রোজ করুন এই সামান্য উপায়, মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদে হবে অপার ধন-সম্পত্তি লাভ
পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ নিজের জীবন ধারণের জন্য অর্থ রোজগার করে থাকেন। কারও জীবনে সেই অর্থের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে আবার কারও জীবনে তার পরিমাণ থাকে তুলনামূলক কম। কিন্তু সকলেই জীবনে নানা রকম চাহিদা মেটানোর জন্য আর্থিক সুখ লাভ করতে উৎসাহী হন। সেক্ষেত্রে সনাতন ধর্ম ও জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী, দেবী লক্ষ্মীকে ধন সম্পত্তির অধিষ্ঠাত্রী দেবী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। আর তাই সকলেই চান কোনও না কোনও ভাবে মা লক্ষ্মীর উপাসনা করে তাঁকে তুষ্ট করার জন্য।
মা লক্ষ্মীর মহত্ব
সনাতন রিতি, বৈদিক শাস্ত্র ও জ্যোতিষ মতে মা লক্ষ্মীর মহিমা অপরিসীম। বিষ্ণু পুরাণ অনুযায়ী, দেবী লক্ষ্মী হলেন মহাবলী সিন্ধু অর্থাৎ সাগরের কন্যা। সমুদ্রের বক্ষ থেকে তাঁর আবির্ভাব হয়েছিল সমুদ্রমন্থনের সময়। তখন সেই শ্রী লাভ করেন নারায়ণ। আবার বৈদিক মতে, ব্রহ্মাণ্ড নির্মাণ করার সময় মাতা আদিশক্তির তেজ থেকে নির্গত হয়েছিলেন ত্রিদেব। এবং ত্রিদেবের প্রকৃতি তত্ত্বর ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সৃষ্টি হয়েছিল তিন দেবীর। তার মধ্যে বিষ্ণুভার্জা হন লক্ষ্মী। সেই মত দেবী লক্ষ্মী হলেন আদিশক্তির এক অন্যতম রূপ। তাই মা লক্ষ্মীর মহত্ব অপরিসীম।
সম্পদের দেবী
মা লক্ষ্মীকে সনাতন ধর্মে সম্পদের দেবী বলা হয়। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদ যাদের জীবনে থাকে তাঁদের জীবনে অর্থ ও খাদ্যের কোনও অভাব হয় না। তাই সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী সকল মানুষ দেবী লক্ষ্মীকে খুশি করার চেষ্টা করেন। ধর্মীয় শাস্ত্রে এটাও বিশ্বাস করা হয় যে মা লক্ষ্মীকে প্রসন্ন করলে যে কোনও ব্যক্তি তাঁর জীবনের আর্থিক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। মা লক্ষ্মীর কৃপায় একজন ব্যক্তি জীবনের সমস্ত সুখ অনুভব করেন।
মা লক্ষ্মীর পুজো
জীবনে সকলেই নিজেদের চাহিদা পূরণের জন্য অর্থ লাভের চাহিদা রাখেন। আর দেবী লক্ষ্মী হলেন সেই অর্থ ও সম্পদেরই দেবী। মা লক্ষ্মীকে প্রসন্ন করার জন্য নানা রকম উপায় করা হয়ে থাকে। কিন্তু রোজকার দিনচর্চায় সামান্য কিছু উপকরণ দিয়ে বা সহজ উপায় অবলম্বন করে দেবী লক্ষ্মীকে সন্তুষ্ট করা যায়। যেমন সুগন্ধি দেবী লক্ষ্মীর খুব প্রিয়, তাই তাঁকে রোজ গোলাপ জল নিবেদন করা শুভ। সেই সূত্রে গন্ধ যুক্ত গোলাপ ফুল ও জুঁই ফুলও দেবী লক্ষ্মীর খুব প্রিয়। এছাড়া লক্ষ্মীর সবথেকে প্রিয় ফুল হল লাল পদ্ম, তাই তাঁর অপর নাম কমলেকামিনী। তাঁকে প্রতি বৃহস্পতিবার লাল পদ্মের কোরক নিবেদন করা খুব শুভ। মা লক্ষ্মীকে সবসময় লাল বা গোলাপি বস্ত্র নিবেদন করতে হয়। মা লক্ষ্মীকে প্রসাদে মিশ্রী ভোগ দেওয়া শুভ হয়। তবে মা লক্ষ্মীর পুজো করলে অবশ্যই কুবেরের পুজো করতে হয়। মনে রাখা দরকার, মা লক্ষ্মীর পুজোতে কাঁসর, ঘণ্টা বা কোনও রকমের শব্দ করা উচিত নয়।
লক্ষ্মী চালিসা
পূজার সময়, একজনকে প্রতিদিন শ্রী লক্ষ্মী চালিসা পাঠ করা উচিত। শ্রী লক্ষ্মী চালিসা পাঠ করলে মা লক্ষ্মীর বিশেষ আশীর্বাদ পাওয়া যায়, তাই মা লক্ষ্মীর কৃপা পেতে প্রতিদিন পূজা করতে হবে। এছাড়াও, পূজার সময়, একজনকে প্রতিদিন শ্রী লক্ষ্মী চালিসা পাঠ করা উচিত। শ্রী লক্ষ্মী চালিসা পাঠ করলে মা লক্ষ্মীর বিশেষ কৃপা পাওয়া যায়। "সিন্ধু সুতা ম্যায় সুমিরু তোহি৷
জ্ঞান জ্ঞানী বিঘা দো মোহি৷" এই দোঁহা পাঠ করে নিয়ম মত যদি লক্ষ্মী চালিসা পাঠ করা যায় তাহলে দেবী লক্ষ্মীর কৃপায় জীবনে লাভ হবে অপার ধন-সম্পত্তি।
(এই সকল তথ্য সম্পূর্ণ জ্যোতিষ তথ্যের উপর নির্ভরশীল)