কোথাও ফাগুয়া তো কোথাও শিগমা, জেনে নিন দেশজুড়ে হোলির বিভিন্ন নাম
দেশজুড়ে হোলির বিভিন্ন নাম জেনে নিন
হাতে গোনা মাত্র আর কয়েকটা ঘন্টা। তারপর এই বছরের সেরা উৎসব হোলি উৎসব। রঙের উৎসব জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের মেতে ওঠেন। এই উৎসবে মানুষ প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। রঙিন রঙ মেখে মানুষ জীবনের সকল কষ্টকে মুছে দেন। এই উৎসব শুরু হলেই যেন মনে হয় বসন্ত এসে গেছে। হোলি শুধুমাত্র রং খেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। হোলির খুশিতে মানুষ অনেক কাজে লিপ্ত হন। সেই সঙ্গে হয়ে থাকে নানান উৎসবও। হোলি নিয়ে অনেক ঘটনাই কিন্তু মানুষের কাছে অজানা।
লাঠমার হোলি
এই হোলি খেলা অনেকেরই অজানা। যা বিশেষত উত্তরপ্রদেশে পালিত হয়। মথুরা, বারসানা, আনন্দগ্রামে পালিত হয়। হোলি শুরু হওয়ার ঠিক এক সপ্তাহ আগে থেকে এই উৎসব শুরু হয়। কথিত আছে, কৃষ্ণ রাধাকে দেখতে আসলে মহিলারা তাঁকে তারিয়ে নিয়ে যায়। তখন মহিলারা পুরুষদের সঙ্গে লাঠির সহিত দোল খেলতে শুরু করে। তারপর থেকেই এর প্রচলণ।
ফুলন কি হোলি
এটি বিশেষত ফুল দিয়ে খেলা হয়। এটি বৃন্দাবনে উদযাপিত হয়। এটি মন্দিরের অভ্যন্তরে সংঘটিত হয়। ভারতব্যাপী, বিশ্বের নানা জায়গার মানুষ এখানে এই হোলি উৎসবে আসেন। হোলির আগে একাদশীতে ফুল দিয়ে হোলি খেলার প্রচলণ আছে। বৃন্দাবনে বাঁকে বিহারী মন্দিরের পুরোহিতরা মন্দিরের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে ফুল ছুঁড়তে শুরু করেন ভক্তদের দিকে।
ওয়ারিয়র হোলি
পাঞ্জাবের ওয়ারিয়র হোলি 'হোলা মহল্লা' নামেও কিন্তু পরিচিত। শিখ নববর্ষের সূচনাকে এই হোলি চিহ্নিত করে। এই হোলি কিন্তু বিশেষত শিখ সম্প্রদায় পালন করে থাকেন। এটির সূচণা করেছিলেন শিখ গুরু গোবিন্দ সিং। এই হোলি কিন্তু কুস্তি, কলা, মক সোর্ড ফাইট, অ্যাক্রোবেটিক সামরিক অনুশীলন, পাগড়ি বাঁধা মাস্ট।
বসন্ত উৎসব
বসন্ত কথাটা এলেই বোঝা যায় হোলির আগমনকে। এটি কিন্তু বিশেষত শান্তিনিকেতনে পালন করা হয়ে থাকে। এটি পশ্চিমবঙ্গের নোবেল বিজয়ী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তৈরি করেছিলেন। যেটি বসন্তের চেতনার প্রতি সামঞ্জস্য রেখে হলুদ উৎসবের প্রাধান্য পান। বসন্ত উৎসব বাংলার সাংস্কৃতিক উৎসবের মধ্যে পড়ে। মহইলারা এই উৎসবে হলুদ শাড়ি পড়ে এই উৎসবে যোগদান করেন। সকলে মিলে বেশ খুশি মজায় এই উৎসব পালন করে থাকেন। অসম, বাংলা ও ওডিশায় হোলি উৎসবকে দোল যাত্রা বা দোল পূর্ণিমা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। পূর্ণিমার দিনে ভগবান কৃষ্ণকে বিশেষ পুজোও দেওয়া হয়।
খাদি হোলি
এই হোলি প্রধানত উত্তরাখণ্ডে পালন করা হয়। দু সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পালন করা হয়। বিশেষত কুমায়ুন জেলায় এই হোলি উৎসবের বিশেষ প্রচলন রয়েছে। হোলি মানেই সঙ্গীত। এটাকে কেন্দ্র করে ভক্তরা পুজো করেন গণেশ এবং পশুপতি দেবের।
ফাগুয়া
ফাগুয়া এটি বিশেষত ঝাড়খন্ড ও পার্শ্ববর্তী বিহারের বসবাসকারী উপজাতির মধ্যে একটি। বিশেষ জনপ্রিয় নিত্য স্থানীয় ভোজপুরি উপভাষা ফাগুয়া নামে পরিচিত। হোলি উদযাপনের সময় এখানে নৃত্য পরিবেশিত হয়। এটি ছাড়াও বিহারে হোলি খেলার আগে হোলি কা চিতা জ্বালানো বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
ইয়াওসাং
এটি মনিপুরে হোলি ইয়াওসাং নামে পরিচিত। এটি ৬ দিনব্যাপী উদযাপন করা হয়। ঘর ডালপালা দিয়ে তৈরি কুড়ে ঘর পোড়ানো, ভগবান কৃষ্ণের পূজা, রং নিয়ে খেলা আবীর খেলায় সবাই মেতে ওঠেন। এর প্রধান আকর্ষণ হল থাবাল চোংবা। একটি মণিপুরী লোকনৃত্য যা উদযাপনের সময় পরিবেশিত হয়।
শিগমা
শিগমা বিশেষত মহারাষ্ট্রে পালিত হয়। হোলি জনপ্রিয়তা শিমগা বা রং পঞ্চমী নামে পরিচিত। উদযাপনের মধ্যে হোলিকা দহন। এটি এক সপ্তাহব্যাপী হয়ে থাকে। একদিনের অনুষ্ঠান নয়।
ধুলান্দি
এটি জয়পুর, রাজস্থানের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে হোলি উৎসবকে ধুলান্দি নামে পরিচিত। হোলিকা দহনের পরে দ্বিতীয় দিনে এটি পালিত হয়। হোলিকা দহন ও ঐতিহ্যবাহী বনফায়ার হোলির প্রথম দিনে সূর্যাস্তের পর এটি পালন করা হয়। এটি কিন্তু বিভিন্ন নামে পরিচিত। এই উৎসবের প্রধান হল এই বিশেষ দিনে ছোট ছোট প্রদীপ জ্বালানো হয়।
প্রতীকী ছবি
বদলে যেতে চলেছে এইসব রাশির ভাগ্য, রাহুর আশীর্বাদে লাভ হবে বিপুল আর্থিক সুখ