দেশে কালো আইনের শাসন চালাচ্ছেন মোদি, নোটের জবাব ভোটেই পাবেন : মমতা
‘কালো ধনে লাগাম নয়, দেশে কালো আইনের শাসন চলছে। জারি হয়েছে কালো জরুরি অবস্থা। এই কি আপনার আচ্ছে দিনের নমুনা, মোদিজি।’
লখনউ, ২৯ নভেম্বর : 'কালো ধনে লাগাম নয়, দেশে কালো আইনের শাসন চলছে। জারি হয়েছে কালো জরুরি অবস্থা। এই কি আপনার আচ্ছে দিনের নমুনা, মোদিজি।' নোট বাতিলের প্রতিবাদে এই ভাষায় প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার লখনউয়ের গোমতীনগরে ধরনা মঞ্চ থেকে ফের গর্জে উঠল মমতার কণ্ঠ। তিনি বললেন, 'নোট বাতিলের নামে দেশ লুটে নিচ্ছেন মোদিজি। হিটলারের থেকেও বড় হিটলার হচ্ছেন আপনি। নোটের এই জবাব আপনি ভোটেই পাবেন।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লখনউয়ের মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বার্তা দেন, 'মানুষ আপনাকে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসিয়েছিল, আবার মানুষই আপনাকে সরিয়ে দেবে। মানুষের স্বার্থরক্ষায় আপনি ব্যর্থ হয়েছেন। তাহলে আপনার সরকারকে কেন ভোট দেবেন সাধারণ মানুষ।
যে সরকার মানুষের কষ্ট বোঝেন না, সেই সরকারকে মানুষ ছুড়ে ফেলবেন।' তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দেন, সুইস ব্যাঙ্কের কালো টাকা কোথায় গেল? দেশের প্রতিটি নাগরিকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে ফেরত দেবেন বলেছিলেন। কথা রাখতে পারেননি আপনি।
এখন কালো টাকার নামে দেশের মানুষের কাছ থেকে সর্বস্ব ছিনিয়ে নিচ্ছেন। আপনার এই কালো ধান্দার বিরুদ্ধে আমি শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবো। ক্ষমতা থাকলে আমাকে জেলে ভরুন, উত্তর প্রদেশের মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে প্রকাশ্য হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতার অভিযোগ, আসলে এটা বিগ বিগ ব্ল্যাক স্ক্যান্ডাল। তুঘলকি সিদ্ধান্ত নিয়ে চুপি চুপি মোদিজি নিজের আখের গুছিয়ে নিয়েছেন, অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থার তারি করেছেন তিনি। ইন্দিরাজি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন। আর আপনি অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা তৈরি করেছেন। মনে রাখবেন গণতন্ত্রে জরুরি অবস্থার কোনও স্থান নেই। দেশের সর্বনাশ করে এখন আপনি বিজেপি নেতাদের কাছ থেকে সম্পত্তির হিসেব চেয়েছেন। মমতা বলেন, আগে আপনার সম্পত্তিক হিসেব দিন প্রধানমন্ত্রী। হিসেব দিন আপনার দলের সভাপতি অমিত শাহের সম্পত্তির। বিজেপি বিহারে বহু টাকার জমি কিনেছে বলে অভিযোগ। তা নিয়ে কী বলবেন আপনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজবাদী পার্টির মন্ত্রীদের পাশে বসিয়ে উত্তরপ্রদেশের মন জয়েরও চেষ্টা করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে গলা মিলিয়েই মানুষ আওয়াজ তোলেন মোদির বিরুদ্ধে। সমাজবাদীর পার্টির সমর্থকদের শক্তিতে ভর করে মমতা আওয়াজ তোলেন, স্বাধীনতা থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি লড়াইয়ে উপরের সারিতে থেকেছে উত্তরপ্রদেশ। উত্তপ প্রদেশের মানুষের শক্তি আছে লড়াই করে দাবি আদায় করে নেওয়ার।
সংসদে সবাই একযোগে লড়াই করছেন এবার বাইরে থেকেও মিলিত আওয়াজ তুলতে হবে বিজেপি সরকারের অনৈতিক এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। রেশন না দিয়ে শুধু ভাষণ দিয়ে বেড়াবেন প্রধানমন্ত্রী, তা মেনে নেওয়া যাবে না। তাই মোদিকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবিও তোলেন পরোক্ষে। মমতা বলেন, মোদিজি আপনি জবরদস্তি করছেন, মানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে নিচ্ছেন, এবার আপনাকেও সরিয়ে দেবেন মানুষ।