুপ্রিমো-র দাবিকেও সমর্থনে বিজেপি
কেএলও সুপ্রিমো জীবন সিংহের দাবিকেও পক্ষান্তরে সমর্থন করেছিলেন বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়। তিনি বলেছিলেন, উত্তরবঙ্গের মানুষকে শাসন করুন উত্তরবঙ্গের মানুষ। তাই বঙ্গভঙ্গের দাবি প্রাসঙ্গিক। উত্তরবঙ্গের মানুষ শোষিত, সব দিক দিয়ে বঞ্চিত। তাই আলাদা রাজ্যের দাবি উপেক্ষা করা যায় না। গোর্খাল্যান্ডের দাবিও অপ্রাসঙ্গিক নয়। দীর্ঘদিনের বঞ্চনা থেকে এই দাবি উঠে এসেছে। রাজবংশী ও কামতাপুরী ভাষা একই, তরপরও মুখ্যমন্ত্রী পৃথক ভাষা অ্যাকাডেমি করে বিভাজন করেছেন। তিনি বলেনস জীবন সিংহের দাবিকে আমি সরাসরি সমর্থন জানাচ্ছে। তবে সেই নতুন রাজ্যের নাম যেন কামতাপুর না হয়। রাজ্যের নাম কামতাপুরের বদলে অন্য কিছু হলে আমার আপত্তি নেই। কামতাপুরের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গকে নিয়ে পৃথক রাজ্য ও গোর্খাল্যান্ডের বার্তায় বিজেপি নেতা বুঝিয়ে দিলেন কেএলও-র মতো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে বিজেপির যোগসাজোশ আছে।
সাংসদ বঙ্গভঙ্গের সমর্থনে গলা ফাটাচ্ছেন
জয়ন্ত রায়ের এহেন দাবিতে বিজেপির উদ্দেশ্য প্রকট হয়ে গিয়েছে। বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব বাংলা ভাগের বিরোধী বলে দাবি করলেও, তাদের একের পর এক সাংসদ যেভাবে বঙ্গভঙ্গের সমর্থনে গলা ফাটাচ্ছেন তাতে বিজেপি যে বাংলা-বিরোধী এবং বাঙালি-বিরোধী তা প্রকট হয়ে উঠছে। যে জঙ্গি নেতা মুখ্যমন্ত্রীকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছেন, তাঁর দাবিকে প্রকাশ্যে সমর্থন করছেন, তাতে বিজেপির ভূমিকা ও কাজ নিয়ে ক্ষুণ্ণ বাংলার মানুষজন।
বাংলাকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে দেওয়াই লক্ষ্য
রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, বিজেপি আদতে বাংলার উন্নয়নের জন্য লড়ছে না। বাংলাকে শেষ করে দেওয়াই তাদের লক্ষ্য। তাই বাংলাকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে দেওয়ার জন্য নিরন্তর ষড়যন্ত্র করে চলেছে। বিজেপির এই ষড়যন্ত্রে শামিল হয়েছেন বেশ কিছু বাঙালি সাংসদ, বিধায়ক ও নেতা-মন্ত্রীরা। বিজেপির মদতেই এক শ্রেণি্র বিচ্ছিন্নতাবাদী ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।