এই এপ্রিলে বেড়িয়ে আসুন উত্তর ভারত
ভরা চৈত্রের গরমে একেবারে হাঁসফাঁস অবস্থা পশ্চিমবঙ্গে। বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের অবস্থা তো আর বলার মতো নয়। একটু পাখার নীচ থেকে সরেছেন কী ঘেমে নেয়ে একেবারে বেহাল অবস্থা। বৈশাখ পড়ার আগেই তাপমাত্রা চল্লি ছুঁই-ছুঁই। কিছুই যেন ভালো লাগছে না। আগামী কয়েকদিনে তাপমাত্রা যে কিছুটা নামবে তারও কোনও নিষ্চয়তা দিতে পারেনি আলিপুরের হাওয়া অফিস।
অগত্যা কোথাও একটা বেরিয়ে পড়লে খারাপ হয় না। কী তাই তো? ফি গরমে দক্ষিণবঙ্গের মানুষদের চেনা গন্তব্য উত্তরবঙ্গের নানা ডেস্টিনেশন। তবে অনেকেই ভাবছেন গত বছরই তো ঘুরে এলাম ওদিকটায়। ফলে এবার ওদিকে না গিয়ে অন্য কোথাও যাওয়া যেতে পারে। এমন যারা ভাবছেন তাদের জন্য রইল এই এপ্রিলে উত্তরভারতে ভ্রমণের কিছু অসাধারণ সুন্দর জায়গা।
আলমোরা
কুমায়ুনের একটি পরিচিত শৈল শহর আলমোরা। এখান থেকে সূর্যোদয় অথবা সূর্যাস্ত দেখতে অসাধারণ লাগে। এখানকার ডিয়ারপার্কে হরিণ ছাড়াও চিতা, হিমালয়ান কালো ভালুক ইত্যাদি দেখতে পাবেন। ট্রেকিং, মাউন্টেন বাইকিং ছাড়াও এখানকার বিনসার ওয়াইল্ডলাইফ স্যানচুয়ারি টুরিস্টদের অন্যতম আকর্ষণ।
আরকি
হিমাচল প্রদেশে অবস্থিত এই জায়গাটি ভ্রমণপিপাসুদের কাছে একেবারে আদর্শ। নানা জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। চারিদিকে কেল্লা, প্যালেসের ছড়াছড়ি। অসাধারণ জায়গার পাশাপাশি শিব-দুর্গার অনেক পুরনো মন্দির রয়েছে যা দেখে অভিজ্ঞদেরও ভালো লাগবে।
অবন্তীপুর
জম্মু ও কাশ্মীরের এই জায়গাটিতে বহু পুরনো মন্দির-স্থাপত্য রয়েছে। যেমন শিব-অবন্তীশ্বর, অবন্তীস্বামী-বিষ্ণু ইত্যাদি। নবম শতাব্দিতে এই মন্দিরগুলি তৈরি হয়। শিব, বিষ্ণু ইত্যাদির অর্চনাই হয়ে থাকে এখানে। মন্দিরগুলিতে আশ্চর্যজনকভাবে গ্রিক স্থাপত্যের নিদর্শন পাওয়া যায়।
বারামুল্লা
খ্রিস্টপূর্ব ২৩০৬ সালে রাজা ভীমসিনা এই শহরটি তৈরি করেন। ১৫০৮ শতকে এই শহরে আসেন খোদ মোঘল সম্রাট আকবর। কাশ্মীরে এসে আর এক মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর এখানেই থেকে যাবেন বলে ভেবেছিলেন, এতটাই সুন্দর এই জায়গাটি। চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙয়েন সাঙ।
বারোগ
হিমাচল প্রদেশের এটি একটি পরিচিত টুরিস্ট স্পট। এটি সোলান জেলায় অবস্থিত। এখানকার 'চুড় চান্দনি' পাহাড় দেখতে প্রচুর টুরিস্ট ভিড় জমান। জায়গাটি স্থানীয়দেরও খুব পছন্দের।
বারোগের আরও কিছু পরিচিত জায়গা হল দাগসাই, বিশাল শিব টেম্পল, দোলানজী বন মোনাস্ট্রি, রেনুকা লেক ইত্যাদি। এছাড়াও নানা জায়গা রয়েছে এখানে ঘুরে বেড়ানোর।
ভিথুর
কানপুর শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জায়গাটি গঙ্গা নদীর পাড়ে অবস্থিত একটি ছোট শহর। সাজানো-গোছানো ঐতিহাসিক এই শহরটি হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র জায়গা।
চম্বা
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৫২৪ মিটার উচুঁতে অবস্থিত উত্তরাখণ্ডের এই শৈল শহরটির নৈসর্গিক দৃশ্য এককথায় অসাধারণ।
রডোডেনড্রন, দেবদারু ও পাইন গাছের সারির মধ্যে আপনি হারিয়ে যেতে চাইলে একনিমিষেই তা পারবেন। এখানকার আপেলও খুব বিখ্যাত। ফলে এখানে আসতে চাইলে উপাদান অনেক পেয়ে যাবেন। তাই আর দেরি না করে বেরিয়ে পড়লেই হয়।
কারনাল
হরিয়ানার এই জায়গার নাম ততটা প্রচারিত নয়। মহাভারতের কর্ণের নামানুসারে এই জেলার নামকরণ করা হয়েছে। বলা হয় এখানকার লেকে স্নান করতেন কর্ণ। ছোট জেলা তবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর।
লুধিয়ানা
সুটলেজ নদীর ধারে অবস্থিত এই শহর পাঞ্জাবের বৃহত্তম শহর। ১৪৮০ সালে তৈরি হওয়া শহরটিকে পুরনো ও নতুন এই দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে এবং দুই প্রান্তই খুব সুন্দর। এখানকার গুরুনানক ভবন, ফিল্লৌর ফোর্ট, মহারাজা রঞ্জিত সিং ফোর্ট মিউজিয়াম ইত্যাদিও রয়েছে দ্রষ্টব্য স্থানের মধ্যে।
সিরসা
এই জায়গাটির নামও মহাভারতে উল্লিখিত রয়েছে। সেইসময় অবশ্য এর নাম ছিল সৈরিশাকা। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া এখানকার নানা জায়গা খুঁজে বের করেছে যা এখানকার অন্যতম বড় আকর্ষণ।