মাঘ মাসের পুণ্যলগ্নে করুন এই প্রতিকারগুলি, দূর হবে দুর্ভাগ্য, খুলে যাবে সৌভাগ্য
মাঘ মাসের পুণ্যলগ্নে করুন এই প্রতিকারগুলি
স্বাস্থ্য লাভ ও পুণ্য প্রাপ্তির জন্য মাঘ মাসের মাস খুবই উত্তম বলে মনে করা হয়। এই পবিত্র মাসে দেবী–দেবতার পুজো–পাঠের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ বলে মনে করা হয়। এই মাঘ মাসেই সনাতন ধর্মের মানুষরা প্রয়াগরাজে একমাসের জন্য কল্পবাস করে। এই মাসে করণীয় কিছু বিশেষ কাজের কথা শাস্ত্রে বলা হয়েছে। বিশ্বাস করা হয় যে এই কাজগুলি করলে দেবতারা প্রসন্ন হন এবং মানুষ দুঃখ থেকে মুক্তি পান। আসুন জেনে নিই এই পবিত্র মাসে জীবনকে সুখী ও সমৃদ্ধ করার সহজ উপায়গুলো আসলে কি।
পুণ্যলাভের জন্য স্নান
নারদপুরাণ অনুসারে, মাঘ মাসে ব্রহ্মমুহূর্তে স্নান করলে জীবের সমস্ত বিপর্যয় দূর হয় এবং প্রজাপত্য-যজ্ঞের ফল পাওয়া যায়। 'মাঘ মকর গতি রবি যব হোই, তীরথপতিহিন আভা সব কোই!' অর্থাৎ মাঘ মাসে সূর্য যখন মকর রাশিতে প্রবেশ করে, তখন সবাই তীর্থভূমির রাজা প্রয়াগের পবিত্র সঙ্গমে আসেন। দেবতা, অসুর, কিন্নর এবং মানবের দল সকলেই শ্রদ্ধার সঙ্গে ত্রিবেণীতে স্নান করেন। এ মাসে যে কোনো তীর্থস্থান, নদী ও সমুদ্রে স্নান করলে অশেষ পুণ্য পাওয়া যায়।
সূর্য দেবতার উপাসনা
পদ্মপুরাণ অনুসারে পুজো, তপস্যা, যজ্ঞ ইত্যাদিতে শ্রী বিষ্ণুজি এতটাও প্রসন্ন হন না যতটা মাঘ মাসের ভোরে স্নান করে জগতকে আলোকিত করার ভগবান সূর্যকে অর্ঘ্য দান করাতে হন। এইজন্য সব পাপ থেকে মুক্তি পেতে ও ভগবান জগদীশ্বরের কৃপা প্রাপ্তির জন্য প্রত্যেক মানুষকে স্নান করে সূর্য মন্ত্র উচ্চারণ করতে করতে সূর্য দেবতাকে অবশ্যই অর্ঘ্য নিবেদন করুন। ভবিষ্য পুরাণ অনুসারে সূর্যনারায়ণের পুজো যে ব্যক্তিরা করেন তাঁরা প্রজ্ঞা, মেধা তথা সব ধরনের সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ হয়ে যান ও চিরঞ্জীবি প্রাপ্তি হয়। এমনকি যদি কেউ মানসিকভাবে সূর্যের পুজোও করে, তবে সে সুখী জীবনযাপন করেন, সমস্ত রোগ থেকে মুক্ত হয়।
শিবলিঙ্গের অভিষেক
এই মাঘ মাসে ভগবান বিষ্ণুর পুজো ছাড়াও শিবের পুজোরও বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। রোগ থেকে মুক্তি পেতে মাঘ মাসে প্রতিদিন জলে কয়েক ফোঁটা গঙ্গাজল মিশিয়ে শিবলিঙ্গে জলাভিষেক করলে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়। বিশেষ মনস্কামনা পূরণের জন্য এই মাসে রুদ্রাভিষেক করা উপকারী। এই সময়ে শ্রী বিষ্ণু সহস্রনাম পাঠ করলে বিষ্ণুর ভক্তি লাভ হয় এবং শ্রী সুক্তের যথাযথ পুজো ও যজ্ঞ করলে ধন-সম্পদ লাভ হয় এবং ঘরে সুখ, শান্তি ও আরোগ্যতা আসে।
দান
এ মাসে তিল, গুড় ও কম্বল দান করা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে, এতে রোগ নাশ হয়। পশমী বস্ত্র, উলের জিনিস, জুতো এবং যা কিছু ঠান্ডা আবহাওয়ার জিনিস তা দান করার সময় 'মাধব: প্রিয়তম' এই বাক্যটি বলা উচিত। মৎস্য পুরাণে বলা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি মাঘ মাসে ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ দান করে সে ব্রহ্মলোক লাভ করে। প্রতিদিন খাদ্য দান করলে অর্থের অভাবও হয় না।